ETV Bharat / state

সেনাঘাঁটিতে বন্যপ্রাণী হামলা সামলাবে কীভাবে ? কুইক রেসপন্স টিম করছে ভারতীয় সেনা - QRT to Tackle Elephant Attack

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 20, 2024, 10:29 PM IST

QRT to Tackle Elephant Attack: উত্তরবঙ্গে জঙ্গলে ঘেরা সেনাঘাঁটিতে হাতি বা চিতাবাঘের মতো বন্যপ্রাণীরা ঢুকে পড়লে তাদের কীভাবে সামলাবেন জওয়ানরা ? কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করে সেই প্রশিক্ষণই দিচ্ছে ভারতীয় সেনা ৷ বিস্তারিত জানতে প্রতিবেদনটি পড়ুন ৷

ETV BHARAT
হাতির হানা মোকাবিলায় কুইক রেসপন্স টিম করছে ভারতীয় সেনা (নিজস্ব চিত্র)

দার্জিলিং, 20 অগস্ট: তড়িঘড়ি কিউআরটি তৈরি করার উদ্যোগ নিল ভারতীয় সেনা । তবে সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গি হামলা রোখার জন্য নয় । এবার ওই বিশেষ কিউআরটি বা কুইক রেসপন্স টিম গঠনের কারণ ভিন্ন ৷ সেনা ছাউনিতে বণ্যপ্রাণীর হামলা হলে বা এলাকায় বণ্যপ্রাণী ঢুকে পড়লে তাকে নিরাপদে জঙ্গলে ফেরাবে এই বিশেষ কিউআরটি ।

সেনাঘাঁটিতে বন্যপ্রাণী হামলা সামলানোর জন্য কুইক রেসপন্স টিম ভারতীয় সেনার (ইটিভি ভারত)

রাজ্যের বন দফতর, ভারতীয় সেনা ও স্ন্যাপ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ওই কিউআরটিগুলি তৈরি করা শুরু হয়েছে । পাশাপাশি বাছাই করা জওয়ানদের সেনা ছাউনিতে বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়লে তাকে নিরাপদে কীভাবে জঙ্গলে ফেরানো যায় বা সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা কীভাবে করা যায় সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে । ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলবেষ্টিত বিন্নাগুড়ি ও সুকনা সেনা ছাউনিতে ওই কিউআরটি তৈরি করা হয়েছে । সব ঠিক থাকলে আগামীতে জঙ্গলে ঘেরা অন্যান্য ভারতীয় সেনা ছাউনিতেও একইভাবে কিউআরটি তৈরি করা হবে বলে জানা গিয়েছে ।

রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় সেনা ছাউনিতে সবথেকে বেশি হাতি ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটে থাকে । উত্তরবঙ্গে হাতির 14টি করিডোর রয়েছে । যা সঙ্কোশ নদী থেকে মেচি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত । এরই মাঝে তিনটে মূল ভারতীয় সেনা ছাউনি রয়েছে ।

1. বিন্নাগুড়ি সেনা ছাউনি - তাতে রেতি-তিতি, রেতি-মোড়াঘাট, রেতি সেন্ট্রাল ডায়না করিডোর রয়েছে । ওই এলাকায় প্রায় 130 থেকে 150টি হাতি থাকে ।
2. সেবক সেনা ছাউনি - তাতে আপাল চাঁদ ও গুলমা করিডোর রয়েছে । হাতির সংখ্যা অন্তত 70 থেকে 80টি ।
3. সুকনা সেনা ছাউনি - তাতে গুলমা ও মেচি করিডোর রয়েছে । হাতির সংখ্যা অন্তত 50টি ।

এছাড়াও রয়েছে,

আইটিবিপি ছাউনি - যা গুলমা ও আপালচাঁদ করিডোরে অবস্থিত ।
ব্যাঙডুবি সেনা ছাউনি - যা লামাগুম্বা-টুকুরিয়াঝাড় মুভমেন্ট এরিয়ায় অবস্থিত ।

এই সেনা ছাউনিগুলি হাতি ও মানুষ সংঘাতের অন্যতম হটস্পট । যদিও হাতি সেনা ছাউনিতে ঢুকে পড়লেও শান্তিমতোই থাকে । সেনারাও তাদের বিব্রত করে না । মূলত সেনা ছাউনিতে খাবার, রেশন, সবজি, খাদ্যসামগ্রী মজুত থাকায় হাতির দল হানা দেয় । হাতি ও সেনা সংঘাত এড়াতে মূলত সেনা ছাউনিগুলিতে কিউআরটি করা হয় । হাতি বা বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়া নিয়ে জওয়ানদের আরও বেশি প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে । সঙ্গে হাতি ছাউনিতে ঢুকে পড়লে কী করা উচিত সেবিষয়ে অবগত করা হচ্ছে সেনার পরিবারের সদস্যদেরও ।

কোন সেনাঘাঁটিতে কতগুলি কিউআরটি ?

1. বিন্নাগুড়িতে 10 জন করে 13টা কিউআরটি তৈরি করা হয়েছে ।
2. সেবকে সেনা ছাউনিতে 10 জন করে 12টি কিউআরটি তৈরি করা হয়েছে ।
3. সুকনা সেনা ছাউনিতে 10 জন করে 10টি টিম তৈরি করা হয়েছে ।

ঠিক হয়েছে যে, হাতি ঢুকে পড়ে যাতে হামলা না করে, সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় পর্যাপ্ত হাতির খাবার রাখা হবে । সেনা ছাউনির ভিতরে হ্যাঙ্গিং ফেন্সিং, স্প্রিং পোল ফেন্সিং লাগানো হবে । একা কোনও হাতি ঢুকে পড়লে তাকে ট্র‍্যাক করা এবং কীভাবে তাকে জঙ্গলে ফেরানো যাবে তা নিশ্চিত করতে শেখানো হচ্ছে । সেনার গাড়িকে কিউআরটি ভ্যানে বদল করা হচ্ছে । তাতে মনিটরিংয়ের সামগ্রী রাখা হবে । এছাড়া সাইরেন, সার্চ লাইট, ক্র্যাকার, পাম্প গান থাকবে ।

এই বিষয়ে ভারতীয় সেনার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক উইং কমান্ডার হিমাংশু তিওয়ারি বলেন, "সুকনা ও বিন্নাগুড়িতে রাজ্যের বন দফতরের উদ্যোগে কিউআরটি তৈরি করা হয়েছে । মূলত সেনা ছাউনিতে ঢুকে পড়া বন্যপ্রাণীকে নিরাপদে কীভাবে জঙ্গলে ফেরানো যায় বা সেই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায়, তার জন্যই ওই কিইআরটি তৈরি করা হয়েছে ।"

রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ, উত্তরবঙ্গ) ভাস্কর জেভি বলেন, "সেনা ছাউনিগুলো মূলত জঙ্গলে থাকে । যে কারণে মাঝেমধ্যে হাতি, চিতাবাঘের মতো প্রাণী ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটে থাকে । সেজন্য বন দফতরের সহযোগিতায় ভারতীয় সেনার জওয়ানদের নিয়ে মূলত ওই কিউআরটি তৈরি করা হচ্ছে ।"

সলিটারি নেচার অ্যান্ড অ্যানিম্যাল প্রোটেকশনের সম্পাদক কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, "সেনা ছাউনিতে মাঝেমধ্যে হাতি ঢুকে পড়ার ঘটনা সব থেকে বেশি ঘটে থাকে । আগে জওয়ানরা খুব নিরাপদে তাঁদের জঙ্গলে ফেরানোর কাজ করেছে । প্রয়োজনে বন দফতরের সাহায্য নিয়েছে । তবে এবার পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, অত্যাধুনিক সামগ্রীর মাধ্যমে ওই কিউআরটি নিরাপদে ও নিয়মমাফিক ভাবে প্রাণীরা ঢুকে পড়লে সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবে ।"

দার্জিলিং, 20 অগস্ট: তড়িঘড়ি কিউআরটি তৈরি করার উদ্যোগ নিল ভারতীয় সেনা । তবে সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গি হামলা রোখার জন্য নয় । এবার ওই বিশেষ কিউআরটি বা কুইক রেসপন্স টিম গঠনের কারণ ভিন্ন ৷ সেনা ছাউনিতে বণ্যপ্রাণীর হামলা হলে বা এলাকায় বণ্যপ্রাণী ঢুকে পড়লে তাকে নিরাপদে জঙ্গলে ফেরাবে এই বিশেষ কিউআরটি ।

সেনাঘাঁটিতে বন্যপ্রাণী হামলা সামলানোর জন্য কুইক রেসপন্স টিম ভারতীয় সেনার (ইটিভি ভারত)

রাজ্যের বন দফতর, ভারতীয় সেনা ও স্ন্যাপ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ওই কিউআরটিগুলি তৈরি করা শুরু হয়েছে । পাশাপাশি বাছাই করা জওয়ানদের সেনা ছাউনিতে বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়লে তাকে নিরাপদে কীভাবে জঙ্গলে ফেরানো যায় বা সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা কীভাবে করা যায় সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে । ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলবেষ্টিত বিন্নাগুড়ি ও সুকনা সেনা ছাউনিতে ওই কিউআরটি তৈরি করা হয়েছে । সব ঠিক থাকলে আগামীতে জঙ্গলে ঘেরা অন্যান্য ভারতীয় সেনা ছাউনিতেও একইভাবে কিউআরটি তৈরি করা হবে বলে জানা গিয়েছে ।

রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় সেনা ছাউনিতে সবথেকে বেশি হাতি ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটে থাকে । উত্তরবঙ্গে হাতির 14টি করিডোর রয়েছে । যা সঙ্কোশ নদী থেকে মেচি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত । এরই মাঝে তিনটে মূল ভারতীয় সেনা ছাউনি রয়েছে ।

1. বিন্নাগুড়ি সেনা ছাউনি - তাতে রেতি-তিতি, রেতি-মোড়াঘাট, রেতি সেন্ট্রাল ডায়না করিডোর রয়েছে । ওই এলাকায় প্রায় 130 থেকে 150টি হাতি থাকে ।
2. সেবক সেনা ছাউনি - তাতে আপাল চাঁদ ও গুলমা করিডোর রয়েছে । হাতির সংখ্যা অন্তত 70 থেকে 80টি ।
3. সুকনা সেনা ছাউনি - তাতে গুলমা ও মেচি করিডোর রয়েছে । হাতির সংখ্যা অন্তত 50টি ।

এছাড়াও রয়েছে,

আইটিবিপি ছাউনি - যা গুলমা ও আপালচাঁদ করিডোরে অবস্থিত ।
ব্যাঙডুবি সেনা ছাউনি - যা লামাগুম্বা-টুকুরিয়াঝাড় মুভমেন্ট এরিয়ায় অবস্থিত ।

এই সেনা ছাউনিগুলি হাতি ও মানুষ সংঘাতের অন্যতম হটস্পট । যদিও হাতি সেনা ছাউনিতে ঢুকে পড়লেও শান্তিমতোই থাকে । সেনারাও তাদের বিব্রত করে না । মূলত সেনা ছাউনিতে খাবার, রেশন, সবজি, খাদ্যসামগ্রী মজুত থাকায় হাতির দল হানা দেয় । হাতি ও সেনা সংঘাত এড়াতে মূলত সেনা ছাউনিগুলিতে কিউআরটি করা হয় । হাতি বা বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়া নিয়ে জওয়ানদের আরও বেশি প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে । সঙ্গে হাতি ছাউনিতে ঢুকে পড়লে কী করা উচিত সেবিষয়ে অবগত করা হচ্ছে সেনার পরিবারের সদস্যদেরও ।

কোন সেনাঘাঁটিতে কতগুলি কিউআরটি ?

1. বিন্নাগুড়িতে 10 জন করে 13টা কিউআরটি তৈরি করা হয়েছে ।
2. সেবকে সেনা ছাউনিতে 10 জন করে 12টি কিউআরটি তৈরি করা হয়েছে ।
3. সুকনা সেনা ছাউনিতে 10 জন করে 10টি টিম তৈরি করা হয়েছে ।

ঠিক হয়েছে যে, হাতি ঢুকে পড়ে যাতে হামলা না করে, সে জন্য বিভিন্ন জায়গায় পর্যাপ্ত হাতির খাবার রাখা হবে । সেনা ছাউনির ভিতরে হ্যাঙ্গিং ফেন্সিং, স্প্রিং পোল ফেন্সিং লাগানো হবে । একা কোনও হাতি ঢুকে পড়লে তাকে ট্র‍্যাক করা এবং কীভাবে তাকে জঙ্গলে ফেরানো যাবে তা নিশ্চিত করতে শেখানো হচ্ছে । সেনার গাড়িকে কিউআরটি ভ্যানে বদল করা হচ্ছে । তাতে মনিটরিংয়ের সামগ্রী রাখা হবে । এছাড়া সাইরেন, সার্চ লাইট, ক্র্যাকার, পাম্প গান থাকবে ।

এই বিষয়ে ভারতীয় সেনার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক উইং কমান্ডার হিমাংশু তিওয়ারি বলেন, "সুকনা ও বিন্নাগুড়িতে রাজ্যের বন দফতরের উদ্যোগে কিউআরটি তৈরি করা হয়েছে । মূলত সেনা ছাউনিতে ঢুকে পড়া বন্যপ্রাণীকে নিরাপদে কীভাবে জঙ্গলে ফেরানো যায় বা সেই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায়, তার জন্যই ওই কিইআরটি তৈরি করা হয়েছে ।"

রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ, উত্তরবঙ্গ) ভাস্কর জেভি বলেন, "সেনা ছাউনিগুলো মূলত জঙ্গলে থাকে । যে কারণে মাঝেমধ্যে হাতি, চিতাবাঘের মতো প্রাণী ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটে থাকে । সেজন্য বন দফতরের সহযোগিতায় ভারতীয় সেনার জওয়ানদের নিয়ে মূলত ওই কিউআরটি তৈরি করা হচ্ছে ।"

সলিটারি নেচার অ্যান্ড অ্যানিম্যাল প্রোটেকশনের সম্পাদক কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, "সেনা ছাউনিতে মাঝেমধ্যে হাতি ঢুকে পড়ার ঘটনা সব থেকে বেশি ঘটে থাকে । আগে জওয়ানরা খুব নিরাপদে তাঁদের জঙ্গলে ফেরানোর কাজ করেছে । প্রয়োজনে বন দফতরের সাহায্য নিয়েছে । তবে এবার পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, অত্যাধুনিক সামগ্রীর মাধ্যমে ওই কিউআরটি নিরাপদে ও নিয়মমাফিক ভাবে প্রাণীরা ঢুকে পড়লে সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারবে ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.