কলকাতা, 14 নভেম্বর: সাগর দত্ত মেডিক্য়াল কলেজের পিজিটি চিকিৎসক মনোজিৎ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে মেইল করল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। তাঁর বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়ার কথা জানিয়ে মেইল করা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই জুনিয়র চিকিৎসক।
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়ার ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ, এই জুনিয়র চিকিৎসক বর্তমানে সরকারি হাসপাতালে পিজিটি করার পাশাপাশি প্রাইভেট চেম্বারও চালাচ্ছেন। যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। তাই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যসচিব ও মুখ্যসচিবকে মেইল করা হয়েছে। প্রমাণ হিসেবে বেশ কিছু ছবিও সেখানে দিয়েছেন তাঁরা।
মনোজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠিক কী ?
সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি মনোজিৎ মুখোপাধ্যায়। জুনিয়র চিকিৎসক আন্দোলনে অন্যতম মুখও তিনি। তবে এবার তাঁর বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ করল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন। তাদের তরফে বেশ কিছু ছবি প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হয়। সেই ছবি প্রকাশ্যে নিয়ে এসে তাদের অভিযোগ বর্তমানে প্রাইভেটে চেম্বার করছেন এই জুনিয়র চিকিৎসক। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, কোন গাইডলাইন অনুযায়ী সপ্তাহে সাতদিন ব্যক্তিগত স্বার্থে প্রাইভেটে প্র্যাকটিস করছেন তিনি ? কারণ তিনি যে সময় প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে থাকেন, সেই সময় তাঁর সাগর দত্ত মেডিক্য়াল কলেজে রোগী পরিষেবা দেওয়ার কথা ৷ যার জন্য প্রতি মাসে তিনি ভাতাও পেয়ে থাকেন।
মনোজিতের জবাব
যদিও এই অভিযোগকে একেবারে গুরুত্ব দিতে চাননি জুনিয়র চিকিৎসক মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "সামনে আমাদের পরীক্ষা রয়েছে। আমাদের কলেজ থেকে স্টাডি লিভ দেওয়া হয়। পড়াশোনা থেকে মন ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য এই ধরনের বিভিন্ন অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি এগুলোকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চাই না। যদি কারও সংশয় হয়, তাহলে সে খতিয়ে দেখতে পারে যে আমি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেছি কি না। 2019 সালে এমবিবিএস করার পরে আমি করতাম। কোভিডের সময়ও আমি আমার বাড়ির সামনে এই প্রাইভেট প্র্যাকটিস করেছি। 2022 সালে এমডি পড়াশোনা শুরু করেছি। তারপর থেকে ওই চেম্বার আমার দাদা সামলান। তবে যদি কারও প্রশ্ন থাকে তাহলে সে যাচাই করে দেখতেই পারে।"
আন্দোলনের ইতিহাস
আরজি করের ঘটনা ঘটার পর থেকে জুনিয়র চিকিৎসকরা আন্দোলন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন তৈরি হয়। তাঁদের অভিযোগ ছিল সরকারি হাসপাতালে থ্রেট কালচার চলছে। সেই ঘটনায় বেশ কয়েকজন জুনিয়র চিকিৎসকের নামও করেন তাঁরা । পরে এই অভিযুক্তরাই ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়ার ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি পৃথক সংগঠন গড়ে তোলেন। এবার তাঁরাই আন্দোলনরত এক জুনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন।