মালদা, 25 জুলাই: ভরদুপুরে ছুরি চলল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ অঙ্ক বিভাগের এক ছাত্রীকে প্রকাশ্যেই গলায় ছুরির কোপ বসিয়ে দিলেন যুবক ৷ জানা গিয়েছে, এমন হামলার নেপথ্যে রয়েছে প্রেমঘটিত কারণ ৷ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে ৷ সঙ্গে সঙ্গে অন্য পড়ুয়ারা ওই যুবকের দিকে ছুটে যান ৷ তখন একই ছুরি দিয়ে নিজের গলার নলিও কাটার চেষ্টা করেন যুবক ৷ দ্রুত তাঁদের মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷
খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছন উপাচার্য-সহ অন্য পদস্থ আধিকারিকরাও ৷ এই মুহূর্তে ওই যুবক ও যুবতীর অস্ত্রোপচার হচ্ছে বলে খবর ৷ হাসপাতালে রয়েছেন ইংরেজবাজার থানার পুলিশও ৷ সূত্রের খবর, এই শিহরণ জাগানো ঘটনাটি ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনের দোতলায় অঙ্কের বিভাগে ৷ ছাত্রীটি ওই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ৷ ঘটনার সময় ক্লাসে অধ্যাপক ছিলেন না বলেই জানা যাচ্ছে ৷
সে সময় ওই ক্লাসে ঢুকে পড়েন অলোক মণ্ডল ৷ 27 বছরের অলোকের বাড়ি রতুয়া 2 নম্বর ব্লকের সম্বলপুর গ্রামে ৷ 2019 সালে পদার্থবিদ্যা বিভাগে স্নাতকোত্তর স্তরের পাঠ শেষ করেছেন তিনি ৷ ক্লাসের কয়েকজন পড়ুয়া জানিয়েছেন, ক্লাসে ঢুকেই অলোক সোজা চলে যায় ওই ছাত্রীটির কাছে ৷ দু’চারটি কথা বলার পরই তিনি পকেট থেকে ধারালো একটি ছুরি বের করে ছাত্রীটির গলায় কোপ মারেন ৷ ওই যুবতীর গলা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরতে শুরু করে ৷ তা দেখে অন্য পড়ুয়ারা বাধা দিতে গেলে অলোক তাঁদেরও ছুরি দেখিয়ে হুমকি দিতে শুরু করেন ৷
এদিকে রক্তে ভেসে যাচ্ছিলেন ওই ছাত্রী ৷ একসময় তিনি মেঝেতে পড়ে যান ৷ তা দেখে পড়ুয়ারা হুমকি উপেক্ষা করে অলোকের দিকে ছুটে যান ৷ পরিস্থিতি বেগতিক দেখে অলোক ওই ছুরি দিয়েই নিজের গলার নলি কেটে ফেলেন ৷ এই মুহূর্তে দু’জনেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় মালদা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ৷ রয়েছেন উপাচার্য পবিত্র চট্টোপাধ্যায় সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মী থেকে শুরু করে পড়ুয়ারাও ৷ এনিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি হননি উপাচার্য৷ মুখে কুলুপ পড়ুয়াদেরও ৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. রাজীব পুততুণ্ড বলেন, "এখনও আমরা বিষয়টি সম্পূর্ণ জানি না ৷ বিজ্ঞান ভবনে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক প্রাক্তন ছাত্র ছুরি দিয়ে বর্তমান ছাত্রীকে আঘাত করেছে ৷ সে নিজেও ছুরিকাহত হয়েছে ৷ তবে কী করে সে আহত হল, তা এখনও সঠিকভাবে বলতে পারব না ৷ আহত দু’জনকেই মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দু’জনকে বাঁচানো ৷ দু’জনেই আমাদের ছাত্রছাত্রী ৷ আমরা সবাই রয়েছি ৷ পরে আমরা সমস্ত ঘটনা খতিয়ে দেখব ৷"