ETV Bharat / state

অধীরের নির্দেশই সার, বাংলার বহু জায়গায় বামপ্রার্থীর পাশে নেই কংগ্রেস - Lok Sabha Election 2024

Left-Congress Alliance: বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে এবারে বাম কংগ্রেস জোটের প্রার্থী বর্ধমান মহিলা মহাবিদ্যালয় এর প্রাক্তন অধ্যক্ষ সিপিআইএমের ড: সুকৃতি ঘোষাল। কিন্তু ওই লোকসভা কেন্দ্রের বেশ কিছু এলাকায় প্রথম দিকে বাম প্রার্থীর প্রচারে সামিল হয়নি কংগ্রেস।

Left Congress Alliance
অধীরের নির্দেশই সার, বাংলার বহু জায়গায় বামপ্রার্থীর সমর্থনে পাশে নেই কংগ্রেস৷
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 7, 2024, 8:36 PM IST

কলকাতা, 7 এপ্রিল: এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বামেদের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস 'গাঁটছড়া'য় নয়, 'সমঝোতা'য় এসেছে। কিন্তু রাজ্যের বহু জায়গায় সেই 'সমঝোতা'ও কাজে দিচ্ছে না। কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থীর ভোটপ্রচারে দেখা যাচ্ছে না হাত প্রতীকীদের। পরিস্থিতির বদল ঘটাতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী দলীয় নেতা-কর্মীদের বাম প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশের পর নদিয়া, বর্ধমান-সহ বেশ কয়েকটি জেলার অবস্থান বদলালেও খোদ দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে নামেননি।

অবস্থা আরও জটিল কোচবিহারে। সেখানে মনোনয়নপত্র বাতিল হল না কংগ্রেস প্রার্থীর। তাতেই আটকে গেল বাম-কংগ্রেস 'সমঝোতা'। যদিও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু নিজে কংগ্রেসের কাছে এই আসন থেকে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেন। তা গ্রহণযোগ্য না-হলেও পরে 'লিফলেট' বিলির ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব 'লিফলেট বিলি' করে বাম প্রার্থীর সমর্থনে ভোট দেওয়ার আবেদন করবে বলে জানা গিয়েছে।

রবিবার ইটিভি ভারতকে দক্ষিণ কলকাতা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ বলেন, "আগামিকাল বিধানভবনে এআইসিসি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হবে। সেই বৈঠকের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যদিও কয়েকদিন আগে তিনি স্পষ্ট করেছিলেন, 'দক্ষিণ কলকাতায় কোনওভাবেই তিনি সায়রা শাহ হালিমের সমর্থনে প্রচারে নামবেন না।' সেক্ষেত্রে তিনি বলেন, "বিমানবাবু বলছেন জোট নয়, আসন সমঝোতা করতে ৷ তাহলে 12টা আসনে লড়ে বাকি 30টা আসনে কেন কংগ্রেস প্রার্থীরা বামেদের নতুন প্রজন্মের উঠতি নেতাদের প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব নিতে যাবেন? বামেরা যেমন কংগ্রেসের 12টা আসনে প্রার্থী দেয়নি, তেমনই বাংলায় কংগ্রেসের নিজের দলের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বামেদের জন্য 12টা আসনে প্রার্থী না-দিয়ে বাকি 18টা আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা উচিৎ। সবাই জানে ফলাফল কী হবে ৷ তারপরেও দলীয় পতাকা গুটিয়ে পার্টি অফিসে রেখে দেওয়া আত্মহত্যারই সামিল ৷ প্রদীপ প্রসাদের প্রশ্ন, কেন 'বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ জোট' লেখা হচ্ছে? কেন 'বাম-কংগ্রেস গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ জোট' লেখা হচ্ছে না? দেওয়ালে যদি 'জোট' কথাটা লেখা হয় তাহলে বিমানবাবুদের মুখে আসন সমঝোতার বুলি কেন? গত 2016 এবং 2021 সালে সিপিআইএমের সঙ্গে জোট হয়েছিল। দু'বারই সারা কলকাতায় কোথাও কংগ্রেসের প্রার্থী ছিল না শুধু কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের 4টে বিধানসভায় কংগ্রেস লড়েছিল। তবে কোন অঙ্কে কলকাতা দক্ষিণ আসন সিপিএম প্রার্থী ঘোষণা করল?"

