ETV Bharat / state

জয়ী হলে বারাসতে মেট্রো চালু করব, ইটিভি ভারতে অকপট ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সঞ্জীব - Lok Sabha Election 2024

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 15, 2024, 8:34 AM IST

Barasat AIFB Candidate interview: বনগাঁয় প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর এবং বারাসতের তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে জেতাতে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়ই একে অপরকে সাহায্য করছে। ইটিভি ভারতে বিস্ফোরক দাবি বাম মনোনীত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের। বামেরা ঘুরে দাঁড়াবে বলেও আত্মবিশ্বাসের সুর এই প্রার্থীর গলাতে ।

Lok Sabha Election 2024
ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় (নিজস্ব ছবি)
ইটিভি ভারতে অকপট ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সঞ্জীব (ইটিভি ভারত)

বারাসত, 15 মে: বামেদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি হিসেবে একসময় পরিচিত ছিল বারাসত লোকসভা কেন্দ্রটি। কখনও সিপিএম। আবার কখনও ফরওয়ার্ড ব্লক। বেশিরভাগ সময় এই দুই বাম শরিক দলের দখলে ছিল গুরুত্বপূর্ণ এই কেন্দ্রটি । এখান থেকেই পাঁচবার জিতে সংসদে গিয়েছিলেন প্রয়াত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা চিত্ত বসু । কিন্তু সেসব এখন অতীত। বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে থাবা বসিয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের দাপটে কার্যত দিশেহারা অবস্থা বাম শিবিরের । পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে ঘাসফুল শিবিরের উত্থানে বামেদের ভোটব্যাংক কমতে কমতে বর্তমানে তলানিতে এসে ঠেকেছে ।

এই অবস্থায় বামেরা ভরসা রেখেছে বারাসতের ভূমিপুত্র তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের পুরনো সৈনিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের উপর । এবার তাঁকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে বামেদের তরফে। তাঁর বিপরীতে রয়েছেন তিন বারের সাংসদ এবং তৃণমূলের পরিচিত মুখ চিকিৎসক কাকলি ঘোষ দস্তিদার । রয়েছেন বিজেপির স্বজন মজুমদারও । যিনি আবার গেরুয়া শিবিরের বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক। ফলে ধারেভারে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন এই দুই হেভিওয়েট রাজনীতিক।

তবে নির্বাচনে কড়া টক্কর দিতে প্রচারে কোনও খামতি রাখছেন না বাম মনোনীত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় । দিনরাত এক করে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে প্রতিপক্ষের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে কোনও কসুর করছেন না তিনি । স্বভাবতই সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে বামেরা কী ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বারাসত কেন্দ্রে? নাকি বরাবরের মতো এবারও তাঁদের খালি হাতে ফিরতে হবে সেখান থেকে? উত্তর মিলবে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরই । যদিও জয় নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী বামপ্রার্থী । শুধু তাই নয়, এবারের নির্বাচনে বামেরা অভাবনীয় সাফল‍্য পাবে বলেও মনে করেন ফরওয়ার্ড ব্লকের উত্তর 24 পরগনা জেলার সম্পাদক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ।

ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে তিনি আর কী কী বলবেন তারই রইল প্রশ্নোত্তর পর্ব:

ইটিভি ভারত: প্রথমে বারাসত কেন্দ্র থেকে বাম প্রার্থী হিসেবে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা প্রবীর ঘোষের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল । পরবর্তীতে তাঁর সঙ্গে বিজেপি যোগের অভিযোগ ওঠায় তাঁর প্রার্থী পদ বাতিল করে সেই জায়গায় আপনাকে প্রার্থী করা হয়েছে । এই প্রার্থী বিতর্ক কোনওভাবে কি নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে ?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: এই ইস্যু ডেড হয়ে গিয়েছে । এর কোনও প্রভাব পড়বে না নির্বাচনে ।

ইটিভি ভারত: তাহলে আপনার নির্বাচনী ইস্যু কী কী থাকছে ?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: নির্বাচনে তো অসংখ্য ইস্যু রয়েছে। বিজেপির দেশ বিক্রির চেষ্টা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের আজ অসহনীয় অবস্থা । মানুষ বেঁচে রয়েছে নাকি মরে গিয়েছে । তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের । ভয়ংকর অবস্থা ৷ আর রাজ‍্যের তৃণমূল কংগ্রেসের কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো । চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এবং রাহাজানি চলছে । আমরা গত নির্বাচনে বলেছিলাম যা তৃণমূল তাই বিজেপি । আর যা বিজেপি তা তৃণমূল । এই দুই দলের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই । মানুষ হয়তো আমাদের কথা বিশ্বাস করেনি । কিন্তু, আমি আপনাকে বলছি যেভাবে মানুষের সাড়া মিলছে তাতে বামপন্থীরা অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করবে এবারের নির্বাচনে ।

ইটিভি ভারত: আপনি বলছেন বামেরা অভাবনীয় ফলাফল করবে ! কিন্তু, গত কয়েকটি নির্বাচনে যেভাবে বামপন্থীদের ভোটব্যাংক তলানিতে এসে ঠেকেছে । সেখানে দাঁড়িয়ে কীভাবে আপনি এতটা আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন বামেদের ফল ভালো হবে?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: গত কয়েক বছরে মানুষ নানান অভিজ্ঞতার সাক্ষী থেকেছে । সেটা আপনি সারদা, নারদা কেলেঙ্কারি বলুন । কিংবা রোজভ্যালি কেলেঙ্কারি । একটাতেও কেউ কিন্তু সাজা পায়নি । অথচ একসময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ভাগ মমতা ভাগ । মমতা ভাগেনি । রাজ‍্যের 42টি আসনের মধ্যে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে ইচ্ছাকৃতভাবে,পরিকল্পনা করে এমন প্রার্থী দেওয়া হল, যাতে যুবরাজকে জিতিয়ে দেওয়া যায় । এখন রটিয়ে দেওয়া হচ্ছে বনগাঁয় বিজেপি । আর বারাসতে তৃণমূল । তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যে একাগ্রতা তা মানুষ বুঝতে পারছে । এই দুই দলই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ । আগে যা়ঁরা তৃণমূল দলটা চালাতেন তাঁরাই এখন বিজেপি পার্টিটা চালাচ্ছেন । একমাত্র বিকল্প বামপন্থীরাই । বাকিটা মানুষ বিচার করবে ।

ইটিভি ভারত: বামপন্থীদের ভোটব্যাংক কি তাহলে বাড়বে ?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: আপনাকে আমি আবারও বলছি বামেরা ঘুরে দাঁড়াবেই । বামপন্থীদের পক্ষে নির্বাচনী ফলাফল এতটাই ভালো হবে যেটা আমারও কল্পনার বাইরে ।

ইটিভি ভারত: আপনি কাকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করছেন ! এবারের নির্বাচনী লড়াই কি কঠিন হবে?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: বিজেপি ও তৃণমূল আলাদা নয় ! দু'জনে মিলে একটা প্রতিপক্ষ । ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তি মিলিয়ে আরেকটা পক্ষ । এই দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই হচ্ছে । বনগাঁতে বিজেপিকে জেতাতে সাহায্য করবে তৃণমূল । আর বারাসতে তৃণমূলকে জেতাতে সহযোগিতা করছে বিজেপি। মানুষ এঁদের এই আঁতাত এবারে ভেঙে দেবে ।

