ডেবরা, 27 মার্চ: ডেবরার টেবাগেড়িয়ায় কাঁসাই নদীর উপর অস্থায়ী সেতুটি সোমবার জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। মঙ্গলবারও অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। এর ফলে ভরতপুর ও ভবানীপুর পঞ্চায়েত এলাকার সঙ্গে ডেবরার যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। তার জেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে অবশেষে অবস্থানে বসলেন বিজেপি প্রার্থী হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়। ব্রিজের সামনে অবস্থানে বসে তিনি এলাকার প্রাক্তন সাংসদ দেব ওরফে দীপক অধিকারীকে কটাক্ষ করেন।
মূলত মোহনপুর এনিকেট খাল থেকে জল ছাড়ার ফলেই অস্থায়ী টেবাগেড়িয়া এই সেতুটির বেশ কিছুটা অংশ ভেসে যায়। বর্তমানে জগন্নাথপুর থেকে অস্থায়ী সেতু দিয়ে পারাপার করছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এরপর ঘটনার খবর পেয়ে ওই এলাকায় পৌঁছন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। তারপরই তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ শোনেন। পরবর্তীতে তিনি নদীর পাড়ে কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ বসে পড়েন।
বিক্ষোভ চলাকালীন তিনি তৃণমূল প্রার্থী দেবকে কড়া আক্রমণ করেন। এদিন হিরণ বলেন, "এতদিন দেব বালি খাদান, মোরামের টাকা চুরি করেছে। এবার সেতুর টাকা চুরি করছে ৷ তাই দেব হল সেতু চোর। কোনওদিন আপনারা শুনেছেন যে সেতু পারাপারে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে 5 টাকা করে দিতে হয়, অ্যাম্বুলেন্সকে টাকা দিতে হয়? এই রাজ্যে এবং এই জায়গায় এসে শুনবেন এরকম ঘটনা। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে কিন্তু ওনার দেখা নেই।"
হিরণ বালি খাদান নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, "এই টেবাগেড়িয়া এলাকায় দেবের নির্দেশেই বালি খাদান চলে। বালি খাদান থেকে টাকা তুলে ভাইপোর সঙ্গে কন্টেস্ট হয়। আর আজ আমি আসব জেনেই ওরা মেদিনীপুর এনিকেট বাঁধ থেকে জল ছেড়ে দেয় যাতে বালি খাদানগুলো বুজে যায় আর আমি দেখতে না পাই৷ যাতে কেন্দ্রীয় কমিটি এসে তদন্ত না করতে পারে।"
এর পাশাপাশি ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিরণ আরও অভিযোগ করেন, এই অস্থায়ী সেতুতে সাধারণ মানুষের পারাপার করার জন্য অবৈধভাবে টাকা নেওয়া হচ্ছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, "দু'মাসের মধ্যে আমি সাংসদ হয়ে এলে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের পাশাপাশি এই টেবাগেড়িয়ায় ব্রিজ করে দেব।" এরপর দেবের ফ্যান ফলোয়ার এবং সমর্থক নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, "দেবের সমর্থকরা বেশিরভাগই বাংলা দেশের মাইনরিটি। তাই তারা এই বিষয়টা ঠিক জানেন না। তাই সেই সব দেব ফ্যানদের বলব, একবার এসে দেখে যেতে এই ব্রিজটার অবস্থা।"
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে হিরণ বলেন,"বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অনেক কাজই করেছেন৷ আর আমাদের এখানে মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের 'জয় বাংলা' স্লোগান চুরি করে নিয়ে এসে বলছেন। আমি বাংলাদেশের ভাইদের বলব, তোমরা একবার তোমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী করে দেখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তারপর দেখবেন, বাংলাদেশের নদী-খাল-বিল, মাছ, জল, বালির টাকা সব লুট করে নেবে। সবই কালীঘাটে এসে ঢুকবে। তখন তোমরা বুঝবে, কী ভুল করেছো"! প্রসঙ্গত, এ দিন ঘণ্টাদু'য়েক অবস্থান বিক্ষোভ করার পর হিরণ চট্টোপাধ্যায় সোজা বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে চলে যান। সেখানেও তিনি বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ দেখান।
আরও পড়ুন:
ঘাটালে হিরণের হয়ে প্রচারে শুভেন্দুর মিছিল, দেখা গেল সন্দেশখালির পোস্টার
প্রচারে জমজমাট ঘাটাল, দেবের হাসির উত্তরে হিরণের 'তোমার দেখা নাই রে'