কলকাতা, 12 ফেব্রুয়ারি: সন্দেশখালি নিয়ে আরামবাগ যাওয়ার আগেই মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একই সঙ্গে সন্দেশখালি নিয়ে সরকারের অবস্থানও স্পষ্ট করলেন তিনি ।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যপালে সিভি আনন্দ বোসের সন্দেশখালি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যেতেই পারেন ৷ আমাদের রাজ্য মহিলা কমিশনকে আমি সকালে পাঠিয়েছিলাম । ওরা ঘুরে এসেছে ঘুরে এসে রিপোর্ট দিয়েছে । ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়ে গিয়েছে আপনারা দেখেছেন । সম্ভবত যাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে বা যারা ভায়োলেন্স করেছে, তাদের সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।’’
সোমবার কলকাতা থেকে আরামবাগ যাওয়ার আগে হাওড়ার ডুমুরজলা হেলপ্যাডে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী ৷ সেখানেই রাজ্যপালের সন্দেশখালি যাওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য বিষয় নিয়ে মুখ খোলেন তিনি ।
উল্লেখ্য, গত 5 জানুয়ারি উত্তর 24 পরগনার সন্দেশখালিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাতে যায় ইডি ৷ সেখানে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডির আধিকারিকরা ৷ তার পর থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে সন্দেশখালিতে ৷ সেই ঘটনার পর থেকে খোঁজ নেই শাহজাহানের ৷ তার পর থেকেই তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ শিবপ্রসাদ ওরফে শিবু হাজরা ও উত্তম সরদারের নাম বারবার উঠে এসেছে ৷
গত বুধবার স্থানীয় মহিলারা এই শিবু ও উত্তমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে ৷ শাহজাহান-সহ শিবু ও উত্তমের গ্রেফতারির দাবিতে সরব হন তাঁরা ৷ গ্রামে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ৷ মহিলারা এই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জোর করে জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ করেন ৷ এমনকী, মহিলাদের অভব্য আচরণ ও নানাবিধ অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে ৷ গ্রামবাসীরা শিবু হাজরার পোল্ট্রি ফার্মে আগুন ধরিয়ে দেয় ৷ তাঁর বাড়িতেও ভাঙচুর করে৷ সন্দেশখালি থানায় বিক্ষোভ দেখান ৷
পরিস্থিতি সামলাতে সেখানে 144 ধারা জারি করে প্রশাসন ৷ বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেটও ৷ উত্তম সরদারকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তাঁকে ছ’বছরের সাসপেন্ড করে তৃণমূল ৷ শিবু হাজরার অভিযোগের প্রেক্ষিতেও পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে ৷
সন্দেশখালির সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীরাও সরব হয়েছে ৷ বিরোধীদের প্রতিনিধি দল অনেক চেষ্টা করে এখনও ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি ৷ এ দিনও বিজেপির প্রতিনিধি দলকে সেখানে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ৷ কিন্তু সন্দেশখালিতে পৌঁছে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলতে সক্ষম হন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷
এত সব ঘটে যাওয়ার পরও এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় কেন নীরব, সেই প্রশ্ন বারবার উঠছিল ৷ কিন্তু সোমবার এই নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন ৷ প্রতিক্রিয়াও দিলেন৷ এই প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিরোধীদের কী বক্তব্য, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি ৷
আরও পড়ুন: