কলকাতা, 24 নভেম্বর: আরজি কর আন্দোলনের নামে অনৈতিকভাবে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের প্রাক্তন পড়ুয়াদের একাংশের বিরুদ্ধে ৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সেই অভিযোগ খারিজ করে দিলেন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তনীরা। পাশাপাশি এদিন নিজেদের অবস্থানও স্পষ্ট করলেন তাঁরা ৷
এ প্রসঙ্গে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তনী তথা চিকিৎসক তাপস ফ্রান্সিস বিশ্বাস বলেন, "তথাকথিত থ্রেট কালচারে যাঁরা জড়িত তাঁদের আমরা সন্দীপ বাহিনী বলি । তাঁরা এখন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রক্তনীদের জুনিয়র ফ্রন্টের বি-টিম বলছেন। তাঁরা বলছেন, আমার অনৈতিকভাবে টাকা তুলেছি মানুষের থেকে । কিন্তু এটা তাঁরা জানেন না আমাদের নিজেদের মধ্যে থেকেই ওই টাকা তুলেছি । আমার কাছে সব প্রমাণ আছে । সব প্রাক্তনীদের থেকে টাকা তোলা হয়েছে ।"
আরজি কর আন্দোলনের নামে অনৈতিকভাবে টাকা তোলার অভিযোগ তুলেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন । সেই অভিযোগের তির রয়েছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি টাকা তোলার ঘটনায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তনীদের একাংশও দায়ী বলে তাদের অভিযোগ । কীসের জন্য ওই টাকা তোলা হয়েছিল এদিন তারই জবাব দিলেন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তনী পড়ুয়া তথা সিনিয়র চিকিৎসকরা।
চিকিৎসক তাপস ফ্রান্সিস বিশ্বাসের কথায়, "এই সন্দীপ বাহিনী নাকি গরিবদের সেবা করতে চেয়েছিল। কিন্তু আদতে তা নয় । ওদের আশিস পাণ্ডে 18 মাসে 1টা দিনও কাজ করেননি । নির্জন বাগচী 15 মিনিটও কাজ করেননি 2 মাসে। হোস্টেলের 14 নম্বর ঘরে থাকতেন শরীফ হাসান। সেখানে এসি বসল। কারণ ওরা সবাই সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ । ওঁরা তোলাবাজি করেছেন । ওঁরা কলেজের অনুষ্ঠানের নাম করে টাকা তুলতেন। এর কোনও হিসেব নেই ।"
এর পাশাপশি টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তোলেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, গতবছর অগস্ট মাসে আরজি কর হাসপাতালের কয়েকজন প্রাক্তনীর ঘরে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকী এই সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, প্রাক্তনীদের গায়ে হাত তোলারও । টালা থানায় এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল । যদিও সেই সময় ওসি ছিলেন সৈকত নিয়োগী । পরে মামলায় অভিযুক্তদের সমন পাঠানোর সময় ওসির দায়িত্বভার সামলাচ্ছিলেন অভিজিৎ মণ্ডল ৷
জানা গিয়েছে, মারধরের মামলায় প্রাক্তনীদের সংগঠনের তরফে সাক্ষী হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছিল চিকিৎসক তড়িৎ চট্টোপাধ্যায়ের । কিন্তু তাঁর সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি বলে এ দিন অভিযোগ তুলেছেন সিনিয়র চিকিৎসকরা ৷ তাঁদের দাবি, অন্য কাউকে দিয়ে ভুয়ো সাক্ষী দেওয়ানো হয়েছে । সিনিয়র চিকিৎসক তাপস ফ্রান্সিস বিশ্বাস এদিন সাংবাদিক বৈঠকের মাঝেই তড়িৎ চট্টোপাধ্যায়কে ফোনে ধরেন ৷ ফোনে তাঁর বক্তব্য ছিল, "আমায় কখনও সাক্ষ্য দিতে ডাকা হয়নি । আমার বয়ান নেওয়া হয়নি ।" ওই মামলায় শিয়ালদা আদালতে অপর পক্ষের আইনজীবী বলেছিলেন, তড়িৎ চট্টোপাধ্যায় সাক্ষীতে কিছু পাওয়া যায়নি । এমনটাই জানান তাপস ফ্রান্সিস বিশ্বাস ৷