কোচবিহার, 6 অগস্ট: বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙার ঘটনাকে সমর্থন করলেন না এদেশে আসা বাংলাদেশি নাগরিকরা ৷ চিকিৎসা করাতে ভারতে আসা সহিদুল ইসলামের কথায়, "শেখ মুজিবর রহমানের মূর্তি ভেঙে ওরা ঠিক করেনি । পরে আফসোস করবে ।" তিনি আরও বলেন, "ক্ষোভ ধরে রাখতে পারেনি বলেই মুজিবর রহমানের মূর্তি ভাঙা হয়েছে।" অন্যদিকে, সোমবার থেকে বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি তাতে বাড়ির সদস্যদের খোঁজ পাচ্ছেন না মহম্মদ নুর ইসলামরা ৷ তাই মঙ্গলবার সকাল হতেই কোচবিহারের চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফিরছেন তাঁরা ৷
মঙ্গলবার ভারত-বাংলাদেশ চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ভারতে আসা বাংলাদেশিদের চোখেমুখে আক্ষেপ, হতাশা স্পষ্ট । তাঁরা বলছেন, "মূর্তি ভাঙার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না । তাঁর মূর্তি ভাঙাটাও ঠিক হয়নি । বাংলাদেশে গণ্ডগোল চলছে ৷ বাড়ির লোকেরা কেমন আছেন জানি না ৷ যোগাযোগ হচ্ছে না । বাধ্য হয়ে তড়িঘড়ি বাংলাদেশে চলে যাচ্ছি ৷ দেখা যাক ফিরতে পারি কি, না ৷"
লালমণির হাটের এক বাসিন্দা আবু হাসনাত শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন । কিন্তু বাংলাদেশে অশান্তির জেরে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি । তাই দ্রুত বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।
বাংলাদেশে অশান্তির জেরে প্রভাব পড়েছে এদেশেও । ইতিমধ্যে 400 কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে । চ্যাংড়াবান্ধা দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ ও ভুটান-বাংলাদেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণ বন্ধ । তবে বাংলাদেশের বহু মানুষ ভারতে চিকিৎসা করাতে এসে আটকে পড়েছেন ৷ দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকলেও বাসিন্দাদের যাতায়াত চলছে ।
বাংলাদেশের রংপুরের বাসিন্দা সহিদুল ইসলাম বলেন, "16 দিন আগে ভারতে এসেছিলাম চিকিৎসা করাতে । আজ চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরছি । আমরা আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম । কিন্তু গতকাল থেকে আতঙ্ক কেটে গিয়েছে । পরিস্থিতি ভালো হল । এটাই চেয়েছিলাম । আমি কোনও দল করি না ৷ কিন্তু দেশটা ভালোভাবে চলুক এটাই চেয়েছিলাম ।"
এদিন চ্যাংড়াবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট কাউন্টারে এসে হাসনাত সাহেব বলেন, "বাড়ির লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি । তাই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি । ফিরতে পারব কি না, জানি না । একই বক্তব্য ডেবরার বাসিন্দা নুর ইসলামেরও । চ্যাংড়াবান্ধা এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজকুমার কানু বলেন, "আমাদের বহু ট্রাক বাংলাদেশে আটকে রয়েছে । বাংলাদেশের কাস্টমস পণ্যবাহী ট্রাক পাঠাতে বলেছে । তবে, আমরা বলেছি, আগে আমাদের ট্রাকগুলো বাংলাদেশে আটকে আছে সেগুলো ফিরে আসবে ৷ তারপর আমরা পণ্য পাঠাব।"