ETV Bharat / state

গম্ভীরার গানে উজ্জীবিত যৌনপল্লির খুদেরা, শিক্ষাকর্তার উদ্যোগে যাবে স্কুল - RED LIGHT AREA CHILDREN

মালদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের উদ্যোগে নিষিদ্ধপল্লির বাচ্চাদের স্কুলে যেতে উৎসাহ প্রদান ৷ বিশেষ ওই ক্যাম্পে হাজির হলেন একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা ৷

Red Light Area Children
মালদা শহরে যৌনপল্লির বাচ্চাদের স্কুলমুখী করতে উদ্যোগ জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের ৷ (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jan 6, 2025, 3:04 PM IST

মালদা, 6 জানুয়ারি: কথা রেখেছেন জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক ৷ তাঁর উদ্যোগে নিষিদ্ধপল্লির 12টি শিশু দু’চারদিনের মধ্যেই স্কুল যেতে শুরু করবে ৷ তার জন্য রবিবার মালদা শহরের হংসগিরি লেনে একটি শিবিরের আয়োজন করা হয় ৷ গম্ভীরার গানে সেখানকার ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করার উদ্যোগ নেওয়া হয় ৷ ওই শিবিরে মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক বাণীব্রত দাস তো বটেই, একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকারাও উপস্থিত হন ৷ স্কুল যাওয়ার সুযোগ পেয়ে ভীষণ খুশি ওই ছেলেমেয়েরা ৷ খুশি তাদের মায়েরাও ৷

রবিবার কুয়াশামাখা সকালে হংসগিরি লেনে শুরু হয় গম্ভীরা গান ৷ প্রত্যেকটি শিশুর শিক্ষার অধিকার সম্পর্কে গান বাঁধেন গম্ভীরা শিল্পীরা ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে ভিড় জমায় বাচ্চা-বুড়ো সকলে ৷ চলে আসেন বাচ্চাদের মায়েরাও ৷ কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হন ডিআই বাণীব্রত দাস, এআই জয়ন্ত সরকার এবং রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির, অক্রুরমণি করোনেশন স্কুল, বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৷

Red Light Area Children
যৌনপল্লির খুদেদের স্কুলমুখী করতে বিশেষ ক্যাম্প মালদা জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের ৷ (নিজস্ব ছবি)

তাঁরা একটি শিশুকে সেখানেই স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করেন ৷ বাকিদের ছেলেমেয়েদের ভর্তির জন্য নানাবিধ তথ্য সংগ্রহ করা হয় ৷ বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের তরফে আটটি বাচ্চার হাতে স্কুলের ব্যাগ, খাতা, কলম ইত্যাদি তুলে দেওয়া হয়েছে ৷

বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দীপশ্রী মজুমদার শিশুদের উদ্দেশে বলেন, "স্কুলে শুধু শিক্ষাই পাওয়া যায় না ৷ অনেক নতুন বন্ধুও হয় ৷ নিয়মিত স্কুল যাওয়া খুব আনন্দের ৷ তাই সবাইকেই স্কুলে যেতে হবে ৷ দেখবে, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও কেমন তোমাদের বন্ধু হয়ে যান ৷"

Red Light Area Children
গম্ভীরার গানে যৌনপল্লির বাচ্চাদের স্কুল যেতে উৎসাহ প্রদান ৷ (নিজস্ব ছবি)

জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক বাণীব্রত দাস বলেন, "1 জানুয়ারি থেকে মালদা জেলায় ছাত্র সপ্তাহ শুরু হয়েছে ৷ জেলার একটি বাচ্চাও যাতে স্কুল যাওয়া থেকে বাদ না-পড়ে, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য ৷ পিতৃ পরিচয় কখনও শিক্ষার অন্তরায় হতে পারে না ৷ বাবার পরিচয় না-থাকলেও বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করা যায় ৷ মায়েরা তা না-করলে সেটা একটা অপরাধ ৷ এখানে তিনটি বাচ্চাকে ইতিমধ্যে স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছে ৷ বাকিরা যাতে দু’চারদিনের মধ্যেই স্কুল যেতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷"

মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক কথা শুনে এটি বাচ্চা মেয়ে বলে ওঠে, "আমি আগামিকাল থেকেই স্কুলে যেতে চাই ৷ আপনারা ব্যবস্থা করে দিন ৷ আমি পড়াশোনা করব ৷ বড় হয়ে চাকরি করব ৷" পাশে দাঁড়ানো তার মায়ের চোখে তখন জল ৷ বলে উঠলেন, "আমাদের দুর্ভাগ্যের ছায়া যাতে সন্তানদের উপর না-পড়ে ৷ যত কষ্টই হোক, আমরা সবাই ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাব ৷ ওরা বড় হয়ে নিজেদের মতো করে বাঁচুক ৷ এটাই আমাদের একমাত্র চাওয়া ৷"

মালদা, 6 জানুয়ারি: কথা রেখেছেন জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক ৷ তাঁর উদ্যোগে নিষিদ্ধপল্লির 12টি শিশু দু’চারদিনের মধ্যেই স্কুল যেতে শুরু করবে ৷ তার জন্য রবিবার মালদা শহরের হংসগিরি লেনে একটি শিবিরের আয়োজন করা হয় ৷ গম্ভীরার গানে সেখানকার ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করার উদ্যোগ নেওয়া হয় ৷ ওই শিবিরে মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক বাণীব্রত দাস তো বটেই, একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষিকারাও উপস্থিত হন ৷ স্কুল যাওয়ার সুযোগ পেয়ে ভীষণ খুশি ওই ছেলেমেয়েরা ৷ খুশি তাদের মায়েরাও ৷

রবিবার কুয়াশামাখা সকালে হংসগিরি লেনে শুরু হয় গম্ভীরা গান ৷ প্রত্যেকটি শিশুর শিক্ষার অধিকার সম্পর্কে গান বাঁধেন গম্ভীরা শিল্পীরা ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে ভিড় জমায় বাচ্চা-বুড়ো সকলে ৷ চলে আসেন বাচ্চাদের মায়েরাও ৷ কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে উপস্থিত হন ডিআই বাণীব্রত দাস, এআই জয়ন্ত সরকার এবং রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির, অক্রুরমণি করোনেশন স্কুল, বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা ৷

Red Light Area Children
যৌনপল্লির খুদেদের স্কুলমুখী করতে বিশেষ ক্যাম্প মালদা জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের ৷ (নিজস্ব ছবি)

তাঁরা একটি শিশুকে সেখানেই স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করেন ৷ বাকিদের ছেলেমেয়েদের ভর্তির জন্য নানাবিধ তথ্য সংগ্রহ করা হয় ৷ বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের তরফে আটটি বাচ্চার হাতে স্কুলের ব্যাগ, খাতা, কলম ইত্যাদি তুলে দেওয়া হয়েছে ৷

বার্লো বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা দীপশ্রী মজুমদার শিশুদের উদ্দেশে বলেন, "স্কুলে শুধু শিক্ষাই পাওয়া যায় না ৷ অনেক নতুন বন্ধুও হয় ৷ নিয়মিত স্কুল যাওয়া খুব আনন্দের ৷ তাই সবাইকেই স্কুলে যেতে হবে ৷ দেখবে, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও কেমন তোমাদের বন্ধু হয়ে যান ৷"

Red Light Area Children
গম্ভীরার গানে যৌনপল্লির বাচ্চাদের স্কুল যেতে উৎসাহ প্রদান ৷ (নিজস্ব ছবি)

জেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক বাণীব্রত দাস বলেন, "1 জানুয়ারি থেকে মালদা জেলায় ছাত্র সপ্তাহ শুরু হয়েছে ৷ জেলার একটি বাচ্চাও যাতে স্কুল যাওয়া থেকে বাদ না-পড়ে, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য ৷ পিতৃ পরিচয় কখনও শিক্ষার অন্তরায় হতে পারে না ৷ বাবার পরিচয় না-থাকলেও বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করা যায় ৷ মায়েরা তা না-করলে সেটা একটা অপরাধ ৷ এখানে তিনটি বাচ্চাকে ইতিমধ্যে স্কুলে ভর্তি করানো হয়েছে ৷ বাকিরা যাতে দু’চারদিনের মধ্যেই স্কুল যেতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷"

মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক কথা শুনে এটি বাচ্চা মেয়ে বলে ওঠে, "আমি আগামিকাল থেকেই স্কুলে যেতে চাই ৷ আপনারা ব্যবস্থা করে দিন ৷ আমি পড়াশোনা করব ৷ বড় হয়ে চাকরি করব ৷" পাশে দাঁড়ানো তার মায়ের চোখে তখন জল ৷ বলে উঠলেন, "আমাদের দুর্ভাগ্যের ছায়া যাতে সন্তানদের উপর না-পড়ে ৷ যত কষ্টই হোক, আমরা সবাই ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাব ৷ ওরা বড় হয়ে নিজেদের মতো করে বাঁচুক ৷ এটাই আমাদের একমাত্র চাওয়া ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.