কলকাতা, 18 ফেব্রুয়ারি: দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি রাজ্যে হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে বার্ড ফ্লু । Avian flu (H5N1) ফ্লু-র প্রকোপ আটকাতে অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটকের মতো কয়েকটি রাজ্যে সতর্কতা জারি রয়েছে । এরকম পরিস্থিতিতে এ রাজ্যের 12টি চিড়িয়াখানায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মুরগির মাংস । দেশি-পোল্ট্রি, কোনওটাই রাখা হচ্ছে না মাংসাশী প্রাণীদের খাবারের তালিকায় ।
বাঘ, সিংহ ছাড়াও ম্যান্ডারিন ডাক, হর্ন বিলের মতো কিছু পাখি আবার চিকেন মাখা বা কিমা খায় । তাদের খাবারের তালিকাতেও বদল আনা হয়েছে । শুধু খাবার নয়, তাদের পরিচর্যায় আলাদা আলাদা লোকের ব্যবস্থা করা হয়েছে । আন্তঃরাজ্য পশু পাখি বিনিময় আপাতত বন্ধ রাখা রয়েছে । চিড়িয়াখানাগুলিতে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনার কারণে বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়েছে ।

কেন্দ্রীয় জু অথরিটির নির্দেশিকা মেনেই রাজ্যের জু অথরিটি সমস্ত চিড়িয়াখানায় মুরগির মাংস বন্ধ রেখেছে । পরিবর্তে খাবারে দেওয়া হচ্ছে মোষ, ভেড়া ও ছাগলের মাংস । এর ফলে, বাঘ, চিতা, সিংহ, হায়না, শিয়াল, জাগুয়ারদের অ্যানিম্যাল প্রোটিনে কোনও ঘাটতি পড়ছে না । আলিপুর চিড়িয়াখানার এক আধিকারিক জানান, চিড়িয়াখানার নিজস্ব পোল্ট্রি বা দেশি মুরগির ফার্ম নেই । বাইরের থেকেই নিয়ে আসা হয় । মাংসের বরাত পাওয়ায় বিভিন্ন সংস্থাই মাংসের যোগান দেয় । আপাতত, তাদের মুরগির মাংস দিতে নিষেধ করা হয়েছে ।

মাসখানেকেরও বেশি সময় ধরে বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় চিকেন বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য জু অথরিটির মেম্বার সেক্রেটারি সৌরভ চৌধুরী । তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে বার্ড ফ্লু আক্রান্ত হওয়ার খবর এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি । ফলে, আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই । কেন্দ্রীয় জু অথরিটির নির্দেশ মেনে আমরা 12টি চিড়িয়াখানায় মুরগির মাংসা দেওয়া বন্ধ রেখেছি ।" আলিপুর চিড়িয়াখানার এক পদাধিকারী বলেন, "এখানে চিকেনের পরিমাণ খুব কম প্রয়োজন হত । বাঘ, সিংহের ক্ষেত্রে মোষের মাংস বেশি খেতে দেওয়া হয় । পাখিদের জন্য অল্প মাংসের প্রয়োজন পড়ত । সেটা আপাতত বন্ধ রয়েছে ।"

চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, পাখিদের ইঁদুর এবং চিংড়ি খেতে দেওয়া হচ্ছে । অন্যদিকে, বেঙ্গল সাফারিতে বছরভর প্রায় 1535 কেজি দেশি চিকেন লাগে । 9 লাখ টাকার বেশি দেশি চিকেন সরবরাহ করা হয় । পাশাপাশি প্রায় 12 হাজার কেজি পোলট্রি বা প্রায় 31 লাখ টাকার পোলট্রির মাংস লাগে । দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় বছরভর প্রায় 9 লক্ষ টাকার পোলট্রি চিকেন লাগে । আর দেশি চিকেন লাগে প্রায় 7 লক্ষ টাকার ।
