রানাঘাট, 21 নভেম্বর: বিরল মারণ রোগে আক্রান্ত ফুটফুটে এক শিশুকন্যা ৷ তাঁকে বাঁচাতে খরচ প্রায় 16 কোটি টাকা ৷ মেয়ের জীবন ফিরে পেতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্য চান অসহায় বাবা-মা ।
নদিয়ার রানাঘাটের বাসিন্দা শুভঙ্কর দাস ও লক্ষ্মী দাসের একরত্তি কন্যার শরীরে বাসা বেঁধেছে বিরল রোগ ৷ 10 মাসের শিশুটি স্পাইনাল মাস্কিউলার অ্যাট্রফি টাইপ 1-এ আক্রান্ত ৷ 10 থেকে 15 হাজার শিশুর মধ্যে একজন আক্রান্ত হয় এই বিরল রোগে । 6 মাস বয়স থেকেই সমস্যা দেখা দিয়েছিল ৷ এরপর কলকাতা ও দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে শুভঙ্কর দাস জানতে পারেন যে, তাঁর কন্যা মারণ রোগে আক্রান্ত ৷ যার চিকিৎসার খরচ তাঁর ধারণার অতীত ৷
তিনি জানতে পারেন, আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল নোভার্টিজ নামে একটি কোম্পানি এই মারণ রোগের ইঞ্জেকশন তৈরি করে, যার মূল্য প্রায় 16 কোটি টাকা । চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনের ভিত্তিতে ওষুধটি ভারতে আমদানি করা যেতে পারে ৷ তবে সেখানেও রয়েছে সময়সীমা । দেড় বছর বয়সের মধ্যে শিশুটিকে এই মারণ রোগের ওষুধ বা ইঞ্জেকশন দিতে হবে, নইলে আর শেষ রক্ষা করা যাবে না ৷
একথা জানতে পেরে দিশাহীন বাবা-মা ক্রাউড ফান্ডিং শুরু করেছেন ৷ তবে 16 কোটি টাকা মুখের কথা নয় ৷ এই বিপুল অর্থ তাঁরা কীভাবে জোগার করবেন, তা ভেবেই কূল করতে পারছেন না ৷ তাই এবার তাঁরা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সাহায্যপ্রার্থী ৷ শিশুটির মা করজোড়ে আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ৷ যে কোনও উপায়ে সন্তানের জীবন ফিরে পেতে বদ্ধপরিকর তাঁরা ৷
উল্লেখ্য, দিনকয়েক আগেই প্রায় 18 কোটি টাকার ইঞ্জেকশন বিনামূল্যে পেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে পূর্ব মেদিনীপুরের এক শিশু ৷ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হয় চিকিৎসা ৷ সেও এই একই রোগে আক্রান্ত ছিল 6 মাস বয়স থেকে ৷ স্পাইনাল মাসকিউলার অ্যাট্রফি রোগের চিকিৎসা করাতে প্রয়োজন হয় এই ইঞ্জেকশনের । যার নাম জোলজেনসমা । যেটির দাম প্রায় 17.5 কোটি টাকা ।
ভারতে এই থেরাপি আগেও হয়েছে । কারণ নোভার্টিজের গ্লোবাল ম্যানেজ অ্যাক্সেস প্রোগ্রামের মাধ্যমে এই থেরাপি দেওয়া হয় । কিন্তু 31 জুলাইয়ের পর তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে । শেষবার বিনামূল্যে থেরাপি নথিভুক্ত ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের শিশুটির নামে । ফলে ওই শিশুটিই শেষবার এই রোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারে । আর এখন রানাঘাটের দম্পতি সেই একই রোগের থেকে শিশুকে রক্ষা করার অর্থ জোগার করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন ৷ তাঁদের সন্তান সুস্থ হয়ে উঠুক, এটাই প্রার্থনা ৷