মেদিনীপুর, 23 অগস্ট: কর্মবিরতির মধ্যেই মেদিনীপুরে বিরল অপারেশনে যোগ দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা! প্রথমবারের জন্য মেদিনীপুরে সফলভাবে সম্পন্ন হল 'কেরাটোপ্লাস্টি'! দিনের শেষে 'হিরো' জুনিয়র ডাক্তাররা। ডাক্তারদের মতে, "আন্দোলন আন্দোলনের জায়গায় থাকবে ৷ তবে পরিষেবা দিতেও আমরা পিছপা হব না।
উল্লেখ্য, আরজি করের কাণ্ডের পর কেটে গিয়েছে প্রায় 15 দিন। সেই ঘটনায় বিচারের দাবিতে এখনও রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে কর্মবিরতিতে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে আন্দোলনরত চিকিৎসকরাই এবার নজির গড়ল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দীর্ঘ 20 বছরে মেডিক্যাল কলেজে প্রথমবারের জন্য চক্ষু প্রতিস্থাপন করা হল।
কীভাবে সম্পন্ন হল 'কেরাটোপ্লাস্টি'
- এদিন সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চক্ষু প্রতিস্থাপন অপারেশনে অংশ নিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। মূলত বছর দু'য়েক ধরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চক্ষু প্রতিস্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সেটআপ করা হলেও চক্ষুদাতা-(আই ডোনার) কে পাওয়া যাচ্ছিল না ৷ রেটিনার প্রয়োজন এমন কিছু রোগীর তালিকা ও প্রস্তুত করে মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ। সম্প্রতি এক প্রৌঢ়া চক্ষুদানের ইচ্ছেপ্রকাশ করে।
- মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই দিন দুয়েক আগে মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ার। এরপরই হাসপাতালের তরফে সংরক্ষণ করা হয় প্রৌঢ়ার চোখের রেটিনা। তালিকা ধরে ডেকে পাঠানো হয় দুই রোগীকে যাদের চক্ষুর প্রয়োজন রয়েছে। দুই রোগীর যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সফল 'কেরাটোপ্লাস্টি' অর্থাৎ চক্ষু প্রতিস্থাপন করা হয় বৃহস্পতিবার। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চক্ষু বিভাগের 16 জনের বিশেষ দল এই দুই অপারেশনে যোগ দেয়। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররাও।
সিনিয়র ডাক্তাররা কী বলছেন?
- একদিকে যেমন ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে আন্দোলন চলছে, তখন এধরনের বিরল অপারেশনে জুনিয়র ডাক্তারদের যোগদান মানুষের মধ্যে অন্য বার্তা পৌঁছবে বলেই মত সিনিয়র ডাক্তারদের ৷ ডাক্তারদের কথামতো যতদিন না-পর্যন্ত খুনে জড়িতদের কঠোর শাস্তি হবে ততদিন আন্দোলন যে জারি থাকবে তা কার্যত স্পষ্ট। তবে একইসঙ্গে তাঁরা এটাও জানাচ্ছেন, জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোনও সংকোচ করবেন না।
জুনিয়র এক ডাক্তার বলেন, "এই আই ডিপার্টমেন্ট বছর দু'য়েক আগের খোলা হয়েছে। আমরা অপেক্ষা করছিলাম ৷ আমাদের আন্দোলন যেমন একদিকে চলছে তেমন আমরা সাধারণ মানুষকে পরিষেবাও দিয়ে আসছি প্রতিদিন।"
উল্লেখ্য, প্রৌঢ়ার এই চোখ পেলেন দুই চোখ হারানো রোগী। তাঁরা বহুদিন ধরে আবেদন করে আসছিলেন ৷ কিন্তু না-পাওয়াতে এতদিন ধরে মিল ছিল না। এবার খোলা চোখে পৃথিবী দেখতে পাবে দুই মেদিনীপুরের রোগী।