Left Congress Alliance
কৃষ্ণনগরে বাম প্রার্থীর প্রচারে জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র

প্রথম দিকে নদিয়া জেলায় কংগ্রেস নেতৃত্ব বাম প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে নামেননি। পরে অধীরের নেতৃত্বে জেলা কংগ্রেস মুখপত্র সিলভী সাহা নিজে কৃষ্ণনগরের সিপিএম প্রার্থী এসএম সাদীর হয়ে প্রচারে নামেন। এদিন তিনি ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমাদের জাতীয় দল। ফলে, সেখান থেকে নির্দেশ না-পেলে আগে থেকে তো কিছু করতে পারি না। নির্দেশ পাওয়ার পরই প্রচারে নেমেছি। হাওয়া ভালো। এসএম সাদী ভাল ফল করবেন।"

বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে এবারে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী বর্ধমান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সিপিআইএমের ডঃ সুকৃতি ঘোষাল। কিন্তু বর্ধমান ও দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বেশ কিছু এলাকায় প্রথম দিকে বাম প্রার্থীর প্রচারে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ভোট প্রচারে নামা হয়নি। এই নিয়ে কংগ্রেস নেতারা প্রকাশ্যে কিছু না-বললেও শোনা যাচ্ছিল বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে তারা নিজেদের প্রার্থী দিতে চেয়েছিলেন। এমনকি, যুব কংগ্রেস নেতা আজহার মল্লিকের সমর্থনে ওই লোকসভার বহু জায়গায় দেওয়াল লিখনও শুরু হয়েছিল। তবে, সুকৃতি ঘোষালের নাম ঘোষণা ও অধীরের নির্দেশের পর বামদলগুলি, কংগ্রেস ও আরজেডি'র জেলা পদাধিকারীরা একত্রে একটি লিফলেট প্রকাশ করে মানুষের কাছে তাদের জোটবার্তা তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন:

  1. 'সমঝোতা'য় নেই আইএসএফ ! কার ক্ষতি ? কার লাভ ?
  2. রাজ্য-রাজভবন সংঘাত, বোসের নিন্দায় সরব বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল
  3. ছাপা অতীত, রঙিন ইস্তাহারে ঝকঝকে ডিজিটাল সিপিএম

কলকাতা, 7 এপ্রিল: এবারের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বামেদের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস 'গাঁটছড়া'য় নয়, 'সমঝোতা'য় এসেছে। কিন্তু রাজ্যের বহু জায়গায় সেই 'সমঝোতা'ও কাজে দিচ্ছে না। কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থীর ভোটপ্রচারে দেখা যাচ্ছে না হাত প্রতীকীদের। পরিস্থিতির বদল ঘটাতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী দলীয় নেতা-কর্মীদের বাম প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে নামার নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশের পর নদিয়া, বর্ধমান-সহ বেশ কয়েকটি জেলার অবস্থান বদলালেও খোদ দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে নামেননি।

অবস্থা আরও জটিল কোচবিহারে। সেখানে মনোনয়নপত্র বাতিল হল না কংগ্রেস প্রার্থীর। তাতেই আটকে গেল বাম-কংগ্রেস 'সমঝোতা'। যদিও বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু নিজে কংগ্রেসের কাছে এই আসন থেকে প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেন। তা গ্রহণযোগ্য না-হলেও পরে 'লিফলেট' বিলির ব্যবস্থা থাকবে বলে জানা গিয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব 'লিফলেট বিলি' করে বাম প্রার্থীর সমর্থনে ভোট দেওয়ার আবেদন করবে বলে জানা গিয়েছে।

রবিবার ইটিভি ভারতকে দক্ষিণ কলকাতা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ বলেন, "আগামিকাল বিধানভবনে এআইসিসি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হবে। সেই বৈঠকের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যদিও কয়েকদিন আগে তিনি স্পষ্ট করেছিলেন, 'দক্ষিণ কলকাতায় কোনওভাবেই তিনি সায়রা শাহ হালিমের সমর্থনে প্রচারে নামবেন না।' সেক্ষেত্রে তিনি বলেন, "বিমানবাবু বলছেন জোট নয়, আসন সমঝোতা করতে ৷ তাহলে 12টা আসনে লড়ে বাকি 30টা আসনে কেন কংগ্রেস প্রার্থীরা বামেদের নতুন প্রজন্মের উঠতি নেতাদের প্রতিষ্ঠিত করার দায়িত্ব নিতে যাবেন? বামেরা যেমন কংগ্রেসের 12টা আসনে প্রার্থী দেয়নি, তেমনই বাংলায় কংগ্রেসের নিজের দলের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য বামেদের জন্য 12টা আসনে প্রার্থী না-দিয়ে বাকি 18টা আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা উচিৎ। সবাই জানে ফলাফল কী হবে ৷ তারপরেও দলীয় পতাকা গুটিয়ে পার্টি অফিসে রেখে দেওয়া আত্মহত্যারই সামিল ৷ প্রদীপ প্রসাদের প্রশ্ন, কেন 'বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ জোট' লেখা হচ্ছে? কেন 'বাম-কংগ্রেস গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ জোট' লেখা হচ্ছে না? দেওয়ালে যদি 'জোট' কথাটা লেখা হয় তাহলে বিমানবাবুদের মুখে আসন সমঝোতার বুলি কেন? গত 2016 এবং 2021 সালে সিপিআইএমের সঙ্গে জোট হয়েছিল। দু'বারই সারা কলকাতায় কোথাও কংগ্রেসের প্রার্থী ছিল না শুধু কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের 4টে বিধানসভায় কংগ্রেস লড়েছিল। তবে কোন অঙ্কে কলকাতা দক্ষিণ আসন সিপিএম প্রার্থী ঘোষণা করল?"

Left Congress Alliance
কৃষ্ণনগরে বাম প্রার্থীর প্রচারে জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র

প্রথম দিকে নদিয়া জেলায় কংগ্রেস নেতৃত্ব বাম প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচারে নামেননি। পরে অধীরের নেতৃত্বে জেলা কংগ্রেস মুখপত্র সিলভী সাহা নিজে কৃষ্ণনগরের সিপিএম প্রার্থী এসএম সাদীর হয়ে প্রচারে নামেন। এদিন তিনি ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমাদের জাতীয় দল। ফলে, সেখান থেকে নির্দেশ না-পেলে আগে থেকে তো কিছু করতে পারি না। নির্দেশ পাওয়ার পরই প্রচারে নেমেছি। হাওয়া ভালো। এসএম সাদী ভাল ফল করবেন।"

বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে এবারে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী বর্ধমান মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সিপিআইএমের ডঃ সুকৃতি ঘোষাল। কিন্তু বর্ধমান ও দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বেশ কিছু এলাকায় প্রথম দিকে বাম প্রার্থীর প্রচারে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ভোট প্রচারে নামা হয়নি। এই নিয়ে কংগ্রেস নেতারা প্রকাশ্যে কিছু না-বললেও শোনা যাচ্ছিল বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে তারা নিজেদের প্রার্থী দিতে চেয়েছিলেন। এমনকি, যুব কংগ্রেস নেতা আজহার মল্লিকের সমর্থনে ওই লোকসভার বহু জায়গায় দেওয়াল লিখনও শুরু হয়েছিল। তবে, সুকৃতি ঘোষালের নাম ঘোষণা ও অধীরের নির্দেশের পর বামদলগুলি, কংগ্রেস ও আরজেডি'র জেলা পদাধিকারীরা একত্রে একটি লিফলেট প্রকাশ করে মানুষের কাছে তাদের জোটবার্তা তুলে ধরেন।

আরও পড়ুন:

  1. 'সমঝোতা'য় নেই আইএসএফ ! কার ক্ষতি ? কার লাভ ?
  2. রাজ্য-রাজভবন সংঘাত, বোসের নিন্দায় সরব বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল
  3. ছাপা অতীত, রঙিন ইস্তাহারে ঝকঝকে ডিজিটাল সিপিএম
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.