ETV Bharat / state

রবীন্দ্র সরোবরের ভেতরে খাওয়ানো যাবে না পথ-কুকুরদের, নিষেধাজ্ঞা কেএমডিএ-র

প্রাতঃভ্রমণকারীদের উপর পথ-কুকুরদের আক্রমণের অভিযোগ ৷ রবীন্দ্র সরোবরের জল ও পরিবেশ দূষণ রুখতে উদ্যোগী কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি ৷

Ban Feeding Stray Dogs
রবীন্দ্র সরোবরে পথ-কুকুরদের খাওয়ানোয় নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত কেএমডিএ-র (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 21, 2024, 7:20 PM IST

কলকাতা, 21 অক্টোবর: রবীন্দ্র সরোবরে পথ-কুকুরদের খাওয়ানো যাবে না ৷ কেএমডিএ-র তরফে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ সম্প্রতি রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতঃভ্রমণকারীদের উপর পথ-কুকুরদের হামলার একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ সেই সঙ্গে সরোবরের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ৷ তার জেরেই কেএমডিএ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷

রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতঃভ্রমণকারীদের সঙ্গে সারমেয়প্রেমীদের হামেশাই গন্ডগোলের খবর উঠে এসেছে অতীতে ৷ সরোবরের ভিতরে যত্রতত্র পথ-কুকুরদের খাবার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ৷ শুধু তাই নয়, সেই খাবারের অবশিষ্ট থেকে সরোবরের জল ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে জানানো হয় ৷ এমনকি প্রাতঃভ্রমণকারীরা বিশেষত বয়স্করা পথ-কুকুরদের আক্রমণের মুখেও পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ সম্প্রতি এক শিশুকে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনা ঘটেছে ৷ ফলে পথ-কুকুরদের ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকতে হচ্ছে প্রাতঃভ্রমণকারীদের ৷

Ban Feeding Stray Dogs
রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখাতে উদ্যোগ কেএমডিএ-র ৷ (নিজস্ব চিত্র)

এইসব নিয়েই বিভিন্ন সময়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল সরোবরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি বা কেএমডিএ-র কাছে ৷ সম্প্রতি একটি বৈঠকে কেএমডিএ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সরোবরের ভিতরে আর পথ-কুকুরদের খাওয়ানো যাবে না ৷ কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও, এখনও নির্দেশ আকারে তা, রবীন্দ্র সরোবরের কোথাও টাঙানো হয়নি ৷ তবে, দ্রুত সেই নির্দেশিকা জারি করা হবে ৷

কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির এই সিদ্ধান্তে খুশি প্রাতঃভ্রমণকারীরা ৷ পাশাপাশি, সারমেয়প্রেমীদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গে কেএমডিএ-র এক উচ্চ পদমর্যাদার আধিকারিক জানিয়েছেন, "রবীন্দ্র সরোবর পরিচ্ছন্ন রাখা থেকে শুরু করে, তার বায়োডাইভার্সিটি রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ ৷ এমন কোনও কর্মকাণ্ডে রবীন্দ্র সরোবর নোংরা বা দূষিত হয়, সেই কাজ আমরা করতে দেব না ৷ ইতিমধ্যেই, গৃহপালিত পশু নিয়ে সরোবরের অভ্যন্তরে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷ এবার পথ-কুকুরদের সরোবরে খেতে দেওয়া নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে ৷ দ্রুত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে ৷ নির্দেশ আকারে সরোবরের বিভিন্ন অংশে ব্যানার করে, তা টাঙিয়ে দেওয়া হবে ৷"

রবীন্দ্র সরোবরের প্রাতঃভ্রমণকারী 72 বছর বয়সি সুপ্রিয়া তালুকদার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ৷ তিনি জানান, "রাস্তার কুকুররা যেভাবে চিৎকার করে অথবা তেড়ে আসে, বৃদ্ধ মানুষজন যাঁরা হাঁটাচলা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে খুব সমস্যা হয় ৷ আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় ৷ আমার নাতনি বছর 7 বয়স ৷ তাকে সম্প্রতি প্রাতঃভ্রমণ করতে গিয়ে পথ-কুকুরের কামড় খেতে হয়েছে ৷ কিছু কুকুরপ্রেমী মানুষজন সরোবরের ভিতরে খেতে দেন বলেই, সেই সব কুকুর সেখানে থেকে যায় ৷ তারা বাইরে খাবার দিলে, কুকুররা বাইরেই থাকবে ৷"

কুকুরপ্রেমী অরুণাভ রায়ের মত, "পরিবেশের ক্ষতি করে কোনও কিছু করা সঠিক নয় ৷ সরোবর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সঠিক ৷ কুকুরগুলিকে খাওয়ানো নিয়ে কথা, সেটা বাইরেও করা যেতে পারে ৷ যাঁদের মূল উদ্দেশ্য ওই চত্বরের কুকুরদের নিয়মিত খাওয়ানো, তাঁরা সরোবরের বাইরেও খাওয়াতে পারেন ৷"

আবার বেশকিছু মানুষজন এই বিষয়টাকে ভালো চোখে দেখছেন না ৷ তাঁদের দাবি, কুকুরদের বিভিন্ন অঞ্চল থাকে ৷ যেখানে তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে ৷ তাই সেই মতো ভিতরে তাঁরা খেতে দেন ৷ আর খেতে দেওয়ার ক্ষেত্রে, যে সমস্ত খাবার দেওয়া হয়, তাতে কতটা পরিবেশে প্রভাব পড়ে, সেই নিয়েও তাঁদের সন্দেহ আছে ৷ আসলে প্রাতঃভ্রমণকারীদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই, কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত বলে মত একাংশের ৷

কলকাতা, 21 অক্টোবর: রবীন্দ্র সরোবরে পথ-কুকুরদের খাওয়ানো যাবে না ৷ কেএমডিএ-র তরফে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ সম্প্রতি রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতঃভ্রমণকারীদের উপর পথ-কুকুরদের হামলার একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে ৷ সেই সঙ্গে সরোবরের পরিচ্ছন্নতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ৷ তার জেরেই কেএমডিএ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷

রবীন্দ্র সরোবরে প্রাতঃভ্রমণকারীদের সঙ্গে সারমেয়প্রেমীদের হামেশাই গন্ডগোলের খবর উঠে এসেছে অতীতে ৷ সরোবরের ভিতরে যত্রতত্র পথ-কুকুরদের খাবার দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ৷ শুধু তাই নয়, সেই খাবারের অবশিষ্ট থেকে সরোবরের জল ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে জানানো হয় ৷ এমনকি প্রাতঃভ্রমণকারীরা বিশেষত বয়স্করা পথ-কুকুরদের আক্রমণের মুখেও পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ সম্প্রতি এক শিশুকে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনা ঘটেছে ৷ ফলে পথ-কুকুরদের ভয়ে তটস্থ হয়ে থাকতে হচ্ছে প্রাতঃভ্রমণকারীদের ৷

Ban Feeding Stray Dogs
রবীন্দ্র সরোবরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখাতে উদ্যোগ কেএমডিএ-র ৷ (নিজস্ব চিত্র)

এইসব নিয়েই বিভিন্ন সময়ে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল সরোবরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি বা কেএমডিএ-র কাছে ৷ সম্প্রতি একটি বৈঠকে কেএমডিএ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সরোবরের ভিতরে আর পথ-কুকুরদের খাওয়ানো যাবে না ৷ কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও, এখনও নির্দেশ আকারে তা, রবীন্দ্র সরোবরের কোথাও টাঙানো হয়নি ৷ তবে, দ্রুত সেই নির্দেশিকা জারি করা হবে ৷

কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির এই সিদ্ধান্তে খুশি প্রাতঃভ্রমণকারীরা ৷ পাশাপাশি, সারমেয়প্রেমীদের মধ্যে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গে কেএমডিএ-র এক উচ্চ পদমর্যাদার আধিকারিক জানিয়েছেন, "রবীন্দ্র সরোবর পরিচ্ছন্ন রাখা থেকে শুরু করে, তার বায়োডাইভার্সিটি রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ ৷ এমন কোনও কর্মকাণ্ডে রবীন্দ্র সরোবর নোংরা বা দূষিত হয়, সেই কাজ আমরা করতে দেব না ৷ ইতিমধ্যেই, গৃহপালিত পশু নিয়ে সরোবরের অভ্যন্তরে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ৷ এবার পথ-কুকুরদের সরোবরে খেতে দেওয়া নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে ৷ দ্রুত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে ৷ নির্দেশ আকারে সরোবরের বিভিন্ন অংশে ব্যানার করে, তা টাঙিয়ে দেওয়া হবে ৷"

রবীন্দ্র সরোবরের প্রাতঃভ্রমণকারী 72 বছর বয়সি সুপ্রিয়া তালুকদার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ৷ তিনি জানান, "রাস্তার কুকুররা যেভাবে চিৎকার করে অথবা তেড়ে আসে, বৃদ্ধ মানুষজন যাঁরা হাঁটাচলা করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে খুব সমস্যা হয় ৷ আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয় ৷ আমার নাতনি বছর 7 বয়স ৷ তাকে সম্প্রতি প্রাতঃভ্রমণ করতে গিয়ে পথ-কুকুরের কামড় খেতে হয়েছে ৷ কিছু কুকুরপ্রেমী মানুষজন সরোবরের ভিতরে খেতে দেন বলেই, সেই সব কুকুর সেখানে থেকে যায় ৷ তারা বাইরে খাবার দিলে, কুকুররা বাইরেই থাকবে ৷"

কুকুরপ্রেমী অরুণাভ রায়ের মত, "পরিবেশের ক্ষতি করে কোনও কিছু করা সঠিক নয় ৷ সরোবর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সঠিক ৷ কুকুরগুলিকে খাওয়ানো নিয়ে কথা, সেটা বাইরেও করা যেতে পারে ৷ যাঁদের মূল উদ্দেশ্য ওই চত্বরের কুকুরদের নিয়মিত খাওয়ানো, তাঁরা সরোবরের বাইরেও খাওয়াতে পারেন ৷"

আবার বেশকিছু মানুষজন এই বিষয়টাকে ভালো চোখে দেখছেন না ৷ তাঁদের দাবি, কুকুরদের বিভিন্ন অঞ্চল থাকে ৷ যেখানে তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে ৷ তাই সেই মতো ভিতরে তাঁরা খেতে দেন ৷ আর খেতে দেওয়ার ক্ষেত্রে, যে সমস্ত খাবার দেওয়া হয়, তাতে কতটা পরিবেশে প্রভাব পড়ে, সেই নিয়েও তাঁদের সন্দেহ আছে ৷ আসলে প্রাতঃভ্রমণকারীদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই, কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত বলে মত একাংশের ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.