ETV Bharat / state

ফের আসন রফায় 'কাঁটা' ISF, উপনির্বাচনে কি একলাই লড়বে বাম-কংগ্রেস ?

বিজেপি, তৃণমূল বিধানসভা উপনির্বাচনের জন্য তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে । কিন্তু, এখনও পর্যন্ত বাম কিংবা কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়নি।

WEST BENGAL BYE ELECTIONS
উপনির্বাচনে কংগ্রেস ছাড়াই কি প্রার্থী দেবে বামেরা ? (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 21, 2024, 7:17 AM IST

কলকাতা, 21 অক্টোবর: আরজি কর কাণ্ডের আবহে আগামী 13 নভেম্বর রাজ্য ছয় বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে। শনিবার বিজেপি এবং আজ শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ওই ছয় কেন্দ্রে তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে । কিন্তু, এখনও পর্যন্ত বাম কিংবা কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়নি। সূত্রের খবর, বঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের 'হাত' ধরে বামেরা লড়াই করলেও উপনির্বাচনের তেমনটি হচ্ছে না। হাত ছাড়াই উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকা আগামীকাল কিংবা পরশু ঘোষণা করতে পারে বামেরা।

মূলত, কংগ্রেসের তরফে কোনও সাড়া না পাওয়ায় উপনির্বাচনে নিজেদের মতো করে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামেরা। কিন্তু, তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে গিয়ে ফের লোকসভা নির্বাচনের মতো উপনির্বাচনেও আইএসএফ-এর সঙ্গে আসন রফায় জটিলতা দেখা দিয়েছে। যে কারণে রবিবার সন্ধ্যা 6টায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বাম শরিকদলের বৈঠক থাকলেও তা স্থগিত রাখা হয়েছে। সোমবার বিকেল 4টেয় সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে এক বাম নেতা দাবি করেছেন। তিনি বলেন, "শেষ পর্যন্ত বামেদের তরফে পাঁচটি এবং আইএসএফের জন্য একটি আসন ছাড়া হতে পারে।"

এদিকে কংগ্রেস সূত্রের খবর, নিজেদের শক্তি পরীক্ষা করতেই কিংবা নিজেদের শক্তি কত, তা জানতেই এবারের উপনির্বাচনে ছ'টি কেন্দ্রেই একলা লড়াইয়ের সিদ্ধান্তে এগোতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। যে কারণেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার জেলার নেতাদের কাছে আগেই মতামত জানতে চেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, এর আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী নিজেই এমন লড়াইয়ে অনেকটাই আগ্রহী ছিলেন। তবে, প্রদেশ কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব ততটা আগ্রহী ছিল না। যে কারণেই গত লোকসভা নির্বাচনে একাধিক আসন নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিল কংগ্রেস। তাই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বদল হতেই এবারের উপনির্বাচনে এক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব।

এদিকে আবার বামেদের মধ্যে আসন রফা নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে। গত একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হাড়োয়া এবং বাঁকুড়ার তালডাংরা বিধানসভা কেন্দ্রে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ প্রার্থী দিয়েছিল। ওই দুই বিধানসভা কেন্দ্রের নিজেদের সংগঠনও আছে বলে আইএসএফ নেতারা দাবি করেছেন। তাই তারা এবারের বিধানসভা উপ নির্বাচনেও ওই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে আগ্রহে প্রকাশ করেছে।

এদিকে, মাদারিহাটে বাম শরিক দল আরএসপি, মেদিনীপুরে সিপিআই এবং সিতাই বিধানসভা ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্য ছেড়ে দেওয়ার হবে বলে সিপিএম সূত্রের দাবি। এই অবস্থায় একমাত্র নৈহাটি বিধানসভা পড়ে থাকছে। কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরে এই নৈহাটি বিধানসভা সিপিআইএম লিবারেশনকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। যেখানে লিবারেশন নাগরিক সমাজের তরফে কাউকে প্রার্থী করতে চাইছিল। এইভাবে একে একে ছয়টি বিধানসভা বিভিন্ন শরিক দলের মধ্যে ভাগ হয়ে যাওয়ায় সিপিএম কোথায় প্রার্থী দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

রবিবার সন্ধ্যায় সেই হিসাব কিছুটা হলেও গোলাতে শুরু করেছে। লিবারেশনকে নৈহাটি আসন ছেড়ে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর সম্ভব হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। ঠিক তেমনি, উত্তর 24 পরগনার হাড়য়া আসন আইএসএফকে দেওয়ার কথা হলেও বাঁকুড়ার তালডাংরা আসনটিতে সিপিএম প্রার্থী দিতে পারে। সিপিএম রাজ্য কমিটির এক নেতা বলেন, "বাম শরিকদের মধ্যে তুলনামূলক শক্তিশালী সিপিএম। সবাইকে নিয়ে চলতে গিয়ে সিপিএম নিজে প্রার্থী দেবে না, এমনটা হতে পারে না। আশা করছি, সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। লিবারেশন কিংবা আইএসএফের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা কেটে যাবে ।" অন্যদিকে আইএসএফ-এর তরফে সামসুর আলি মল্লিক বলেন, "বামেদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আশা করছি সোমবারের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ।"

আরও পড়ুন
'নৈহাটির উপনির্বাচনে জয়ী হব 50 হাজার ভোটে', আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে
তালডাংরায় তৃণমূলের আস্থা শিক্ষক ফাল্গুনী, প্রতিপক্ষ বিজেপির অনন্যা

কলকাতা, 21 অক্টোবর: আরজি কর কাণ্ডের আবহে আগামী 13 নভেম্বর রাজ্য ছয় বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে। শনিবার বিজেপি এবং আজ শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ওই ছয় কেন্দ্রে তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে । কিন্তু, এখনও পর্যন্ত বাম কিংবা কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়নি। সূত্রের খবর, বঙ্গে গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের 'হাত' ধরে বামেরা লড়াই করলেও উপনির্বাচনের তেমনটি হচ্ছে না। হাত ছাড়াই উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকা আগামীকাল কিংবা পরশু ঘোষণা করতে পারে বামেরা।

মূলত, কংগ্রেসের তরফে কোনও সাড়া না পাওয়ায় উপনির্বাচনে নিজেদের মতো করে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামেরা। কিন্তু, তৃণমূল এবং বিজেপি বিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে গিয়ে ফের লোকসভা নির্বাচনের মতো উপনির্বাচনেও আইএসএফ-এর সঙ্গে আসন রফায় জটিলতা দেখা দিয়েছে। যে কারণে রবিবার সন্ধ্যা 6টায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বাম শরিকদলের বৈঠক থাকলেও তা স্থগিত রাখা হয়েছে। সোমবার বিকেল 4টেয় সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে এক বাম নেতা দাবি করেছেন। তিনি বলেন, "শেষ পর্যন্ত বামেদের তরফে পাঁচটি এবং আইএসএফের জন্য একটি আসন ছাড়া হতে পারে।"

এদিকে কংগ্রেস সূত্রের খবর, নিজেদের শক্তি পরীক্ষা করতেই কিংবা নিজেদের শক্তি কত, তা জানতেই এবারের উপনির্বাচনে ছ'টি কেন্দ্রেই একলা লড়াইয়ের সিদ্ধান্তে এগোতে চাইছে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। যে কারণেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার জেলার নেতাদের কাছে আগেই মতামত জানতে চেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, এর আগে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী নিজেই এমন লড়াইয়ে অনেকটাই আগ্রহী ছিলেন। তবে, প্রদেশ কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব ততটা আগ্রহী ছিল না। যে কারণেই গত লোকসভা নির্বাচনে একাধিক আসন নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিল কংগ্রেস। তাই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বদল হতেই এবারের উপনির্বাচনে এক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব।

এদিকে আবার বামেদের মধ্যে আসন রফা নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দিয়েছে। গত একুশের বিধানসভা নির্বাচনে হাড়োয়া এবং বাঁকুড়ার তালডাংরা বিধানসভা কেন্দ্রে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ প্রার্থী দিয়েছিল। ওই দুই বিধানসভা কেন্দ্রের নিজেদের সংগঠনও আছে বলে আইএসএফ নেতারা দাবি করেছেন। তাই তারা এবারের বিধানসভা উপ নির্বাচনেও ওই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে আগ্রহে প্রকাশ করেছে।

এদিকে, মাদারিহাটে বাম শরিক দল আরএসপি, মেদিনীপুরে সিপিআই এবং সিতাই বিধানসভা ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্য ছেড়ে দেওয়ার হবে বলে সিপিএম সূত্রের দাবি। এই অবস্থায় একমাত্র নৈহাটি বিধানসভা পড়ে থাকছে। কিন্তু, গত কয়েকদিন ধরে এই নৈহাটি বিধানসভা সিপিআইএম লিবারেশনকে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। যেখানে লিবারেশন নাগরিক সমাজের তরফে কাউকে প্রার্থী করতে চাইছিল। এইভাবে একে একে ছয়টি বিধানসভা বিভিন্ন শরিক দলের মধ্যে ভাগ হয়ে যাওয়ায় সিপিএম কোথায় প্রার্থী দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

রবিবার সন্ধ্যায় সেই হিসাব কিছুটা হলেও গোলাতে শুরু করেছে। লিবারেশনকে নৈহাটি আসন ছেড়ে দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর সম্ভব হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। ঠিক তেমনি, উত্তর 24 পরগনার হাড়য়া আসন আইএসএফকে দেওয়ার কথা হলেও বাঁকুড়ার তালডাংরা আসনটিতে সিপিএম প্রার্থী দিতে পারে। সিপিএম রাজ্য কমিটির এক নেতা বলেন, "বাম শরিকদের মধ্যে তুলনামূলক শক্তিশালী সিপিএম। সবাইকে নিয়ে চলতে গিয়ে সিপিএম নিজে প্রার্থী দেবে না, এমনটা হতে পারে না। আশা করছি, সোমবার সন্ধ্যার মধ্যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। লিবারেশন কিংবা আইএসএফের সঙ্গে আসন রফা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা কেটে যাবে ।" অন্যদিকে আইএসএফ-এর তরফে সামসুর আলি মল্লিক বলেন, "বামেদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আশা করছি সোমবারের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ।"

আরও পড়ুন
'নৈহাটির উপনির্বাচনে জয়ী হব 50 হাজার ভোটে', আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে
তালডাংরায় তৃণমূলের আস্থা শিক্ষক ফাল্গুনী, প্রতিপক্ষ বিজেপির অনন্যা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.