কলকাতা, 18 মার্চ: লোকসভা নির্বাচনের আগে পুলিশ মহলে বড়সড় রদবদল ৷ সোমবার নির্বাচন কমিশনের তরফে নির্দেশিকা জারি করে সরানো হল রাজ্য পুলিশের ডিজিপি রাজীব কুমারকে ৷ পাশাপাশি, গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডের স্বরাষ্ট্রসচিবকেও অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে। ভোটের আগে এই ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ পাশাপাশি, মিজোরাম ও হিমাচল প্রদেশের সাধারণ প্রশাসনিক বিভাগের সচিবকেও অপসারণ করা হয়েছে ৷
রাজীবকে সরানোর সময়েই কমিশনের তরফে রাজ্যের কাছে পরবর্তী পুলিশ প্রধান হিসাবে তারা কাকে চায় তা জানাতে বলা হয় ৷ প্রশাসনিক রীতি মেনে পরবর্তীর ডিজি হিসাবে বেছে নিতে কয়েকজনের নাম চেয়ে পাঠায় কমিশন ৷ নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে যে, নতুন ডিজি নিয়োগ না-হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী যিনি সিনিয়র অফিসার রয়েছেন, তিনি ডিজি'র দায়িত্বভার সামলাবেন ৷ অর্থাৎ রাজীব কুমারের পরে যিনি রয়েছেন তিনি হলেন বিবেক সহায়। সূত্রের খবর, নবান্নের তরফে ইতিমধ্যেই তিন জনের নাম পাঠানো হয়েছে কমিশনে ৷ তাঁরা হলেন রাজেশ কুমার, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ও রণবীর কুমার ৷ প্রশাসনিক মহলের একটা বড় অংশের দাবি, কর্মজীবনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাকি দুজনের থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রয়েছেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ৷
গত কয়েক বছরে একাধিক বড় নির্বাচনের আগে রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন বড় বড় পদে রদবদল ঘটিয়েছে কমিশন ৷ তা নিয়ে কমিশনের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের তাবড় নেতারা ৷ বারবার তৃণমূলের তরফে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব দেওয়া হয়েছে ৷ এবারও কি তেমন কিছু হয়েছে? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তৃণমল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, "শুধু দুটো উত্তর দেব। বিজেপি বিভিন্ন কমিশনকে দলদাসে পরিণত করেছে। নির্বাচন কমিশন দখল করতে চাইছে। বিজেপি 100টি বদল করলেও সাধারণ মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই আছে । আমরা 42টি আসনে জিততে চাই। রাজ্য বিজেপির সুপারিশে কমিশন কাউকে সরিয়ে দিলেও তাতে ফলাফল প্রভাবিত হবে না। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমরা 30 থেকে 35টি আসন পাওয়ার জায়গায় আছি। সেটাকে 37-38 আসনে নিয়ে যেতে চাই।
গত বছর ডিসেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য পুলিশের নয়া ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) হিসাবে নিয়োগ করেছিলেন রাজীব কুমারকে। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি ৷ আইপিএস অফিসারকে রাজ্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদে মুখ্যমন্ত্রীর নিয়োগ নিয়ে বিরোধীরা সরব হয়েছিলেন ৷ লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে বাংলায় পা রেখেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দল ৷ সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তাঁরা ৷ তারপর নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত রাজ্য রাজনীতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলা বাহুল্য ৷ ডিসেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার তিনমাসের মধ্যেই সরানো হল রাজীব কুমারকে ৷
বিরোধীদের পক্ষ থেকে বার বার রাজীব কুমার-সহ একাধিক আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এই সকল আধিকারিকরা রাজ্যের শাসক দলের হয়ে কাজ করছেন। এই সকল আধিকারিকরা যদি নির্বাচনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাহলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
1. পদত্যাগ তেলেঙ্গানার রাজ্যপালের, তামিলনাড়ুতে বিজেপির হয়ে লোকসভায় লড়ার সম্ভাবনা
2. ডেডলাইন শুক্রবার, একদিন আগেই ইলেক্টোরাল বন্ডের তথ্য প্রকাশ্যে আনল নির্বাচন কমিশন
3. 4 বিধানসভা ব্যয় সংবেদনশীল হিসেবে ঘোষণা কমিশনের, মোতায়েন বিশেষ সার্ভেলিয়েন্স টিম