ইটিভি ভারত: আপনার প্রতিপক্ষ তিন বারের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার কী কী কাজ করেছেন । তাঁর কাজে কি মানুষ সন্তুষ্ট । আপনি কী মনে করছেন কোন কোন কাজ এখনও বাকি রয়েছে?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: আপনি বারবার বলছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার তিন বারের সাংসদ, বহু বছরের সাংসদ প্রয়াত চিত্ত বসুকেও কিন্তু 1984 সালে হারতে হয়েছিল বারাসতের মাটিতে । নীরেন ঘোষ, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো বামপন্থী নেতারা যে হারতে পারে তা ভাবার বাইরে ছিল । তা সত্ত্বেও তাঁদের পরাজয় মানতে হয়েছে । সব ভাবনায় মানুষের সৃষ্টি । মানুষের মতের বাইরে কেউ নয় । আর সবচেয়ে দুঃখের বিষয় 15 বছর ধরে শুনে আসছি বারাসতে মেট্রো চালু হবে । কিন্তু তারপরও উনি সেই প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারেননি । উনি এই 15 বছর শুধু গ‍্যাস বেলুন ফুলিয়েছেন । আর মানুষকে ভাঁওতা দিয়েছেন । সাংসদ হিসেবে জয়ী হতে পারলে প্রথম কাজই হবে আমার বারাসতে মেট্রো প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে চালু করা ।

তৃণমূলের অবস্থা খুবই খারাপ । তৃণমূলকে বাঁচিয়ে রেখেছে মোদি সরকার । তা না-হলে এতদিনে মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবার জেলখানায় থাকতেন । অভিষেক বন্দোপাধ্যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করতে পারতেন না ভোটে । ভারতীয় জনতা পার্টি এবং তাঁর দোসর আরএসএসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লাল ঝান্ডা । সেকারণেই তো তৃণমূলকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে ।

ইটিভি ভারত: জয়ের বিষয়ে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: যেভাবে মানুষের সমর্থন পাচ্ছি । তাতে জয়ের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ।

আরও পড়ুন:

  1. তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হবে না, আশাবাদী সেলিম
  2. বিজেপি ফ্যাক্টর নয়, তৃণমূল নতুন মুখ খুঁজে পায়নি; জয়ের ব্যাপারে 'নিরাপদ' সর্দার
  3. 'জুন নন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা'; ইটিভি ভারতের সামনে সোজাসাপ্টা অগ্নিমিত্রা

ইটিভি ভারতে অকপট ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সঞ্জীব (ইটিভি ভারত)

বারাসত, 15 মে: বামেদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি হিসেবে একসময় পরিচিত ছিল বারাসত লোকসভা কেন্দ্রটি। কখনও সিপিএম। আবার কখনও ফরওয়ার্ড ব্লক। বেশিরভাগ সময় এই দুই বাম শরিক দলের দখলে ছিল গুরুত্বপূর্ণ এই কেন্দ্রটি । এখান থেকেই পাঁচবার জিতে সংসদে গিয়েছিলেন প্রয়াত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা চিত্ত বসু । কিন্তু সেসব এখন অতীত। বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে থাবা বসিয়েছে তৃণমূল। শাসকদলের দাপটে কার্যত দিশেহারা অবস্থা বাম শিবিরের । পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে ঘাসফুল শিবিরের উত্থানে বামেদের ভোটব্যাংক কমতে কমতে বর্তমানে তলানিতে এসে ঠেকেছে ।

এই অবস্থায় বামেরা ভরসা রেখেছে বারাসতের ভূমিপুত্র তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের পুরনো সৈনিক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের উপর । এবার তাঁকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়েছে বামেদের তরফে। তাঁর বিপরীতে রয়েছেন তিন বারের সাংসদ এবং তৃণমূলের পরিচিত মুখ চিকিৎসক কাকলি ঘোষ দস্তিদার । রয়েছেন বিজেপির স্বজন মজুমদারও । যিনি আবার গেরুয়া শিবিরের বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক। ফলে ধারেভারে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন এই দুই হেভিওয়েট রাজনীতিক।

তবে নির্বাচনে কড়া টক্কর দিতে প্রচারে কোনও খামতি রাখছেন না বাম মনোনীত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় । দিনরাত এক করে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে প্রতিপক্ষের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে কোনও কসুর করছেন না তিনি । স্বভাবতই সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে বামেরা কী ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বারাসত কেন্দ্রে? নাকি বরাবরের মতো এবারও তাঁদের খালি হাতে ফিরতে হবে সেখান থেকে? উত্তর মিলবে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরই । যদিও জয় নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী বামপ্রার্থী । শুধু তাই নয়, এবারের নির্বাচনে বামেরা অভাবনীয় সাফল‍্য পাবে বলেও মনে করেন ফরওয়ার্ড ব্লকের উত্তর 24 পরগনা জেলার সম্পাদক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ।

ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে তিনি আর কী কী বলবেন তারই রইল প্রশ্নোত্তর পর্ব:

ইটিভি ভারত: প্রথমে বারাসত কেন্দ্র থেকে বাম প্রার্থী হিসেবে ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা প্রবীর ঘোষের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল । পরবর্তীতে তাঁর সঙ্গে বিজেপি যোগের অভিযোগ ওঠায় তাঁর প্রার্থী পদ বাতিল করে সেই জায়গায় আপনাকে প্রার্থী করা হয়েছে । এই প্রার্থী বিতর্ক কোনওভাবে কি নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে ?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: এই ইস্যু ডেড হয়ে গিয়েছে । এর কোনও প্রভাব পড়বে না নির্বাচনে ।

ইটিভি ভারত: তাহলে আপনার নির্বাচনী ইস্যু কী কী থাকছে ?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: নির্বাচনে তো অসংখ্য ইস্যু রয়েছে। বিজেপির দেশ বিক্রির চেষ্টা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং জ্বালানির দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের আজ অসহনীয় অবস্থা । মানুষ বেঁচে রয়েছে নাকি মরে গিয়েছে । তা নিয়ে কোনও হেলদোল নেই বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের । ভয়ংকর অবস্থা ৷ আর রাজ‍্যের তৃণমূল কংগ্রেসের কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো । চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এবং রাহাজানি চলছে । আমরা গত নির্বাচনে বলেছিলাম যা তৃণমূল তাই বিজেপি । আর যা বিজেপি তা তৃণমূল । এই দুই দলের মধ্যে কোনও তফাৎ নেই । মানুষ হয়তো আমাদের কথা বিশ্বাস করেনি । কিন্তু, আমি আপনাকে বলছি যেভাবে মানুষের সাড়া মিলছে তাতে বামপন্থীরা অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করবে এবারের নির্বাচনে ।

ইটিভি ভারত: আপনি বলছেন বামেরা অভাবনীয় ফলাফল করবে ! কিন্তু, গত কয়েকটি নির্বাচনে যেভাবে বামপন্থীদের ভোটব্যাংক তলানিতে এসে ঠেকেছে । সেখানে দাঁড়িয়ে কীভাবে আপনি এতটা আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন বামেদের ফল ভালো হবে?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: গত কয়েক বছরে মানুষ নানান অভিজ্ঞতার সাক্ষী থেকেছে । সেটা আপনি সারদা, নারদা কেলেঙ্কারি বলুন । কিংবা রোজভ্যালি কেলেঙ্কারি । একটাতেও কেউ কিন্তু সাজা পায়নি । অথচ একসময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, ভাগ মমতা ভাগ । মমতা ভাগেনি । রাজ‍্যের 42টি আসনের মধ্যে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রে ইচ্ছাকৃতভাবে,পরিকল্পনা করে এমন প্রার্থী দেওয়া হল, যাতে যুবরাজকে জিতিয়ে দেওয়া যায় । এখন রটিয়ে দেওয়া হচ্ছে বনগাঁয় বিজেপি । আর বারাসতে তৃণমূল । তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে যে একাগ্রতা তা মানুষ বুঝতে পারছে । এই দুই দলই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ । আগে যা়ঁরা তৃণমূল দলটা চালাতেন তাঁরাই এখন বিজেপি পার্টিটা চালাচ্ছেন । একমাত্র বিকল্প বামপন্থীরাই । বাকিটা মানুষ বিচার করবে ।

ইটিভি ভারত: বামপন্থীদের ভোটব্যাংক কি তাহলে বাড়বে ?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: আপনাকে আমি আবারও বলছি বামেরা ঘুরে দাঁড়াবেই । বামপন্থীদের পক্ষে নির্বাচনী ফলাফল এতটাই ভালো হবে যেটা আমারও কল্পনার বাইরে ।

ইটিভি ভারত: আপনি কাকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে মনে করছেন ! এবারের নির্বাচনী লড়াই কি কঠিন হবে?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: বিজেপি ও তৃণমূল আলাদা নয় ! দু'জনে মিলে একটা প্রতিপক্ষ । ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক শক্তি মিলিয়ে আরেকটা পক্ষ । এই দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই হচ্ছে । বনগাঁতে বিজেপিকে জেতাতে সাহায্য করবে তৃণমূল । আর বারাসতে তৃণমূলকে জেতাতে সহযোগিতা করছে বিজেপি। মানুষ এঁদের এই আঁতাত এবারে ভেঙে দেবে ।

ইটিভি ভারত: আপনার প্রতিপক্ষ তিন বারের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার কী কী কাজ করেছেন । তাঁর কাজে কি মানুষ সন্তুষ্ট । আপনি কী মনে করছেন কোন কোন কাজ এখনও বাকি রয়েছে?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: আপনি বারবার বলছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার তিন বারের সাংসদ, বহু বছরের সাংসদ প্রয়াত চিত্ত বসুকেও কিন্তু 1984 সালে হারতে হয়েছিল বারাসতের মাটিতে । নীরেন ঘোষ, সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মতো বামপন্থী নেতারা যে হারতে পারে তা ভাবার বাইরে ছিল । তা সত্ত্বেও তাঁদের পরাজয় মানতে হয়েছে । সব ভাবনায় মানুষের সৃষ্টি । মানুষের মতের বাইরে কেউ নয় । আর সবচেয়ে দুঃখের বিষয় 15 বছর ধরে শুনে আসছি বারাসতে মেট্রো চালু হবে । কিন্তু তারপরও উনি সেই প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারেননি । উনি এই 15 বছর শুধু গ‍্যাস বেলুন ফুলিয়েছেন । আর মানুষকে ভাঁওতা দিয়েছেন । সাংসদ হিসেবে জয়ী হতে পারলে প্রথম কাজই হবে আমার বারাসতে মেট্রো প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে চালু করা ।

তৃণমূলের অবস্থা খুবই খারাপ । তৃণমূলকে বাঁচিয়ে রেখেছে মোদি সরকার । তা না-হলে এতদিনে মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং তাঁর পরিবার জেলখানায় থাকতেন । অভিষেক বন্দোপাধ্যায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করতে পারতেন না ভোটে । ভারতীয় জনতা পার্টি এবং তাঁর দোসর আরএসএসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লাল ঝান্ডা । সেকারণেই তো তৃণমূলকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে ।

ইটিভি ভারত: জয়ের বিষয়ে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?

সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়: যেভাবে মানুষের সমর্থন পাচ্ছি । তাতে জয়ের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ।

আরও পড়ুন:

  1. তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগ হবে না, আশাবাদী সেলিম
  2. বিজেপি ফ্যাক্টর নয়, তৃণমূল নতুন মুখ খুঁজে পায়নি; জয়ের ব্যাপারে 'নিরাপদ' সর্দার
  3. 'জুন নন, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা'; ইটিভি ভারতের সামনে সোজাসাপ্টা অগ্নিমিত্রা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.