কলকাতা, 31 জুলাই: একবালপুুরে বাড়ির ছাদে স্কুল ব্যাগ থেকে উদ্ধার হল একাধিক বোমা ও কার্তুজ ৷ মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে একবালপুর থানা এলাকার কাল মার্কস সরণি এলাকায় ৷ গতকাল রাতে একবালপুর থানার পুলিশ এবং লালবাজারের বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড ঘটনাস্থলে গিয়ে কালো রঙের স্কুল ব্যাগটি উদ্ধার করে ৷
লালবাজার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে ওই বাড়ির এক সদস্য ছাদে ওঠেন ৷ তিনিই প্রথম স্কুল ব্যাগটি দেখেন ৷ সেটি দেখে তাঁর সন্দেহ হয় ৷ কারণ, ওই বাড়িতে স্কুল-কলেজে পড়ার মতো কেউ নেই ৷ ফলে তিনি ব্যাগটি খুলতেই দেখেন, তার ভিতরে একাধিক বোমা ও কার্তুজ রাখা রয়েছে ৷ এরপর তিনি বাড়ির লোকজনকে বিষয়টি জানান ৷ তাঁরাই একবালপুর থানায় খবর দেন ৷ খবর যায় লালবাজারেও ৷ গতকাল রাতেই পুলিশ নিরাপদে বোমা ও কার্তুজগুলি উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করেছে ৷ তার ভিতরে মোট সাতটি বোমা পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র ৷
তবে, বুধবার সকালে ফের ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযানে নেমেছে একবালপুর থানা ও লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দারা ৷ ওই বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা ৷ লালবাজার সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, এলাকায় বেশ কিছুদিন আগে টাকা ছিনতাই ও গণ্ডগোল হয়েছিল ৷ সেই গণ্ডগোলের নেপথ্যে এলাকারই বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বাড়ির মালিক ৷ কিন্তু, পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেনি ৷ ফলে তারা অবাধে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ তাদের মধ্যেই কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই স্কুল ব্যাগে তাজা বোমা রেখেছে ৷
সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে ৷ ওই ব্যক্তি দাবি করেছেন, তাঁর বাড়ির ছাদে কেউ বা কারা সেই ব্যাগটি ছুড়ে ফেলে দিয়েছে ৷ সত্যিই সেটা হলে, যে তাজা বোমাগুলি ছিল, সেগুলি ফাটল না ? তদন্তকারীদের মতে ছুড়ে ফেলা হলে বোমাগুলির বিস্ফোরণের সম্ভাবনা প্রবল ছিল ৷ কিন্তু, যেভাবে ব্যাগটি তারা উদ্ধার করেছে ৷ তাতে মনে করা হচ্ছে, খুব সাবধানে ব্যাগটি ছাদে কেউ বসিয়ে দিয়ে গিয়েছে ৷
ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে পুলিশ বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে ৷ পাশাপাশি, মোট চারজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৷ পুলিশ ইতিমধ্যে ওই এলাকার প্রতিটি রাস্তা ও গলির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে ৷ কীভাবে ওই একটি স্কুল ব্যাগে সাতটি তাজা বোমা ও এতগুলি কার্তুজ এল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "কিছুদিন আগে ওই এলাকায় একটি গণ্ডগোল হয়েছিল ৷ তবে, উদ্ধার হওয়া বোমা ও কার্তুজের সঙ্গে সেই গণ্ডগোলের কোনও যোগ রয়েছে কি না, সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি বাড়ির মালিকের বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷"