ব্যারাকপুর, 17 ডিসেম্বর: সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষের পাশে দাঁড়ালেন বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান কার্তিক মহারাজ। মঙ্গলবার বিকেলে তিনি প্রবীণ এই আইনজীবীর ব্যারাকপুরের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন। কার্তিক মহারাজের সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং ও কৌস্তভ বাগচি ।
গত 25 নভেম্বর ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ। তারপর থেকেই উগ্র মৌলবাদীদের টার্গেট সে দেশের সংখ্যালঘুরা। সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর আক্রমণ থেকে শুরু করে নানা ধরনের অত্যাচার চলছে পদ্মাপাড়ে। মাঝেমধ্যে উগ্র মৌলবাদী নেতারা ভারতের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ জিগির’ও তুলছে । সমানে চলছে ভারত বিদ্বেষ ! এই পরিস্থিতিতে মৌলবাদীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, জীবন বাজি রেখে সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে আইনি সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছেন সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম আদালতে ‘অকুতোভয়’ রবীন্দ্র, চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে জামিনের সওয়ালও করেছেন। তা নিয়ে অবশ্য কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি ।অভিযোগ, নানাভাবে প্রবীণ এই আইনজীবীকে হেনস্থা করার ষড়যন্ত্র চলছে বাংলাদেশের মাটিতে। চিন্ময়কৃষ্ণ মহারাজের পাশে দাঁড়ানোয় কট্টরপন্থীদের হাতে আক্রান্ত হতে হয়েছে সে দেশের কয়েকজন আইনজীবীকে । তাতেও পিছু হটেননি রবীন্দ্র ।
সম্প্রতি চিকিৎসার জন্য চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ ভারতে এসেছেন। আপাতত তিনি ব্যারাকপুরে ছেলের বাড়িতে রয়েছেন । মঙ্গলবার বিকেলে সেখানে গিয়ে প্রবীণ এই আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করেন বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রধান কার্তিক মহারাজ । ছিলেন বিজেপি নেতা তথা ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং ও কৌস্তভ বাগচিও ।
কার্তিক মহারাজ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর মৌলবাদীরা নিদারুণ অত্যাচার চালাচ্ছে । রোজ সেদেশের সংখ্যালঘুরা খুন হচ্ছেন । মূর্তি ভাঙা হচ্ছে । সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্ত করার জন্য রবীন্দ্রবাবু লড়াই করে চলেছেন । অসম্ভব সাহস নিয়ে তিনি তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় তিনি এখনও সুরক্ষিত। আমি তাঁর পাশে থাকব ।’’
বিজেপি নেতা অর্জুন সিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকার জঙ্গিদের জেল থেকে ছেড়ে দিচ্ছে । তারা রবীন্দ্রবাবুকে আক্রমণ করতে পারে। আমি রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করব, তিনি যতদিন আমাদের দেশে থাকবেন, তাঁকে যেন নিরাপত্তা দেওয়া হয় । রাজ্য সরকার নিরাপত্তা না-দিলে আমরা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে রবীন্দ্রবাবুর নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার আবেদন জানাব ।’’ অন্যদিকে এমন ভালোবাসা পেয়ে আপ্লুত রবীন্দ্র ঘোষ বলছেন, ‘‘ভারতবর্ষের মানুষ আমাকে এতটা ভালোবাসেন, এখানে না-এলে জানতেই পারতাম না । আমার নিরাপত্তা নিয়ে ভারতবর্ষের মানুষ এতটা উদ্বিগ্ন হবেন, আমি তা ভাবতে পারছি না ।’’