কলকাতা, 29 নভেম্বর: 'কালীঘাটের কাকু' সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আগাম জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলায় ইডির তদন্তকারী আধিকারিকের উপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী । ইডির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদীকে তিনি বলেন, ইডির তদন্তকারী আধিকারিক ওয়াসিম আক্রম খানকে এখনই অপসারণ করা উচিত ৷ যদিও এই বিষয়ে লিখিত কোনও নির্দেশ বিচারপতি দেননি ।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে শ্যোন অ্যারেস্ট করার জন্য নিম্ন আদালতে আবেদন জানাবে সিবিআই । তার আগেই সুরক্ষাকবচ পেতে অর্থাৎ তাঁকে গ্রেফতার যাতে না-করা হয় সেজন্য আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন 'কালীঘাটের কাকু' । সেই মামলার শুনানিতে এদিন ইডির আচরণে চরম ক্ষুব্ধ বিচারপতি ।
বিচারপতি বাগচী বলেন, "যেখানে নিম্ন আদালত তাঁকে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে 25 নভেম্বর (তার বিরুদ্ধে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট রয়েছে) সেখানে কী করে 'শ্যোন অ্যারেস্ট'-এর আবেদন করে ইডি ? ইডির অফিসাররা কি আইনটা জানেন না ? নাকি এটা তাঁদের অতি তৎপরতা ? ওয়াসিম আক্রম খান নামের এই অফিসার কে ? একে অবিলম্বে তদন্তকারী সংস্থা থেকে অপসারণ করুন ।" ইডির আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী অবশ্য বলেন, "তিনি অত্যন্ত যোগ্য অফিসার ।"
কিন্তু বিচারপতির প্রশ্ন, "যেখানে আদালতে হাজির করার নির্দেশ রয়েছে, সেখানে কী করে অ্যারেস্টের জন্য আবেদন করা হয় ?" বিচারপতি বলেন, "নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় আমরা দেখেছিলাম রাজ্যের মুখ্যসচিব দিনের পর দিন চার্জ ফ্রেমের অনুমতি দিচ্ছিলেন না । একইরকম ভাবে যেখানে সুজয়কৃষ্ণকে নিম্ন আদালতে প্রোডাকশনের নির্দেশ রয়েছে, সেখানে কী ভাবে শ্যোন অ্যারেস্টের আবেদন করেন ?"
এদিন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়কেও আগাম জামিনের আবেদনের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে মৃদু তিরস্কার করেন বিচারপতি । প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যু করার পর আগাম জামিনের আবেদন করা যায় না বলে অভিমত বিচারপতির । সুজয়কৃষ্ণের গ্রেফতারি আশঙ্কা নিয়ে তিনি বলেন, "ইডি এখন কিছু করবে না ।"
তদন্তকারী অফিসারকে দু'সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত । তিন সপ্তাহ পরে ফের এই মামলার শুনানি । তবে যে রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ, তা দেননি বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ ।
প্রসঙ্গত, গতকাল সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, সুজয়কৃষ্ণ আদালতে হাজির হলে তবেই তাঁর শ্যোন অ্যারেস্ট করা যাবে কি না সে বিষয়ে শুনানি হবে । বিচারক দু'বার তাঁকে আদালতে হাজির করতে নির্দেশ দিলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো না-থাকায় তাঁকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ আদালতে হাজির করেনি ৷