দুর্গাপুর, 9 অক্টোবর: "ভাইপোর পুলিশের গালে সপাটে চড় লেগেছে" ৷ অভিষেক-কন্যাকে কুমন্তব্য করার মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে এমনই বললেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ সুকান্ত বলেন, "মঙ্গলবার মামলার শুনানি হয়েছে ৷ বিচারক রাজর্ষি ভরদ্বাজ নির্দেশ দিয়েছেন, ওই দুই মহিলার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না ৷
নির্দেশনামার 24 নম্বর অনুচ্ছেদ তুলে বিচারক ভরদ্বাজ অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির নির্দেশ দিয়েছেন সিবিআই-কে ৷ এই নির্দেশ ভাইপোর পুলিশের গালে সপাটে চড় ৷"
গত 27 অগস্ট তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মেয়ের সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগে বিজেপির 2 মহিলা কর্মীকে গ্রেফতার করে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ ৷ তাঁদের উপর অত্যাচার করা হয় বলেও অভিযোগ ৷ সেই ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতা হাইকোর্টে বিজেপির তরফে একটি রিট পিটিশন জমা দেওয়া হয় ৷ মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ:
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "কুলতলীতে মেয়েদের কোনও নিরাপত্তা নেই ৷ বাচ্চা মেয়েরা বাড়ি ফেরার সময় তাদেরকে উত্যক্ত করা হয় ৷ কী প্রশাসন চালাচ্ছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় !"
রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা সুকান্তর:
এরপর বাংলাদেশের প্রসঙ্গে টেনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, "সেখানে থানার ভিতরে মদ খাওয়া হয়, ফুর্তি হয় । আর কেউ অভিযোগ করতে গেলে, তাকে মুরগি নিয়ে আসতে বলা হয় । মানুষের রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক । আমরা তো ভাবতাম এই রকম ঘটনা বাংলাদেশে হয় । এখন তো দেখছি এখানেও হচ্ছে !"
সম্প্রতি জয়নগরের কুলতলী এলাকায় নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি ৷ নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, সময়মতো পুলিশ খোঁজ খবর আজ হয়তো প্রাণে বেঁচে যেত তাঁদের একরত্তি মেয়ে ৷ এমনকী, নিষ্ক্রীয়তার অভিযোগে কুলতলীর থানার সামনে আগুনও লাগিয়ে দেন উত্তেজিত স্থানীয়রা ৷ পঞ্চমী সন্ধ্যায় দুর্গাপুরে পুজো পরিক্রমায় গিয়ে এবার সেই বিষয়ে রাজ্য প্রশাসনকে একহাত নেন সুকান্ত ৷
কুণাল ঘোষের মন্তব্যের জবাবে সুকান্ত:
সম্প্রতি, আরজি কর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত নিয়ে মন্তব্য করেন তৃণমূলের মিডিয়া সেলের সদস্য কুণাল ঘোষ ৷ তিনি বলেন, "চার্জশিটে সেই সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের নামই উল্লেখ করেছে সিবিআই ৷ ঘটনার 24 ঘণ্টার মধ্য়েই তাঁকে তো গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ ৷ যাঁরা সিবিআই চেয়েছিলেন, আজ দেখুন, মূল ধর্ষণ ও খুনের মামলায় তারা এতদিনে শুধু সঞ্জয় রায়ের নামে চার্জশিট দিল, যাকে 24 ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। কিন্তু আজ মানুন, কলকাতা পুলিশ ঠিক পথেই ছিল।''
এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, "যিনি চিৎকার করছেন, সেই মাথা মোটাটাকে বোঝান তথ্য প্রমাণ না থাকলে সিবিআই কেন এফবিআইও গ্রেফতার করতে পারবে না। সঞ্জয় রায়ের জামিন আটকানোর জন্যই সিবিআই চার্জশিট দিয়েছে। চার্জশিটে তথ্য প্রমাণ লোপাটের কথাও লেখা আছে।"
বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, আরজি করের ঘটনায় প্রথম থেকেই তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চালাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন ৷ তাই চার্জশিট দিয়ে সঞ্জয় রায়ের জামিন আটকানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ।