কলকাতা, 1 এপ্রিল: ইলেক্টোরাল বন্ডে সবচেয়ে বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে বিজেপি । তারপরেই আছে এই রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল । সিপিএমের দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই তথ্য সামনে এসেছে। যা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনার জেরে, কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি বেকায়কদায় পড়েছে বলেই দাবি সিপিএমের। যারা এই ইলেক্টোরাল বন্ডে একটা টাকাও নেয়নি বলে দাবি করে এবারের লোকসভা নির্বাচনে এই বিষয়টাকে ইস্যু করতে চায় সিপিএম।
এরপরই ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনও দিয়েছে বামেরা ৷ শুধু তাই নয়, সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম থেকে শুরু করে একাধিক বাম নেতা নিজের সামাজিক মাধ্যমে সেই বিজ্ঞাপন পোস্টও করেছেন। কী আছে সেই বিজ্ঞাপনে ? লেখা আর কাস্তে-হাতুড়ি-তারা আঁকা বিজ্ঞাপনে রুটি-রুজির কথা বলেছে সিপিএম। একইভাবে ইলেক্টোরাল বন্ডে টাকা পাওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে সতর্ক হওয়ার আহ্বানও করা হয়েছে। বিজ্ঞাপনে লেখা হয়েছে যে, "এটা একটা বিজ্ঞাপন/ টাকা দিয়ে ছাপানো যায়। ইলেক্টোরাল বন্ডে যাঁরা হাজার হাজার কোটি টাকা পেয়েছে, তারা এরকম অনেক ছাপবে। তাই, ভাড়া করা বিজ্ঞাপন ছেড়ে, রুটি-রুজি লড়াইয়ের সঙ্গে থাকুন।" সব শেষে লেখা হয়েছে, "হক রুটি-রুজি জনতাই পুঁজি ।"
এই বিষয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "ভয় পেয়েছে। ভয় থেকেই এই জাতীয় কাজ করছে সিপিএইএম। যাঁরা এক সময় মনে করত আমাদের কে হারাবে, তারাই এখন হারের ভয় পাচ্ছে। পরাজয়ের নিকটে বুঝেই এসব করছে।" এই ইলেক্টোরাল বন্ডে বিজেপির পরেই সবথেকে বেশি টাকা পেয়েছে তৃণমূল। তাঁদের মধ্যে শান্তনু সেন বলেন, "প্রথম বিজেপির বিজ্ঞাপন ছাপে গণশক্তি। দ্বিতীয়ত, নির্মলা সীতারমনের স্বামী বলেছেন, নির্বাচনী বন্ড পৃথিবীর সব থেকে বড় আর্থিক দুর্নীতি। তৃতীয়ত, আর্থিক দুর্নীতি বন্ধ করতে তৃণমূলই সব থেকে আগে বলেছিল স্টেট ফান্ডে নির্বাচন হোক।"
ইলেক্টোরাল বন্ডে প্রাপ্ত টাকার নিরিখে তৃতীয় স্থানে জাতীয় কংগ্রেস। তাদের প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, "ইলেক্টোরাল বন্ডে কোটি কোটি টাকা লুঠ করেছে বিজেপি। মোদির নেতৃত্বে স্লোগান তোলা হয়েছিল ‘চান্দা দো ধান্দা লো'। তাঁরাই কর্পোরেটকে লুঠ করেছে। তাঁদের জন্যই এই বিজ্ঞাপনটা বেশি করে পড়া উচিত । তাঁদের জন্যই এই বিজ্ঞাপন । জাতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুক গান্ধি রাস্তায় নেমে এই নির্বাচনী বন্ডের বিরোধিতা করেছিলেন । এই দুর্নীতির তদন্ত হওয়া উচিত । ইডি-সিবিআই আয়কর দফতর ঘুরে বেড়ালেও এই দুর্নীতির তদন্ত করছে না কেন ? তদন্ত হওয়া দরকার ।"
সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত বলেন, "যারা নির্বাচনী বন্ডে কোটি কোটি টাকা লুঠ করেছে, তাঁরা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দেবে। এর আগের নির্বাচনে বিজেপি 15 হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দিয়েছিল । সেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মিথ্যে কথা বারবার বলতে থাকে । যাতে গোয়েবেলসের মতে, বরাবর মিথ্যে বললে মানুষ সেটাকেই সত্যি বলে মনে করে। একারণেই আজকের বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট বলা হয়েছে এটা একটা বিজ্ঞাপন। এধরণের বিজ্ঞাপন নির্বাচনী বন্ডে টাকা পাওয়া রাজনৈতিক দলগুলো এবার দিতে থাকবে। তাই, সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন