মালদা ও জলপাইগুড়ি, 16 ফেব্রুয়ারি: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনেই পরীক্ষাকেন্দ্র নিয়ে বিভ্রাট ৷ শেষ মুহূর্তে কোনোমতে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছালেন পরীক্ষার্থীরা ৷ ঘটনার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন অভিভাবকরা ৷ পুরো ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷
পুরাতন মালদার মাধাইপুর এআর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের সিট পড়েছিল ওসমানিয়া হাই মাদ্রাসায় ৷ অভিযোগ, মাধাইপুর এআর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতাপ বিশ্বাস ফেয়ারওয়েলের দিন পরীক্ষার্থীদের জানান, তাদের পরীক্ষার সিট পড়বে মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলে ৷ পরীক্ষার তিনদিন আগে অ্যাডমিট পাওয়ায় পড়ুয়াদের কেউই পরীক্ষাকেন্দ্রের বিষয়টি আর যাচাই করেননি ৷
শুক্রবার সকালে ওই স্কুলের পরীক্ষার্থীরা মুচিয়া চন্দ্রমোহন স্কুলে গিয়ে দেখেন তাদের পরীক্ষার সিট সেখানে পড়েনি ৷ খোঁজ করে পরীক্ষার্থীরা জানতে পারেন, তাদের পরীক্ষার সিট পড়েছে ওসমানিয়া হাই মাদ্রাসায় ৷ তড়িঘড়ি পরীক্ষার্থীরা কোনোমতে স্কুলে পৌঁছান ৷ অনেকেই পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর কেন্দ্রে পৌঁছান ৷ এই নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের উপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অভিভাবকরা ৷
এক অভিভাবক হুমায়ুন রশিদ মণ্ডল বলেন, “আমার মেয়ে এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ৷ এতদিন ধরে আমরা জানি, বাচ্চাদের পরীক্ষার সিট পড়েছে মুচিয়া চন্দ্রমোহন হাইস্কুলে ৷ যথারীতি বাচ্চারা ওই স্কুলে চলে যায় ৷ কিন্তু অ্যাডমিটের রোল নম্বর না মেলায় খোঁজ করে জানা যায় বাচ্চাদের সিট পড়েছে ওসমানিয়া হাই মাদ্রাসায় ৷ বাচ্চারা তড়িঘড়ি ওই স্কুলের দিকে ছুটে যায় ৷ যেভাবে বাচ্চারা ছুটে এসেছে তাতে একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতেই পারত ৷ এই ঘটনার জন্য পুরোপুরি স্কুল কর্তৃপক্ষ দায়ী ৷ আমরা চাই পর্ষদ এই ঘটনার ব্যবস্থা নিক ৷ আগামিদিনে যাতে বাচ্চাদের এই সমস্যায় না পড়তে হয় ৷”
মাধাইপুর এআর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি ৷ অভিভাবকদের দাবি, স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ছেলেও এবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী হওয়ায় তিনি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি ৷
অন্যদিকে এই প্রথম উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেক্টর দিয়ে চেকিং করে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করানো হল । জলপাইগুড়িতে এই ঘটনা চোখে পড়েছে ৷ কোনও ধরনের ধাতব সামগ্রী বা মোবাইল ফোন নিয়ে যাতে পরীক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে না পারেন, সেই কারণে এই ব্যবস্থা করা হয় ৷
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের গোলাপ ফুল ও পেন দিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপত । পাশাপাশি পরীক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন পুলিশ সুপার । তিনি জানান, মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিকেও ভালোভাবে ও শান্তিপূর্ণ ভাবে হবে শেষ হবে ।
এদিকে জেলার জঙ্গল সংলগ্ন ও প্রত্যন্ত এলাকা থেকে ছাত্রছাত্রীদের গাড়িতে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেয় প্রশাসন ও বনবিভাগ । প্রত্যেক হাতির করিডোরে বনকর্মীরা টহল দিয়েছেন । এবার জলপাইগুড়ি জেলায় মোট উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা 18 হাজার 500 । এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা সাড়ে সাত হাজার ও ছাত্রীর সংখ্যা 11 হাজার । জেলায় মোট পরীক্ষাকেন্দ্র 75টি । স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে 11টি ।
আরও পড়ুন: