কলকাতা, 6 জানুয়ারি: নতুন হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের সংক্রমণ ঘিরে ক্রমশ আতঙ্ক বাড়ছে একাংশের মধ্যে ৷ প্রশ্ন উঠছে, আবারও কি করোনা পরিস্থিতি ফিরে আসছে ? যদিও, এখনই এতটা উদ্বেগ দেখছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৷ তবে, বেঙ্গালুরুতে দুই শিশুর শরীরে HMPV পাওয়া গিয়েছে ৷ কলকাতাতেও এক শিশুর শরীরে মিলেছে এই ভাইরাস ৷ যা আরও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ৷
তবে, এখনই এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হতে নিষেধ করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একাংশ ৷ সতর্কতা অবলম্বনই এর থেকে বাঁচার উপায় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা ৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, এই ভাইরাসের প্রভাব কতটা ক্ষতিকর ? কীভাবে নিজেকে ভালো রাখবেন ? শিশু ও বয়স্কদের জন্য কি বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন ? এমন নানা প্রশ্নের জবাব দিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ৷
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ তথা ভাইরোলজিস্ট সুমন পোদ্দার বলেন, "এই ভাইরাস অন্য ভাইরাসের মতোই, খুব তাড়াতাড়ি ছড়ায় ৷ কিন্তু, খুব একটা বিরক্তকর নয় ৷ কারও ক্ষেত্রে এটা নিউমোনিয়াতে পরিণত হয় ৷ আবার বেশি ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে একটু সমস্যা আছে ৷ বাড়িতেই এর চিকিৎসা হয়ে থাকে ৷ জীবনহানি অসম্ভব নয় ৷ তবে, পরিসংখ্যান খুবই কম ৷ জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথাব্যাথা অর্থাৎ, ঠান্ডা লাগার প্রত্যেকটা লক্ষণ এই ভাইরাসের সংক্রমণে দেখা যায় ৷ তার সঙ্গে যুক্ত হয় শ্বাসকষ্ট ৷"
তবে, আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলেই আশ্বস্ত করেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক যোগীরাজ রায় ৷ তিনি বলেন, "এই ভাইরাসে ভয় বা আতঙ্কিত হয়ে পড়ার এখনই কিছু নেই ৷ কারণ, এই ভাইরাস খুবই নিরীহ ৷ খুব গুরুতর কোনও সমস্যা এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে দেখা যায় না ৷ এক্ষেত্রে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, এমনটাও দেখা যায় না, যদি না-কোমর্বিটির কোনও সমস্যা থাকে ৷ তবে, এই ভাইরাস থেকে নিজেদের বাঁচাতে, নতুন কোনও পরামর্শ নেই ৷ পুরনো যে নিয়মগুলি কোভিডের সময় আমরা মেনেছি, সেগুলোই পালন করতে হবে ৷ যেমন হাত ধোওয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, মাস্ক পরা এবং সর্দি-কাশি হলে কিছুদিন বাড়ি থেকে না-বেরনো ৷"
কোন পরিস্থিতিতে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রয়োজন ?
চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "যে কোনও নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় বেশ কয়েকটি লক্ষণ দেখা গেলে ৷ যখন কোনও রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়, রক্তচাপ কমে যায়,৷ শরীর নীল হয়ে যায়, মূত্রত্যাগ বন্ধ হয়ে যায় আর তার সঙ্গে প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ৷ এই সমস্ত ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন ৷ কিন্তু, বয়স্ক ও ছোটরা অনেক সময় বুঝতে পারেন না ৷ এক্ষেত্রে সমস্ত লক্ষণ থাকার পাশাপাশি, তারা চুপ বা শান্ত হয়ে যায়, তখন হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়ে ৷ কিন্তু, সেই সংখ্যাটা খুবই কম ৷"