কলকাতা, 12 জুন: বিজেপির রাজ্য সভাপতির দ্বায়িত্ব নিতে হলে তিনি প্রস্তুত ৷ ইটিভি ভারতকে এ কথা জানালেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। রাজ্যে বিজেপির ধরাশায়ী অবস্থার জন্য নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি ।
দিল্লিতে পরপর তিনবার সরকার গঠন করেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ । এবার রাজ্য থেকে দু'জন রাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন । বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এবং বালুরঘাটের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তাই এবার রাজ্যে বিজেপির নেতৃত্ব কার হাতে যাবে, সেই নিয়ে চলছে চর্চা । ইতিমধ্যেই একাধিক নাম শোনা যাচ্ছে । এই নামগুলির মধ্যে রয়েছে রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকারের নামও ।
রাজ্যে বিজেপির সভাপতি হিসেবে এখনও রয়েছেন সুকান্ত মজুমদার । তবে যেহেতু তিনি মন্ত্রিত্ব পাচ্ছেন, তাই বিজেপির সাংগঠনিক নিয়ম 'এক ব্যক্তি এক পদ' অনুসারে তাঁকে ছাড়তে হবে রাজ্যের সভাপতির পদ । পরবর্তী রাজ্যে সভাপতি হিসেবে অনেকের নাম উঠে এলেও এই পদের জোরালো দাবিদার জগন্নাথ সরকার । কারণ একে তিনি বিজেপির পুরনো সদস্য, অন্যদিকে শেষ দুটি লোকসভা নির্বাচনে তাঁর ফল খুবই ভালো । 2019 সালে রানাঘাট থেকে তিনি রেকর্ড সংখক ভোটে জয়যুক্ত হয়েছিলেন । সেবার তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল 7 লক্ষ 79 হাজার 767 । এর পর 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনেও তাঁর রিপোর্টকার্ড ছিল বেশ ভালো ।
জগন্নাথ সরকার এদিন ইটিভি ভারতকে জানালেন যে, তিনি রাজ্য সভাপতির দায়িত্বভার নিতে প্রস্তুত । তিনি বলেন, "দল যদি তাঁকে এই দায়িত্বের জন্য যোগ্য মনে করে, তাহলে সেই দায়িত্ব নিতে আমি প্রস্তুত আছি । আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করব । সংগঠনকে আরও মজবুত করার চেষ্টা করব ।"
পাশাপাশি রাজ্যে বিজেপির শোচনীয় ফলের কারণ হিসেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং অবজার্ভারদের দায়ী করেন জগন্নাথ সরকার । তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁদের দায়িত্ব ঠিকঠাকভাবে পালন করেনি । এমনকি পর্যবেক্ষকরা তাঁদের দায়িত্ব পালন না-করে এড়িয়ে গিয়েছেন । সেই কারণ অনুসন্ধান করা অবশ্যই দরকার ।
তিনি আরও বলেন, "আমি নিজের গণনাকেন্দ্রে গিয়ে ভুয়ো এজেন্টদের ধরেছিলাম । একটা ভুল পদ্ধতিতে তাঁদের পরিচয় পত্র দেওয়া হয়েছে । পোলিং অফিসারের পরিচয়পত্রে কোনও সিল ছিল না । তাঁদের ধরার পরেও তাঁরা ঠিকানা বলতে পারছেন না । ধরা পড়ার ভয়ে তাঁরা কেঁদে ফেলেছিলেন । এই বিষয়গুলি পর্যবেক্ষকদের নজরে এনেও কোনও সমাধান হয়নি । আসলে প্রশাসনকে টাকার বিনিময়ে কব্জা করা হয়েছে । এটা ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে এবং অনেক আসনেই বিজেপি কম ব্যবধানে হলেও পরাস্ত হয়েছে । এভাবেই দুর্নীতি করে আইপ্যাকের লোক এবং তৃণমূল কংগ্রেসের লোক গণনায় অংশগ্রহণ করেছে ।"
শোচনীয় ফলাফলের পর দলের একাংশ সংগঠন থেকে শুরু করে রাজ্য সভাপতি এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে । এই বিষয়ে জগন্নাথ সরকার জানান যে, কে কার বিরুদ্ধে কী বলছেন সেটা তাঁর জানা নেই । তবে সাংগঠনিক দুর্বলতা যে ছিল, অনেক ঘাটতি ছিল, তা মেনে নিয়েছেন তিনি ৷
একজন পুরনো এবং সফল বিজেপি নেতা হওয়া সত্ত্বেও নতুনদের বড় পদ দেওয়া হয়েছে । এমনকি তাঁকে মন্ত্রীও করা হয়নি । এই বিষয়ে রানাঘাটের সাংসদের বক্তব্য, এই নিয়ে তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই । কারণ, "অনেক কম সুন্দরী মহিলারও খুব বড় ঘরে বিয়ে হয় ।"