কলকাতা, 13 অগস্ট: আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তাল কলকাতা ৷ অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও চরম শাস্তির দাবিতে অনড় চিকিৎসকরা । এবার এই ঘটনায় তাদের পাশে দাঁড়ালেন ইঞ্জিনিয়াররা ৷ সোমবার আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে মহিলা ইঞ্জিনিয়ার কর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে সরব হলেন কলকাতা কর্পোরেশনের ইঞ্জিনিয়াররা ৷ এই প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছিল কলকাতা কর্পোরেশন ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড অ্যালায়েড সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন ৷
ইঞ্জিনিয়ারদের এই সংগঠন মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে একটি চিঠি দেন । তাতে তাঁরা দাবি করেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনার পর কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কর্পোরেশনের বিভিন্ন ভবনে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে ৷ এখনও বিভিন্ন ভবনে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই ৷ সেখানে দ্রুত ক্যামেরা লাগাতে হবে ৷ মহিলা নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে ৷ কারণ মহিলা আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা এমনকি রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয় । পাশাপশি ছুটির দিনগুলো যাতে মহিলা কর্মীদের কাজ না-দেওয়া হয় সেই বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে ।
এদিন মহিলা বরো ইঞ্জিনিয়ার নিভা চৌধুরী বলেন, "আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা আমাদের কাছে বেদনার ও ভয়ের ৷ আমরা কলকাতা কর্পোরেশনের মহিলা কর্মীরা অনেক সময় নিরাপত্তার অভাববোধ করি । ছুটির দিনে আমাদের রস্টার ডিউটিতে থাকতে হয় ৷ যেখানে ডিউটি করে অনেক জায়গায় সিসিটিভি থাকে না ৷ পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তা কর্মী থাকার দরকার ৷ এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি ৷"
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত পৌর ভবনগুলো আছে তাতে কর্মরত পৌরকর্মীর সংখ্যা 20 হাজারেরও বেশি । এদের মধ্যে মহিলা কর্মীর সংখ্যা 5-6 হাজার ৷ কেন্দ্রীয় ভবন ও বরো অফিস-সহ বিভিন্ন বিভাগীয় অফিস আছে ৷ আছে ওয়ার্ড অফিসও ৷ সব জায়গায় নেই সিসিটিভি ক্যামেরা । কলকাতা কর্পোরেশনের কেন্দ্রীয় ভবনে বর্তমানে 170-200টি সিসি ক্যামেরা আছে ৷
এদিন ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ইঞ্জিনিয়াররা কেন্দ্রীয় পৌরভবনে বিক্ষোভ মিছিল করেন ৷ নীচের লন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগ ঘরে এই প্রতিবাদ মিছিল যায় । স্লোগান মুখরিত মিছিলে আরজি কর হাসপাতালে নৃশংস ঘটনার বিচারের দাবি করা হয় ৷ পাশাপাশি কলকাতা কর্পোরেশনে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার থেকে পৌর মহিলা কর্মী তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি তোলা হয় ৷
এই বিষয়ে কলকাতা কর্পোরেশন ইঞ্জিনিয়ারস অ্যান্ড অ্যালায়েড সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মানস সিনহা বলেন, "বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের কাছ থেকে শুরু করে বর্ষার সময় বা পুজোর আগে একাধিক কাজে মহিলা ইঞ্জিনিয়ার আধিকারিক কর্মীদের বাড়তি সময় কাজ করতে হয় । দুপুর থেকে সন্ধ্যা এমন কি রাত পর্যন্ত তাদের কর্মক্ষেত্রে থাকতে হয় । অনেক জায়গাতেই দেখা যায় যেখানে মহিলা কর্মীরা কাজ করছেন সেখানে পর্যাপ্ত সিসিটিভি নজরদারি নেই । অবিলম্বে পর্যাপ্ত সিসিটিভি লাগাতে হবে ও তা সব সময় সক্রিয় রাখতে হবে । ছুটির দিনে মহিলা কর্মীদের কাজে আনা যাবে না । মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মহিলা নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বাড়াতে হবে সমস্ত ভবনে ।"
'আগে ভাইপোকে এনকাউন্টার করা উচিত', আরজি কর নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া বিকাশ ভট্টাচার্যের