কলকাতা, 19 নভেম্বর: কলকাতার বেশ কিছু জায়গায় কাজ অসমাপ্ত রয়েছে কেইআইআইপি-র ৷ যার জেরে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে নাগরিকদের । বকেয়া কাজ নিয়ে তাই এবার বড় সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরনিগম ৷
কর্পোরেশন সূত্রে খবর, সোমবার কলকাতা এনভারমেন্ট ইমপ্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রজেক্টের (কেইআইআইপি) আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম ৷ সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুর আধিকারিকরাও ৷ সেখানেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, চলতি বছরের ডিসেম্বরে মধ্যে কেইআইআইপি-র তরফে যদি তাদের বকেয়া কাজ শেষ না-করা হয়, তাহলে বাকি সব কাজটাই সারবে কলকাতা পুরনিগম ৷
গত 2 অক্টোবর মহালয়ার সকালে বাঁশদ্রোণীতে কিশোরকে পিষে দিয়েছিল জেসিবি ৷ যেখানে দুর্ঘটনা ঘটে, সেখানে ক'দিন ধরে রাস্তা সারাইয়ের কাজ চলছিল ৷ দ্রুতগতিতে যাওয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জেসিবি ধাক্কা মারে ওই ছাত্রকে । তাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে ৷ এর পাশাপাশি কয়েক বছর আগে নিকাশি প্রকল্পের কাজ করার সময় তলিয়ে গিয়ে চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল কুঁদঘাটে ।
একের পর এক মৃত্যুর ঘটনার পর বারে বারে কেইআইআইপি-কে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেয় কলকাতা পুরনিগম ৷ পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কাজ শেষ করতে পারছে না-টেন্ডার নেওয়া সংস্থাগুলো । চলতি বছরের ডিসেম্বরে মধ্যে যদি সেই কাজ শেষ না-হয়, তাহলে বাকি সব কাজটাই করে দেবে কলকাতা পুরনিগম । এমনকি কাজের বরাত পাওয়া সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে করা হবে কালো তালিকাভুক্ত ।
পুরনিগম সূত্রে খবর, সোমবারের বৈঠকে কেইআইআইপি আসন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে আরও একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এই প্রকল্পে ট্রাঞ্চ 2-এ মূলত কলকাতার সংযুক্ত এলাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ড নিকাশি নালা, রাস্তার কাজ করা হয়েছে । বেহালা, জোকা, কুঁদঘাট এই সমস্ত এলাকায় বেশ কিছু কাজ দীর্ঘ বছর ধরেই অসমাপ্ত হয়ে পড়ে আছে । কারণ যে সংস্থাগুলি টেন্ডার নিয়েছে তারা কাজে ঢিলেমি করছে ।
2019 সালে সমস্ত কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেই কাজ আজও শেষ হয়নি । 2022 সালে কাজ শেষ করার নিদান দিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম । কিন্তু এরপর ফের 2023 সালে সময়সীমা দেওয়া হয় ৷ সেই সময় পেরিয়ে গেলেও কোনও কাজ হয়নি । শেষ পর্যন্ত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে চলতি বছরের ডিসেম্বরে মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে, সংস্থাগুলিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে । পাশাপাশি বকেয়া কাজ করবে কলকাতা কর্পোরেশন ।
আগামী ট্রাঞ্চের কাজ শুরু হবে 2025 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে । এবার আর কেইআইআইপির উপর সব কাজটা ছেড়ে দেওয়া হবে না । প্রাক্তন ডিজি সিভিলকে মাথায় রেখে কলকাতা কর্পোরেশন একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে । যাতে একাধিক বিভাগের ডিজিরা থাকবেন । সেই কমিটি কাজ তত্ত্বাবধান করবে ।
এই বিষয় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "মানুষকে কষ্ট দেওয়া যাবে না । তাতে কেইআইআইপি জন্য অপেক্ষা করব না । ওদের টাকা যায় যাবে । ট্রাঞ্চ 3 কাজ হবে । 142, 143, 127, 139, 140, 141, 138, এই ওয়ার্ডগুলোয় কাজ হবে । 200 মিলিয়ন ডলার টাকার কাজ হবে ।"
তাঁর কথায়, "আমরা একটা ভুল করেছিলাম । সেটা হল, যা কাজ করত ওদের লোক দেখত । এবার কর্পোরেশনের কমিটি দেখবে । তাদের সঙ্গে বসেই প্ল্যান করতে হবে । তাদের অনুমতিতেই কাজ হবে । কর্পোরেশনের কমিটি যেখানে যে কাজ দরকার, সেটাই করাবে ।"