কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: অন্তঃসত্ত্বা যুবতীর গর্ভপাতের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য । কিন্তু সেই নির্দেশ না মেনেই তড়িঘড়ি কেন গর্ভপাত করানো হল ? চিকিৎসকদের থেকে এ কথা জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি । কলকাতার বাঙুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা এই বিষয়ে শুক্রবার আদালতে জানালেন, কেন তাঁরা দ্রুত গর্ভপাত করাতে বাধ্য হয়েছিলেন ।
এ দিন চিকিৎসকরা রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছেন, মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তার পর সেই রিপোর্ট দেখে যুবতীর গর্ভপাত করাতে গেলে অনেক দেরি হয়ে যেত । যে পরিমাণ ব্লিডিং হচ্ছিল, তাতে তাঁকে বাঁচানো যেত না । বিচারপতি চিকিৎসকদের এই রিপোর্ট দেখে জানান, "চিকিৎসকরা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা সঠিক । এই মামলার যে উদ্দেশ্য তা পূরণ হয়েছে । চিকিৎসকরা কোনও ভুল করেননি । তাই মামলার নিস্পত্তি করে দেওয়া হচ্ছে ।"
গর্ভপাত করাতে চেয়ে প্রথমে নিম্ন আদালতে আবেদন করেছিলেন ওই যুবতী । কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে ক্ষমতা না থাকায় তিনি উচ্চ আদালতে আবেদন জানাতে নির্দেশ দেন ৷ এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন 23 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ৷ বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের বেঞ্চে শুনানি হয় মামলাটির । আদালত তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দুই সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে নির্দেশ দেয় । বিচারপতি তাঁর নির্দেশে বলেন, মেডিক্যাল বোর্ড যুবতীর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে গর্ভপাত করা যাবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে । 48 ঘণ্টার মধ্যে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত । সেই বোর্ডের রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার কথা ছিল । কিন্তু তড়িঘড়ি গর্ভপাত করাতে হয় ওই যুবতীর । এতেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি আদালতের নির্দেশ কেন মানা হয়নি তা জানতে চেয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন ।
আদালত সুত্রে জানা যাচ্ছে, 2018 সালে মেয়েটির সঙ্গে একটি যুবকের পরিচয় হয় । পরিচয়ের পরই তাঁরা একে অপরের খুব ভালো বন্ধু হয়ে যায় কিছুদিনের মধ্যে । কিছুদিনের মধ্যেই তাঁরা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ৷ ছেলেটি যুবতীকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে এবং তরুণী তাতে সম্মতিও দিয়েছিলেন 2023 সালের 28 জুলাই । তারপর থেকে লাগাতার তাঁরা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ৷ ফলস্বরূপ ওই যুবতীণী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন । কিন্তু তারপরেই ছেলেটি তরুণীর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক অস্বীকার করেন এবং বিয়ে করতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ ।
এই বিষয়ে মামলাকারীর আইনজীবী গৌতম দে জানিয়েছিলেন, কলকাতার গল্ফগ্রিন এলাকার 27 বছরের ওই যুবতীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করে এলাকারই ওই যুবক । 21 সপ্তাহের মাথায় চলতি বছরের গত 18 জানুয়ারি যুবতী জানতে পারেন যে তিনি গর্ভবতী ।
আরও পড়ুন: