শিলিগুড়ি, 21 অক্টোবর: দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার অবসান ৷ অবশেষে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচয় পাচ্ছে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর ৷ 'কুইন অফ হিলস' কাঞ্চনজঙ্ঘার মতো নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হবে বাগডোগরা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালকে ।
রবিবার বিকেলে দেশের 3টি নতুন বিমানবন্দর ও 4টি বিমানবন্দর সম্প্রসারণের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ বারাণসী থেকে ভার্চুয়ালি এই উদ্বোধন করেন তিনি ৷ তালিকায় ছিল বাগডোগরা বিমানবন্দরও ৷
শিলান্যাসের এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে রবিবার শিলিগুড়ির কাওয়াখালি ময়দানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, সাংসদ রাজু বিস্তা, জয়ন্ত রায়, মেয়র গৌতম দেব, বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, শিখা চট্টোপাধ্যায়, নিরজ জিম্বা, দূর্গা মুর্মু, আনন্দময় বর্মন-সহ এয়ারপোর্ট অথরিটির শীর্ষ আধিকারিকরা । এদিনের অনুষ্ঠানে মেয়র স্বাগত ভাষণ দিতে শুরু করলে একবার জয় শ্রীরাম স্লোগান ওঠায় সাময়িক বিতর্কের সৃষ্টি হয় । যদিও বিষয়টি উপেক্ষা করেন মেয়র গৌতম দেব ।
উদ্বোধন প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, "শিলিগুড়ি ভৌগোলিক অবস্থানগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । সামনেই চিন সীমান্ত । এই পরিবেশে বাগডোগরা বিমানবন্দরের উন্নয়ন খুব প্রয়োজন ছিল । সেকারণে কেন্দ্র সরকার উদ্যোগ নিয়েছিব ৷ আজ তা সম্ভব হল ৷" রাজু বিস্তা বলেন, "নতুন টার্মিনাল বিল্ডিং হলে নিত্যযাত্রী থেকে পর্যটক সবাই খুব উপকৃত হবেন ।"
অবশ্য, এই সম্প্রসারণের বিষয়ে কেন্দ্রকে সম্পূর্ণ কৃতীত্ব দিতে নারাজ মেয়র গৌতম দেব ৷ তাঁর কথায়, "রাজ্য সরকার এই বিমানবন্দরের উন্নয়নের জন্য আগে 28 একর ও পরে আরও 104 একর জমি অধিগ্রহণ করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতা ছাড়া এই উন্নয়ন কোনও ভাবে সম্ভব ছিল না ।"
প্রসঙ্গত, উত্তরপূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হিসাবে মনে করা হয় শিলিগুড়িকে ৷ ফলে শিলিগুড়িতে স্থিত বাগডোগরা বিমানবন্দের গুরুত্ব রয়েছে ৷ উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি এই বিমানবন্দরের উপর নির্ভরশীল ৷ পর্যটন শিল্পের ক্ষেত্রে এই বিমানবন্দরের গুরুত্ব যথেষ্ট বেশি ৷ সেকারণে দীর্ঘদিন ধরে এই বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক পরিচয় দেওয়ার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে ৷ অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হল ৷
জানা গিয়েছে, নতুন টার্মিনাল বিল্ডিংটির আয়তন হবে এক লক্ষ বর্গমিটার । এর মধ্যে 70 হাজার বর্গমিটারের কাজ প্রথম দফায় শেষ করা হবে । প্রতি ঘণ্টায় অন্তত 3 হাজার 800 জন যাত্রী একসঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারবে । শুধু তাই নয়, নতুন টার্মিনাল বিল্ডিংটিতে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং, 10টি এয়ারব্রিজ থাকবে । বিল্ডিংয়ের এপ্রোন A-321, B-737-এর মতো 16টি ছোট বিমান রাখার ব্যবস্থাও থাকবে । আগামী আড়াই বছরের মধ্যে প্রথম ধাপের কাজ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । এই প্রকল্পের জন্য প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র সরকার ।