কলকাতা, 22 জুন: শেষবার 2017 সালে হয়েছিল ছাত্র নির্বাচন ৷ তারপর 7 বছর ধরে রাজ্যের কলেজগুলিতে বন্ধ রয়েছে ছাত্র নির্বাচন । 2023 সালে 28 অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা দিবসে মঞ্চে উঠে ছাত্র ভোটের কথা বলেছিলেন । তিনি বলেছিলেন, অশান্তি না-করে ছাত্র নির্বাচন করতে হবে । সেন্ট জেভিয়ার্স মডেল অনুসরণ করে নির্বাচন করা হবে ।
তারপর কেটে গিয়েছে 10 মাস । এখনও রাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র নির্বাচনের ঘোষণা হয়নি । দিনকয়েক আগেই শিক্ষা দফতরে হয়েছে । এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘আমাদের একদফা বৈঠক হয়েছে । তবে কিছুদিন আগেই একটা বড় নির্বাচন আমাদের রাজ্য তথা দেশ দেখল । সামনে আবার পুজো আসছে । ফলে সবদিক দেখতে হবে । তারপরেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা আলোচনা করব । তাঁর সবুজ সংকেত পেলেই নির্বাচন করব ।’’ যদিও ব্রাত্যর আশ্বাসবাণীতে খুশি নয় অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি ৷
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্যে সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তী বলেন, "একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমাদের সবার আগে প্রয়োজন ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করা । কিন্তু এখন আমরা সারা দেশে দেখতে পাচ্ছি নিট এবং নেট কেলেঙ্কারি । ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে । নির্বাচনের আগে উচিত এই দুর্নীতিকে পরিষ্কার করা । যারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করা হোক এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগ করুক। তারপরে ছাত্র নির্বাচন হোক । তাঁর অভিযোগ, দুর্নীতি থেকে মানুষের ফোকাস ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য বাম ছাত্র সংগঠন করে ছাত্র নির্বাচনের কথা বলছে ।"
পালটা এসএফআই রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘‘এই বিষয়টাকে ইচ্ছাকৃত বিলম্বিত করা হচ্ছে । যাতে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তাদের কাটমানির বুলডোজার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চালাতে পারে । নিট-নেট দুর্নীতি নিয়ে এসএফআই সর্বপ্রথম রাস্তায় নেমেছে । তৃণমূলের একজন সাংসদও এই বিষয়ে কথা বলছেন না । নিট-নেট দুর্নীতি নিয়ে প্রচ্ছন্ন মদত ছিল তৃণমূলের । দুর্নীতি মুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং স্বচ্ছ পড়াশোনার জন্য খুব প্রয়োজন ছাত্র নির্বাচন ।’’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এই অভিযোগকে ‘খেলো’ বলে মনে করছেন এবিভিপির সদস্যরা । কলকাতা জেলার সম্পাদক দেবাঞ্জন পালের বক্তব্য, "তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের শিক্ষামন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী যে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে । 2017 সালের পর থেকে ছাত্র সংসদ কী, তা অধিকাংশ পড়ুয়ারা জানে না । একটা কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের প্রচুর দায়িত্ব থাকে । কিন্তু এই মুহূর্তে রাজ্যের কোথাও বৈধ ছাত্র সংসদ নেই ।"