শিলিগুড়ি, 17মে: জেরক্সের দোকানের আড়ালে অবৈধ আন্তর্জাতিক টেলিফোন এক্সচেঞ্জের কারবার ধরা পড়ল উত্তরবঙ্গে । বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি সংলগ্ন রাজগঞ্জ ব্লকের জটিয়াখালি এলাকার 31 নম্বর জাতীয় সড়কের উপর একটি জেরক্সের দোকানে যৌথ অভিযান চালায় শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ, গোয়েন্দা বিভাগ ও এনজেপি থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই দোকানে হানা দেয় পুলিশ, এসওজি ও গোয়েন্দা বিভাগ । ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷
পুলিশ সূত্রে খবর, আগে থেকে তাদের কাছে খবর ছিল যে ওই দোকান থেকে জেরক্সের আড়ালে অবৈধভাবে ভোটার ও আধার কার্ড তৈরির ব্যবসা চলছে ৷ সেই মতোই এদিন দোকানে হানা দেন তদন্তকারীরা ৷ মেশিনের মধ্যে লাগানো শয়ে শয়ে দেশ বিদেশের সিমকার্ড। বসানো শতাধিক ইন্টারনেটের যন্ত্রপাতি। এরপরই মূল অভিযুক্ত মহম্মদ সাব্বির এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বাড়ি রাজগঞ্জ ব্লকের সন্নাসিকাটায় । জানা গিয়েছে, বিগত এক বছর ধরে ওই দোকানের জেরক্সের আড়ালে অবৈধ ভোটার ও আধার কার্ড তৈরির ব্যবসা চলছিল ৷ এই অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রায় 500টি দেশ বিদেশের সিমকার্ড ও তিনটে সিম বক্স।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই সমস্ত মেশিনের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে অনায়াসে ফোন করা যায়। আর মেশিনের মাধ্যমে ফোন করলে সেটা কোনও ভাবেই ধরা পরে না। এমনকী সাইবার ক্রাইম বিভাগে কিংবা টেলিকম সার্ভিস সংস্থাও তা ধরতে পারবে না। ধৃতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, কলকাতা থেকে ওই মেশিন ও সিমগুলি আনা হয়েছিল । কলকাতা থেকেই লোক এসে ওই মেশিন বসিয়ে দিয়ে গিয়েছিল । প্রতিদিন ওই দোকানে লোক আসতো ফোন করতে। বিশেষ করে সব থেকে বেশি কল করা হতো বাংলাদেশে। যদিও ওই সিম বক্সগুলি কোন কাজে ব্যবহার করা হতো তা জানতে সাইবার ক্রাইম বিভাগের সাহায্য নেবে পুলিশ।
ঘটনা প্রসঙ্গেই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বলেন, "প্রচুর সিম উদ্ধার হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে । শুক্রবার ধৃতকে আদালতে তোলা হবে। পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।" প্রতিবেশী ব্যবসায়ী মহম্মদ আলম বলেন, "আমরা ভাবতে পারিনি এমনভাবে অবৈধ কারবার চলছে। এক বছর হল দোকান খুলেছে । আমি নিজেও ওই দোকানে নানা কাজে যেতাম। এখন শুনছি অবৈধ ফোন এক্সচেঞ্জের দোকান চালাচ্ছিল।"
আরও পড়ুন: