ETV Bharat / state

কাটমানিতে 'না', কন্যাশ্রী প্রকল্পে 'বিবাহিত' হয়ে গেলেন একাদশের ছাত্রী - Kanyashree Prakalpa

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 10, 2024, 10:04 PM IST

West Bengal Kanyashree Prakalpa: কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা থেকে বঞ্চিত একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ৷ প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ ৷ তদন্তের আর্জি অভিযোগকারী ছাত্রীর ৷

West Bengal Kanyashree Prakalpa 2024
কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে নাম মুছল একাদশের পড়ুয়ার (ইটিভি ভারত)

মালদা, 10 জুলাই: বিয়ের কবুলনামাই পড়ল না, অথচ প্রশাসনের খাতায় বিবাহিতা ছাত্রী ৷ এমনই ঘটনা ঘটেছে রতুয়ার এক ছাত্রীর সঙ্গে ৷ কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পেতে নিয়ম মেনে আবেদন জানিয়ছিল সে ৷ অভিযোগ, প্রকল্পের তালিকায় নাম তুলতে তার কাছে নাকি কাটমানি চান এক সরকারি কর্মী ৷ সেই টাকা দিতে না-পারায় ছাত্রীকে সরকারি খাতায় বিবাহিতা বলে উল্লেখ করে দিলেন দায়িত্বে থাকা সরকারী কর্মী ৷ বছর দেড়েক ধরে ব্লক আর পঞ্চায়েত দফতরে ঘুরে ঘুরে স্কুল ছাত্রী শেষ পর্যন্ত বিডিও'র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন ৷

কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে (ইটিভি ভারত)

অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন বিডিও ৷ জানিয়েছেন, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে ৷ ছাত্রী সুলতানা পারভিন রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের চাঁদমণি 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোমপাল গ্রামের বাসিন্দা ৷ বর্তমানে সে স্থানীয় বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার একাদশের ছাত্রী ৷ বাবা রবিউল ইসলাম পেশায় শ্রমিক ৷ সুলতানার দাবি, "দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় আমি কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পেতে K2 ফর্ম জমা করি ৷ আমার বান্ধবীরাও ওই ফর্ম জমা দিয়েছিল ৷ ওদের সবার হয়ে গেলেও আমার হয়নি ৷ আমি গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে গিয়ে এই কাজে নিযুক্ত শান্তনু রায় নামে এক ব্যক্তিকে গোটা ঘটনাটি জানাই ৷ তিনি আমার কাছে টাকা দাবি করেন ৷ আমি সেই টাকা দিইনি ৷"

পড়ুয়া আরও বলেন, "এরপর প্রায় দেড় বছর ধরে তাঁর কাছে আমি মাঝেমধ্যেই যাচ্ছি ৷ এতদিন ধরে তিনি আমাকে এটা সেটা করে ফিরিয়ে দিচ্ছেন ৷ পঞ্চায়েত থেকে ব্লকে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে, ব্লক থেকে পঞ্চায়েতে ৷ শেষ পর্যন্ত আমার মামা ব্লকে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে, আমাকে বিবাহিত দেখিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ব্লকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে ৷ অথচ আমি বিয়ে করিনি ৷ এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছি ৷ আমি চাই, বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করা হোক যাতে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পাই ৷"

ছাত্রীর বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, "দশম শ্রেণিতে থাকার সময় আমার মেয়ে কন্যাশ্রীর ফর্ম জমা করেছিল ৷ কিন্তু সেই প্রকল্পে তার নাম ওঠেনি ৷ মেয়ে প্রথমে পঞ্চায়েতের সহায়ক শান্তনু রায় নাম এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ ব্লক অফিস থেকে মেয়েকে পঞ্চায়েত দফতরে পাঠিয়ে দেয় ৷ এভাবে দেড় বছর পেরিয়ে যায় ৷ এদিকে ব্লক অফিসে আমার এক ভাই খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে, মেয়েকে বিবাহিত দেখিয়ে ওর নাম কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে মুছে ফেলা হয়েছে ৷ আমরা এই ঘটনার তদন্ত চাই ৷"

বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আনওয়ারুল হক জানান, মেয়েটি আমার কাছেও এসেছিল ৷ ঘটনাটি আমি জানি ৷ ওর কথা শুনে আমরা স্কুলের তরফে ওর ফর্ম খতিয়ে দেখি ৷ আমরা ছাত্রীর K2 ফর্ম অনুমোদন করে পঞ্চায়েতে পাঠিয়ে দিয়েছি ৷ পঞ্চায়েতই কোনও ছাত্রীর ফর্ম দেখে সবকিছু তদন্ত করে ৷ আমি পঞ্চায়েতের সহায়ক শান্তনু রায়কে মেয়েটির বিষয়ে জানাই ৷ কেন ওকে বিবাহিত দেখানো হয়েছে জানতে চাই ৷ পড়ুয়া যাতে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পায় তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য তাঁকে আর্জি জানিয়েছে ৷

যদিও এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সহায়ক শান্তনু রায় ৷ তবে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বিডিও রাকেশ টোপ্পো জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ৷ অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হলে শান্তনু রায়ের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ করা হবে ৷

মালদা, 10 জুলাই: বিয়ের কবুলনামাই পড়ল না, অথচ প্রশাসনের খাতায় বিবাহিতা ছাত্রী ৷ এমনই ঘটনা ঘটেছে রতুয়ার এক ছাত্রীর সঙ্গে ৷ কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পেতে নিয়ম মেনে আবেদন জানিয়ছিল সে ৷ অভিযোগ, প্রকল্পের তালিকায় নাম তুলতে তার কাছে নাকি কাটমানি চান এক সরকারি কর্মী ৷ সেই টাকা দিতে না-পারায় ছাত্রীকে সরকারি খাতায় বিবাহিতা বলে উল্লেখ করে দিলেন দায়িত্বে থাকা সরকারী কর্মী ৷ বছর দেড়েক ধরে ব্লক আর পঞ্চায়েত দফতরে ঘুরে ঘুরে স্কুল ছাত্রী শেষ পর্যন্ত বিডিও'র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন ৷

কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে (ইটিভি ভারত)

অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন বিডিও ৷ জানিয়েছেন, অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে ৷ ছাত্রী সুলতানা পারভিন রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের চাঁদমণি 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোমপাল গ্রামের বাসিন্দা ৷ বর্তমানে সে স্থানীয় বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার একাদশের ছাত্রী ৷ বাবা রবিউল ইসলাম পেশায় শ্রমিক ৷ সুলতানার দাবি, "দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় আমি কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পেতে K2 ফর্ম জমা করি ৷ আমার বান্ধবীরাও ওই ফর্ম জমা দিয়েছিল ৷ ওদের সবার হয়ে গেলেও আমার হয়নি ৷ আমি গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে গিয়ে এই কাজে নিযুক্ত শান্তনু রায় নামে এক ব্যক্তিকে গোটা ঘটনাটি জানাই ৷ তিনি আমার কাছে টাকা দাবি করেন ৷ আমি সেই টাকা দিইনি ৷"

পড়ুয়া আরও বলেন, "এরপর প্রায় দেড় বছর ধরে তাঁর কাছে আমি মাঝেমধ্যেই যাচ্ছি ৷ এতদিন ধরে তিনি আমাকে এটা সেটা করে ফিরিয়ে দিচ্ছেন ৷ পঞ্চায়েত থেকে ব্লকে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে, ব্লক থেকে পঞ্চায়েতে ৷ শেষ পর্যন্ত আমার মামা ব্লকে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে, আমাকে বিবাহিত দেখিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ব্লকে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে ৷ অথচ আমি বিয়ে করিনি ৷ এখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ছি ৷ আমি চাই, বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করা হোক যাতে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পাই ৷"

ছাত্রীর বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, "দশম শ্রেণিতে থাকার সময় আমার মেয়ে কন্যাশ্রীর ফর্ম জমা করেছিল ৷ কিন্তু সেই প্রকল্পে তার নাম ওঠেনি ৷ মেয়ে প্রথমে পঞ্চায়েতের সহায়ক শান্তনু রায় নাম এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন ৷ ব্লক অফিস থেকে মেয়েকে পঞ্চায়েত দফতরে পাঠিয়ে দেয় ৷ এভাবে দেড় বছর পেরিয়ে যায় ৷ এদিকে ব্লক অফিসে আমার এক ভাই খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে, মেয়েকে বিবাহিত দেখিয়ে ওর নাম কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে মুছে ফেলা হয়েছে ৷ আমরা এই ঘটনার তদন্ত চাই ৷"

বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আনওয়ারুল হক জানান, মেয়েটি আমার কাছেও এসেছিল ৷ ঘটনাটি আমি জানি ৷ ওর কথা শুনে আমরা স্কুলের তরফে ওর ফর্ম খতিয়ে দেখি ৷ আমরা ছাত্রীর K2 ফর্ম অনুমোদন করে পঞ্চায়েতে পাঠিয়ে দিয়েছি ৷ পঞ্চায়েতই কোনও ছাত্রীর ফর্ম দেখে সবকিছু তদন্ত করে ৷ আমি পঞ্চায়েতের সহায়ক শান্তনু রায়কে মেয়েটির বিষয়ে জানাই ৷ কেন ওকে বিবাহিত দেখানো হয়েছে জানতে চাই ৷ পড়ুয়া যাতে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পায় তার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য তাঁকে আর্জি জানিয়েছে ৷

যদিও এই বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নন অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সহায়ক শান্তনু রায় ৷ তবে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বিডিও রাকেশ টোপ্পো জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ৷ অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হলে শান্তনু রায়ের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ করা হবে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.