বহরমপুর, 17 মার্চ: ব্রিগেডের সভা থেকে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী হিসাবে ইউসুফ পাঠানের নাম ঘোষণা হতেই রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। পরদিনই ভিডিয়োবার্তায় বহরমপুর কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়ার ইঙ্গিত দেন। শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল দলের পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিমের সভায় গরহাজির থেকে তিনি তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে দেন।
যদিও গভীর রাতে হোটেলে ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে একান্ত বৈঠকও করেন। তারপর জানিয়ে দেন, তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের হয়ে তিনি প্রচার করবেন না। যদিও ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠকের আগে হুমায়ুন জানিয়েছিলেন, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সাধারণ সম্পাদক ডাকলে অবশ্যই যাবেন। তবে যাঁদের সমাধন করার ক্ষমতা নেই তাঁদের ডাকে যাবেন না। হুমায়ুন বেঁকে বসায় চরম অস্বস্তিতে রয়েছে ঘাসফুল শিবির। কারণ জেলা নেতৃত্ব জানে হুমায়ুনের নিজস্ব পকেট ভোট রয়েছে। আর সেই সমর্থকদের সংখ্যা জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হতে পারে।
বিদ্রোহী হুমায়ুনকে বাগে আনতে তৃণমূল কোন পন্থা নেবে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। উল্লেখ্য, হুমায়ুন কবীর রাজ্য রাজনীতিতে বারবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। বিদ্রোহী এবং স্পষ্টবাদী হিসাবে পরিচিত হুমায়ুন ফের রাজ্য রাজনীতিতে আলোচিত মুখ হয়ে উঠেছে। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তিনি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে দীর্ঘদিন থেকে নিজস্ব মহল ও সংবাদমহলে দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু বহরমপুরে প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করায় ফের বিদ্রোহ ঘোষণা করেন হুমায়ুন।
শনিবার রাতে বহরমপুর জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে দুই সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করেন ফিরহাদ হাকিম। সেই সভায় হুমায়ুনের পাশাপাশি গড় হাজিরার তালিকায় নাম রয়েছে হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ, নওদাঁর বিধায়ক সাফিনা মমতাজ বেগম, জঙ্গিপুরের বিধায়ক জাকির হোসেনের। জাকির হোসেন অবশ্য অসুস্থ বলে পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। সভায় ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ভোট এলে আমাদের দলের কেউ কেউ বিদ্রোহী হয়ে পড়েন। বিদ্রোহী রণক্লান্ত। তাঁদের মনে রাখতে হবে 2026-এ আবার একসঙ্গে লড়তে হবে।" কার্যত বিদ্রোহী বিধায়কদের হুঁশিয়ারি দিয়ে যান ফিরহাদ হাকিম।
সভা শেষে হোটেলে হুমায়ুন কবীর ও নিয়ামতের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠকে বসেন ববি হাকিম। কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি বলেই জানতে পারা গিয়েছে। হুমায়ুন কবীর বলেন, "শুধু আমি নয়। আমার দলের অনেকে ও বহু সমর্থকের প্রার্থী পছন্দ নয়। গুজরাত থেকে এসে অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষমতা নেই ইউসুফের। খেলার ময়দানে ব্যাট, বলে ইউসুফের সাফল্য আমি অস্বীকার করছি না। তবে রাজনীতির ময়দান সম্পূর্ণ আলাদা। পোড় খাওয়া রাজনীতিক অধীরকে মাত দিতে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্ত হওয়া দরকার। পরের বিধানসভায় আমাকে ভোট চাইতে হবে। তাই ইউসুফের হয়ে আমি প্রচার করছি না।"
আরও পড়ুন: