কলকাতা, 22 নভেম্বর: আলুর বেলাগাম দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে ফের রফতানি বন্ধের নির্দেশ রাজ্য সরকারের ৷ আজ নবান্নে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ নির্দেশ দিয়েছেন, আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে না-আসা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ভিনরাজ্যে রফতানি ৷ রাজ্যের ঘাটতি মিটিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণ করতেই এমন সিদ্ধান্ত ৷
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে আলু ও পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন ৷ তারপরেই আজ জরুরি বৈঠক ডাকেন মুখ্যসচিব ৷ তিনি বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন, "অতীতে মুখ্যমন্ত্রী আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যে বৈঠক করেছিলেন, সেখানে স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছিল, আগে রাজ্যের চাহিদা মেটানো হবে ৷ তারপর অন্য রাজ্যে আলু পাঠানো হবে ৷ সেই নির্দেশ কেন মানা হল না !"
নবান্ন সূত্রে খবর, বৈঠকে একাংশ ব্যবসায়ীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যরাও ৷ এরপরই মনোজ পন্থ নির্দেশ দেন, "রাজ্যে যতক্ষণ পর্যন্ত আলুর দাম সাধারণের নাগালের মধ্যে না-আসছে, ততক্ষণ অন্য রাজ্যে রফতানি হবে না ৷ মুখ্যমন্ত্রীর পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত, এই নির্দেশ বলবৎ থাকবে ৷ প্রতিদিন যেভাবে আলুর দাম বাড়ছে, সেক্ষেত্রে দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য হিমঘরগুলিও দ্রুত খালি করতে হবে ৷"
এ দিন টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শুধু কলকাতা নয়, প্রয়োজনে জেলা ও শহরতলিতে অভিযান চালাতে হবে ৷ প্রয়োজনে যেখানে আলুর চাষ হয়, সেখানেও টাস্ক ফোর্সকে অভিযান চালাতে বলা হয়েছে ৷
একইভাবে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে কালোবাজারি বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন মুখ্যসচিব ৷ এই মুহূর্তে যে সংকটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই সুযোগে আমদানি করা পেঁয়াজ নিয়ে যাতে কেউ কালোবাজারি করতে না-পারে, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে বৈঠকে ৷ একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রশাসনকেও সতর্ক করেছেন তিনি ৷ রাজ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে তৈরি এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চকে আরও সতর্ক হতে বলেছেন মুখ্যসচিব ৷ আলু-পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, সবজি ও মাছ-মাংসের দামও যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সেই বিষয়টিও তুলে ধরেন মনোজ পন্থ ৷
টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, "বৈঠকে আলু ব্যবসায়ী সমিতিকে বলা হয়েছে প্রতিশ্রুতি মতো 26 টাকা কেজি দরে আলু দিতে ৷ তাহলেই আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে ৷ তবে, তাঁরা 28 টাকার নীচে রাজি হচ্ছেন না ৷ কিন্তু, তাহলে বাজারে আলু আসতে-আসতে দাম বেড়ে 30 টাকা ছুঁয়ে যাবে ৷ যদিও, হিমঘরগুলিকে দ্রুত খালি করতে বলা হয়েছে ৷ হিমঘর মালিকরা কিছুটা সময় চেয়েছেন ৷ আজ মুখ্যসচিব অন্য রাজ্যে আলু রফতানি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন ৷ যতদিন না-পরবর্তী নির্দেশ আসে, ততদিন রফতানি বন্ধ থাকবে ৷"