কলকাতা, 20 জুন: নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ রাজভবনে মোতায়েন কলকাতা পুলিশের উপস্থিতি তাঁর নিরাপত্তা জন্য 'বড় হুমকি' বলে মনে করছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের ৷ রাজভবন ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পরেও সেখানে দায়িত্ব পালনে রয়েছে কলকাতা পুলিশ ৷ এরপরেই নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস ৷
তিনি বলেন "রাজভবনে বর্তমানে যে অফিসার ইনচার্জ এবং তাঁর দল রয়েছে, তাঁদের উপস্থিতি আমার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে ৷ আমার উদ্বেগের বিষয় নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানালেও তিনি কোনও পদক্ষেপ নেননি ৷" রাজ্যপালের অভিযোগ, মোতায়েন থাকা পুলিশ কর্মীরা বহিরাগতদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রাজভবনের নানা বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করছে ৷ স্পষ্টত, এখানে বহিরাগত বলতে, রাজ্যপাল শাসকশিবিরের দিকে আঙুল তুলেছেন ৷
সিভি আনন্দ বলেন, "রাজভবনে মোতায়েন থাকা পুলিশ আধিকারিকরা অনবরত আমার গতিবিধির উপর নজরদারি করছে ৷ পাশপাশি, এখানে কাজ করা বেশ কিছু আধিকারিকদের উপরেও নজরদারি চালানো হচ্ছে ৷ এই বিষয়ে শাসক দলের অবাধ সমর্থন না-থাকলে এমনটা সম্ভব নয় ৷ এটা সংবিধান লঙ্ঘনের সমান ৷" নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবার এই তথ্য দেওয়ার পরেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রাজ্যপালের ৷ পাশাপাশি তিনি এও জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যেরের হাতে থাকা স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব রয়েছে ৷ তাই তিনি পুলিশের প্রশাসনের গতিবিধি সম্পর্কে কিছু জানেন না, এমনটা হতে পারে না ৷
তিনি আরও বলেন, "বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি, এখানে মোতায়েন থাকা পুলিশ কর্মীরা রাজভবনের বিরুদ্ধে কাজ করছে ৷ এমনকী বিষয়র সত্যতা আমি নিজে যাচাই করেছি ৷" তিনি জানান, নবান্নে যে পুলিশ আধিকারিকদের পোস্ট ছিল, তাঁদেরই রাজভবনে মোতায়েন করা হয়েছে ৷ যদিও তাঁদের নাম প্রকাশ্যে আনতে চাননি রাজ্যপাল ৷ তিনি আরও জানান, আমার পূর্বতন রাজ্যপাল তথা বর্তমানে দেশের উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ও রাজভবনে পুলিশ কর্মী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জানিয়েছিলেন ৷ আমার পূর্বসূরি এবং আমি কলকাতা পুলিশের উপস্থিতির অনুমতি দিয়েছিলাম শুধুমাত্র রাজভবনের কিছু এলাকার গেটের কাছে ৷ শুধু তাই নয়, রাজভবনের নীচের তলায় শুধু পুলিশ মোতায়েনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৷"
তিনি অভিযোগ করে বলেন, "বর্তমানে পুলিশ কর্মীরা অনুমতি ছাড়া অবাঞ্চিতভাবে বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালাচ্ছে ৷ এমনকী, আমার সঙ্গে কে কে দেখা করতে আসছেন, তা দেখার জন্য লিফটের কাছেও নজরদারি চালাচ্ছেন পুলিশ কর্মীরা৷ তাঁদেরকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে ৷ এই পুলিশ কর্মীরা রাজভবনে থাকা অফিসার-ইনচার্জকে রিপোর্ট জানাচ্ছেন ৷ এমনকী, রাজভবনের বাইরেও সে খবর যাচ্ছে ৷" এরপরেই রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানান, যদি রাজভবনে কোনও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে, তাহলে তার দায় বর্তাবে স্বরাষ্ট্র দফতরের উপরে ৷