কলকাতা, 24 ফেব্রুয়ারি: রোগী পরিষেবায় এগিয়ে শহর নয়, জেলার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলি ৷ সমীক্ষায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে ৷ বাড়ির ঢিল ছোড়া দূরত্বে সরকারি হাসপাতাল থাকলেও সেখানে চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে না ৷ অতঃপর ভরসা সেই কলকাতা ৷ তাই এবার সমীক্ষা চালাল খোদ স্বাস্থ্য দফতর ৷
প্রত্যেক চিকিৎসক সারা মাসে কত রোগী দেখছেন, কতগুলি অস্ত্রোপচার করছেন, প্রসবকালে কতজন মা এবং প্রসবের পর কতজন শিশুর মৃত্যু হচ্ছে, কত রোগী রেফার হচ্ছেন, ক'জন চিকিৎসক স্বেচ্ছায় ছুটি নিয়ে চলে যাচ্ছেন, কোন হাসপাতালে ক'টি এক্স-রে-ইউএসজি হচ্ছে, কত রোগী ভর্তি থাকছে- এমন 20টি সূচকের (কেপিআই বা কি পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর) ভিত্তিতে বিচার করে পারফরম্যান্স রিপোর্ট তৈরি করেছে রাজ্য ৷ তবে সেই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, কলকাতার তথাকথিত সেরা সরকারি হাসপাতালগুলিকে টেক্কা দিচ্ছে জেলা ৷
সমীক্ষায় রাজ্যের শ্রেষ্ঠ পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ- বাঁকুড়া সম্মিলনী, পিজি, মালদা, বারাসত এবং জলপাইগুড়ি ৷ অর্থাৎ সেরার তালিকায় জেলারই চারটি হাসপাতাল ৷ আর কলকাতার মাত্র একটি ৷ অন্যদিকে পিছিয়ে পড়া পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজ কোনগুলি ? স্বাস্থ্যদফতরের পর্যবেক্ষণ, কেপিআই পারফরম্যান্সের বিচারে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, রামপুরহাট, রায়গঞ্জ, কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ এবং মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে ৷ জেলা হাসপাতালগুলির মধ্যে শ্রেষ্ঠ হয়েছে টালিগঞ্জের এমআরবাঙুর তথা দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা হাসপাতাল ৷
ইন্ডিয়ান পাবলিক হেল্থ স্ট্যান্ডার্স অনুযায়ী প্রত্যেক সার্জেনের সপ্তাহে কমপক্ষে 6টি বড় অস্ত্রোপচার করার কথা, মাসে 24 টি ৷ এক্ষেত্রে কলকাতার হাসপাতালগুলিকে কার্যত বলে বলে গোল দিয়েছে জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলি ৷ সেরা পাঁচের মধ্যে তিন নম্বরে পিজি থাকলেও সার্জেন পিছু অস্ত্রোপচারের সংখ্যায় অনেকটাই এগিয়ে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ৷ সেখানে সার্জেন পিছু মাসে 76টি বড় অস্ত্রোপচার হচ্ছে ৷ সেই জায়গায় পিজিতে 46, ন্যাশনালে 47, বাঁকুড়ায় 48টি অস্ত্রোপচার হচ্ছে ৷
প্রত্যেক চিকিৎসকের আউটডোরে মাসে রোগী দেখার ক্ষেত্রেও কলকাতাকে টেক্কা দিয়েছে জেলা ৷ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে 2 হাজার 221, বারাসত 2 হাজার 100, পিজিতে 1 হাজার 200 টি থাকলেও এক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ৷ সেখানে একেকজন চিকিৎসক মাসে প্রায় 2 হাজার 500 জন রোগী দেখছেন ৷
স্বাস্থ্যভবনের এক শীর্ষকর্তা দু'টি মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন ৷ সেগুলি কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ৷ তিনি বলেন, "নতুন চালু হওয়া মেডিক্যাল কলেজগুলি বলতে পারে, তাদের এটা নেই, সেটা নেই ৷ পরিকাঠামোগত খামতি আছে ৷ কিন্তু এই দু'টি হাসপাতাল তো অনেক পুরনো ৷ সেখানে এমন কেন হবে !"
আরও পড়ুন: