কলকাতা, 17 মে: একাধিক বিষয় নিয়ে নালিশ জানাতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়ে বামেদের প্রতিনিধি দল। শুক্রবার মহম্মদ সেলিম নির্বাচন কমিশন থেকে বেরিয়ে দাবি করে বলেন, "রাজ্য পুলিশ এবং কিছু দুষ্কৃতীদের ব্যবহার করে তৃণমূল টিকে থাকার চেষ্টা করছে। আসলে ওরা মানুষের মন বুঝে গিয়েছে তাই ওরা মানুষের শরীরের উপর দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। তাই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে।"
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক আরও জানা, ভোট মিটে যাওয়ার পরেও যাতে কোথাও অশান্তির ঘটনা না-ঘটে সেই বিষয়েও কথা হয়েছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ড: আরিজ আফতাবের সঙ্গে। এছাড়াও দমদম, ডায়মন্ড হারবার, শ্রীরামপুর, ব্যারাকপুর হুগলি এই কেন্দ্রগুলোর উপরে বিশেষ নজর রাখতে আবেদন জানানো হয়েছে কমিশনকে ৷ সন্দেশখালি নিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, "এই রাজ্যে বিজেপি তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছে। আগে কেন সন্দেশখালি নিয়ে কথা বলেনি। বাংলায় যাতে আর কোনও সন্দেশখালি না-হয় তার জন্য শুভেন্দু অধিকারী এবং ভাইপোর রাজনীতি শেষ করতে হবে।"
তিনি বলেন, "এরকম সন্দেশখালি ঘটনা আমাদের রাজ্যজুড়ে শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং মুকুল রায় মাওবাদী ও মস্তানবাহিনীদের নিয়ে তৈরি করেছেন। গাঁজা চাষ থেকে হেরোইনের চাষ, সবকিছুই চলে এখানে। গত 10 বছরে কোনও সংবাদমাধ্যমও এই লুটের খবর প্রকাশ্যে আনেনি। প্রতিদিন তৃণমূল কংগ্রেস মিথ্যে মামলা তৈরি করছে এবং ভিডিয়ো তৈরি করছে। বামফ্রন্ট সরকার যে উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের জন্য জমি দিয়েছিল সেই জমিগুলোতে তৃণমূলের গুন্ডারা শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছত্রছায়ায় এইসব কার্যকলাপ চালিয়েছে। পুলিশের সহায়তা নিয়ে ওখানে জমিগুলোকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে।"
ইন্ডিয়া জোট নিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, "ইন্ডিয়া জোর নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধন্দে রয়েছেন ৷ কারণ তাঁর ধন্দ আর কাটছে না। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম কথা বলছেন। ভাইপোকে কয়লা পাচারে বাঁচাতে হবে। চাকরি চুরি থেকে বাঁচতে হবে। তিনি বলেছিলেন, কংগ্রেস 40টার থেকে বেশি আসন পাবেন না। এখন তিনি বলছেন বাইরে থেকে সমর্থন করবেন। তার মানে তিনি ইন্ডিয়া জোটে নেই।"
তিনি বলেন, "ইন্ডিয়া জোটে সমর্থন বাড়ছে। যত মোদি হাওয়া কম হচ্ছে তত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বেগ বাড়ছে। কারণ তিনি বলেই দিয়েছেন যে, তাঁরা বাইরে থেকে সমর্থন দিচ্ছেন। এই বিষয় সুজন চক্রবর্তী বলেন, "তিনি বলছেন, তিনি কংগ্রেস এবং সিপিএমের সঙ্গে নেই ৷ তবে কি তিনি ইন্ডিয়া জোটে আছেন? তিনি ট্রেনে উঠলেও জেলে যাবেন আর ট্রেনে না-উঠলেও জেলে যাবেন। তৃণমূলের আসলে কোনও নীতি নেই।"
সুজন চক্রবর্তী বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যতক্ষণ মনে হয় নরেন্দ্র মোদি 400 পাবেন ততক্ষণ উনি জোটে নেই, এখন যখন উনি বুঝতে পারছেন সেটা হবে না, তখন উনি আবার বলতে শুরু করেছেন তিনি জোটে আছেন। দেশ পল্টুরাম দেখেছে এখন দেশ পাল্টিবাজকে দেখছে। দিল্লি থেকে বিজেপিকে সরাতে হবে। এই রাজ্যে বাম আর কংগ্রেস সেটা পারবে বলেই মনে করছেন মহম্মদ সেলিম। মানুষ ইতিমধ্যে ঠিক করে নিয়েছেন কাকে ভোট দেবেন। বিজেপির সমস্ত অস্ত্র শেষ হয়ে গিয়েছে।"
দীপ্সিতা ধরের প্রতি কুরুচিকর মন্তব্য নিয়েও এদিন সরব হন সেলিম-সুজনরা। বাম প্রতিনিধি দল বলেন, "তাঁরা চান, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রার্থীপদ যেন থাকে ৷ কারণ, তাহলে সায়ন বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে দিয়ে তাঁকে হারাবে বামফ্রন্ট।
আরও পড়ুন: