কলকাতা, 27 সেপ্টম্বর: কলকাতার একাংশে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 163 ধারা লাগু সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা যাবে কি ? শুক্রবার রাজ্য সরকারকে এ নিয়ে বিবেচনা করতে বললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ ৷ তা না হলে, ওই এলাকায় হওয়া ছোট-বড় সব দুর্গা পুজো বন্ধ করতে হবে ৷ রাজ্যকে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি ৷
কয়েকদিন আগে দু’মাসের জন্য কলকাতা পুলিশের তরফে কেসি দাস থেকে ভিক্টোরিয়া হাউস পর্যন্ত 163 ধারা লাগু করার কথা জারি করা হয়েছে ৷ যা নিয়ে বাম সংগঠন এবং চিকিৎসকদের ফ্রন্টের তরফে জোড়া মামলা দায়ের হয় ৷
শুক্রবার শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কেসি দাস থেকে ভিক্টোরিয়া হাউস শুধুমাত্র 60 মিটার এই এলাকায় 144 ধারা (ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা 163) বলবৎ থাকে ৷ প্রতি 6 মাস অন্তর এই বিজ্ঞপ্তি জারি হয় ৷ যেহেতু, এই 60 মিটার এলাকাটি বউবাজার, হেয়ার স্ট্রিট ও ট্রাফিক গার্ড হেডকোয়ার্টারের অধীনে, তাই ওই তিনটি থানার নাম বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ তাই বিজ্ঞপ্তির অর্থ এই নয় যে, ওই অঞ্চলের বাইরে অন্য কোথাও 144 ধারা জারি থাকবে ৷ এবার তার সঙ্গে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট যুক্ত করা হয়েছে ৷"
সরকারি আইনজীবীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বামেদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, "রাজ্য সরকারের আইনজীবীর এই মন্তব্য রেকর্ড করা হোক ৷" পাশাপাশি, ওই এলাকায় সিপিআইএমের মিছিলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "সিপিআইএম কলেজ স্কোয়ার, বউবাজার হয়ে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করতে চায় ৷" যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, "মিছিলে কত লোক হবে ?" তবে, মিছিলে জমায়েতের নির্দিষ্ট সংখ্যা বলতে পারেননি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ৷
বামেদের মিছিল করা নিয়ে বিচারপতি ভরদ্বাজের মন্তব্য ছিল, "আগামী সোমবার এই মামলার আবার শুনানি হবে ৷ তার আগে পুলিশ মিছিলের অনুমতি দিলে, মিটে গেল ৷ না-হলে আদালত নির্দেশ দেবে ৷" তবে, ওই তিন থানা এলাকায় অনেক ছোট-বড় দুর্গাপুজো হয় ৷ সেক্ষেত্রে পুলিশের জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পুজোও করা যাবে না ৷ কারণ, পুজো করা মানেই একসঙ্গে প্রচুর মানুষের জমায়েত ৷ তাই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, "ওই এলাকায় অনেকগুলি পুজো হয় ৷ সেগুলির কী হবে ?"
তিনি রাজ্যের আইনজীবীকে নির্দেশ দেন, "এই বিজ্ঞপ্তি (বিএনএস 163) প্রত্যাহার করার সুযোগ আছে কি না, সেটা আগামী দিনে জেনে আসুন ৷ না-হলে ওই এলাকায় সব পুজো বন্ধ করতে হবে কিন্তু আপনাদের ৷" উল্লেখ্য, গত বুধবার কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মার সই করা এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় ৷ সেই নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয় ৷ তারই প্রেক্ষিতে এই জোড়া মামলা হয়েছিল ৷
এ নিয়ে চিকিৎসকদের জয়েন্ট ফোরামের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, 1 অক্টোবর তাঁদের মহামিছিল রয়েছে ৷ সেখানে আরজি করের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের সুবিচারের দাবিতে অসংখ্য মানুষ হাঁটবে ৷ সেই মিছিলকে আটকাতেই কলকাতা পুলিশ ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন বলে অভিযোগ করলেন চিকিৎসক তমোনাশ চৌধুরী ৷