কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: ডেল্টা জুটমিলে ভুয়ো ডিরেক্টর নিয়োগ কাণ্ডে এফআইআর না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানার । কলকাতা হাইকোর্টে ওই থানার ওসি-কে তলব করতেই তড়িঘড়ি এফআইআর গ্রহণ করা হল ।
ডেল্টা জুট মিলে ভুয়ো ডিরেক্টর নিয়োগ করে কর্মচারীদের প্রায় 22 কোটি টাকা না দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল । সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার রাতে এসএফয়াইও-কে এফআইআর দায়ের করতে নির্দেশ দেন । শুক্রবার সেই এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি ৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষ যখন এফআইআর দায়ের করতে যায় হেয়ার স্ট্রিট থানার তরফে টালবাহানা করা হয় বলে অভিযোগ ।
এ দিন বেলা 3টের সময় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল । বিচারপতি বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গে হেয়ার ট্রিট থানার ওসিকে তলব করেন দুপুর 3টে 25 মিনিটের মধ্যে৷ প্রয়োজনে বিচারপতি নিজের ফোন নম্বর হেয়ার স্ট্রিট থানার ওসি-কে দিতে নির্দেশ দেন রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ।
প্রায় 4টে নাগাদ যখন ওসি আদালতে আসেন ৷ তার আগে অবশ্য এফআইআর নেয় হেয়ার স্ট্রিট থানা ৷ বিচারপতি ওসি-কে বলেন, ‘‘আমরা সবাই দরিদ্র মানুষ । জানেন তো, ডিরেক্টর মাটির বাড়িতে থাকেন । সবার তো আর দশতলা বাড়ি নেই । 21 কোটি টাকা প্রভিডেন্ট ফান্ড বকেয়া । একটু শক্ত হাতে কাজ করুন । এক্ষেত্রে আপনারা খুব ভালো কাজ করেছেন । আপনাদের কাজে আমি খুব খুশি ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি লক্ষ্য করেছি যেখানে রাজনৈতিক ব্যক্তি যুক্ত থাকেন না, সেখানে তিনদিনের মধ্যে অভিযোগের নিষ্পত্তি হয় । কিন্তু রাজনৈতিক ব্যক্তি যুক্ত থাকলে অনেক বেশি দিন সময় লাগে । আমি ব্যক্তিগতভাবে পুলিশের বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না । পুলিশের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই । আপনাদের কাজ না করতে দিলে আপনারা আর কী করবেন ? আপনাদের নির্বিঘ্নে কাজ করতে দিলে সাধারণ আইনশৃঙ্খলার কোনও সমস্যাই থাকে না ।’’
অন্যদিকে রিপোর্ট সময়ে দিতে না পারায় এসএফআইও-কে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি । এসএফআইও অফিসাররা অযোগ্য বলেও উল্লেখ করেন । এদিকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন ডেল্টা কোম্পানির ট্রাস্টি বোর্ডের দুই সদস্য । কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, যেহেতু তদন্ত শুরু হয়েছে তাই এই মুহূর্তে এই মামলার কোনও প্রয়োজন নেই । আবেদন খারিজ হয়ে যায় বিচারপতি সূর্য প্রকাশ কেশরওয়ানি ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে ৷
আরও পড়ুন: