কলকাতা, 16 ফেব্রুয়ারি: রেল স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে 18 জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় শোক প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রবিবার তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, দিল্লির এই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ৷ এদিকে এই ঘটনার পর কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের পদত্যাগ দাবি করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ ৷ অন্যদিকে, রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ সাগরিকা ঘোষ এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী মোদির কড়া সমালোচনা করেন ৷
মমতা সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, "এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দেখিয়ে দিচ্ছে, সু-পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ৷ বিশেষত যখন সেটা নাগরিকদের নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত ৷ মহাকুম্ভের পুণ্যার্থীদের জন্য এই যন্ত্রণা নয়, যথোপযুক্ত ব্যবস্থা করা উচিত ছিল ৷ এই ধরনের যাত্রাগুলি যেন নিরাপদ, সু-পরিকল্পিত হয় সেটা নিশ্চিত করা অবশ্যই জরুরি ৷ শোকাহত পরিবারগুলির প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা রইল ৷ আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি ৷"
The tragic loss of 18 lives in the Delhi stampede is deeply heartbreaking. This painful incident highlights the importance of careful planning and management, especially when it comes to the safety of citizens.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) February 16, 2025
Pilgrims on their way to the Maha Kumbh should have been met with…
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, "নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনের দুর্ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক-নিন্দনীয়-প্রতিবাদযোগ্য ৷ কুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুমিছিল দেখেছিলাম আমরা ৷ এবার সেখানে যাওয়ার পথে স্টেশনে পদপিষ্ট হয়েও মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ৷" বিজেপি সরকারের কাছে তাঁর প্রশ্ন, "এরা কী চাইছে ?"
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের ইস্তফা দাবি করে কুণাল বলেন, "রেলে যাত্রী সুরক্ষা বলে কিছু নেই ৷ একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে ৷ রেলগুলি সময়ে যায় না ৷ লোকাল ট্রেন হোক বা দূরপাল্লার ট্রেন- সবেরই এক অবস্থা ৷ ট্রেনে খাবার নেই, জল নেই ৷ ট্রেন অপরিচ্ছন্ন ৷ তারই মধ্যে কোথাও সংরক্ষিত কামরায় বহিরাগতরা ঢুকে অরাজকতা করছে, কোথাও আবার মারধর পর্যন্ত করছে ৷"
তিনি আরও বলেন, "এবার এই ধরনের একটা চূড়ান্ত অব্যবস্থা দেখা গেল রাজধানীর বুকে নয়াদিল্লি স্টেশনে ৷ সেখানে মৃত্যুমিছিল ৷ এই রেলমন্ত্রী শুধু প্রচার চান । তিনি পাবলিসিটি হাঙ্গার রেলমন্ত্রী ৷ কোথায় দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে গিয়ে ছবি তুলবেন- সেটাই শুধু চান ৷ আর কত দুর্ঘটনা হলে এবং আর কতগুলি প্রাণ গেলে মনে হবে যে ওই চেয়ারটায় বসে থাকার নৈতিক অধিকার তাঁর নেই ! রেলের সেফটি, সিকিউরিটি, মনিটরিং- গোটা পরিচালন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি ৷"
রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ দিল্লির দুর্ঘটনা নিয়ে এক ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, "মোদি সরকারের তরফে এই ঘটনাগুলিকে লুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে ৷ আর মোদি সরকারের এই আচরণ প্রথম নয়। বারংবার একই ঘটনা ঘটতে দেখা যাচ্ছে । প্রথম দিকে মোদি সরকারের তরফ থেকে এটাই স্বীকার করা হচ্ছিল না যে কিছু একটা ঘটেছে ৷ প্রথমে বলা হচ্ছিল, পদপিষ্টের ঘটনা আদতে গুজব ৷ তারপর বলা হল, কয়েকজন আহত হয়ে থাকতে পারেন ৷ অবশেষে স্বীকার করে নেওয়া হল যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ থেকে স্পষ্ট মোদি সরকার সত্য স্বীকার করে নিয়ে এসব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বদলে ঘটনা কীভাবে লুকনো যায়, তারই চেষ্টা করছে ৷"