কলকাতা, 18 সেপ্টেম্বর: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর এমন হাওয়া চলছিল যে, রাজনীতিতে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন ৷ তবে, তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়া আরও বড় ভুল ৷ এমনটাই মনে করেন প্রাক্তন আইএসএস তথা রাজ্যসভার সদ্য প্রাক্তন সাংসদ জহর সরকার ৷ অন্যদিকে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির পূর্ণ আস্থা রয়েছে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের উপর ৷ তিনি ছাত্র সমাজের উপর ভরসা রাখার বার্তা দিলেন ৷
এ দিন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাক্তনী হিসেবে কনভেনশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জহর সরকার বলেন, "কলেজে ফিরে আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে ৷ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় তার মান রেখেছে এরকম আলোচনা সভার আয়োজন করে ৷ বিশ্বাস করুন, হাফ ছেড়ে বেঁচেছি। তৃণমূলে যোগ দেওয়াই উচিত হয়নি ৷ একুশে রাজ্যজুড়ে এমন হাওয়া চলছিল, বাধ্য হয়ে যোগ দিয়েছিলাম ৷ রাজ্যসভায় বলতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেছি ৷ কিন্তু, আরজি কর-কাণ্ডে আসল দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে ৷ সুপ্রিম কোর্ট কড়া ভাষায় যে বক্তব্য পেশ করেছে, তাতে কারও বুকের পাটা থাকবে বলে মনে করছি না ৷"
জুনিয়র ডাক্তারদের বর্তমান এই আন্দোলনকে 70’র আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করেছেন জহর সরকার ৷ তিনি বলেন, "শুধুমাত্র এই একটি কেসের জন্য কেউ পথে নামেননি ৷ এই জাতীয় প্রতিবাদ আন্দোলন আগে কখনও দেখিনি ৷ প্রতিবাদের যে ঢেউ গোটা দেশজুড়ে আছড়ে পড়েছে, তা 70 সালেও দেখিনি ৷ এটার সঙ্গে অবশ্য রাজনীতিকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয় ৷ এটা মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ ৷"
আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার চিকিৎসক আখতার আলি এদিন বলেন, "যে চুরি, দুর্নীতি, আক্রমণ হয়েছে তার জবাব দিতেই হবে ৷ ছাত্র সমাজের প্রতি ভরসা রাখুন ৷ তাঁদের সাহস যোগান ৷ তাঁরা কখন কোনও রাষ্ট্র বা দেশের ক্ষতি চায় না ৷ তাঁদের এই আন্দোলন কোনও রাজনৈতিক দলের ক্রেডিট নয় ৷ তাই তাঁদের প্রতি সমর্থন জানান ৷"
তাঁর মতে, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উচিত তাদের পড়ুয়াদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া ৷ চিকিৎসক আখতার আলি বলেন, "প্রেসিডেন্সি হোক বা যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা হাসপাতাল, পড়ুয়াদের সমস্যা বা যে কোনও দাবি দাওয়ার কথা শুনতে হবে ৷ আমি নিজে তাঁদের কথা শুনেছি, তারপরে জানতে পেরেছি কী ভয়ংকর অবস্থা চলছিল ৷ তারা যখনই এই ছাত্র সমাজের কথা শুনবে না, তখন এই প্রতিবাদ হবে, আন্দোলন হবে ৷ শাসক যদি ছাত্র সমাজের কথা না-শোনে তাহলে সরকার পড়ে যাবে ৷"