ETV Bharat / state

আন্তঃরাজ্য 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' চক্রের পর্দাফাঁস, গ্রেফতার 9 - DIGITAL ARREST

প্রতারণা চক্রের বিদেশ-যোগ পেলেন তদন্তকারীরা ৷ কলকাতা-দিল্লিতে হানা দিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করল পুলিশ ৷

DIGITAL ARREST
আন্তঃরাজ্য 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' চক্রের পর্দাফাঁস আসানসোল সাইবার সেলের ৷ (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 3, 2025, 3:05 PM IST

আসানসোল, 3 ফেব্রুয়ারি: ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখিয়ে 1 কোটি 3 লক্ষ টাকার প্রতারণার ঘটনায় মূল চক্রের পর্দা ফাঁস করল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট ৷ কলকাতা ও দিল্লি থেকে মোট 9 জনকে গ্রেফতার করেছেন আসানসোল সাইবার থানার আধিকারিকরা ৷ এই ঘটনায় কোটি-কোটি টাকার লেনদেন ও বিদেশি প্রতারণা চক্রের যোগ পেয়েছেন তদন্তকারীরা ৷

কীভাবে হয় প্রতারণা ?

এ নিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) অরবিন্দ আনন্দ বলেন, "গত 18 জানুয়ারি আসানসোল সাইবার থানায় একটি অভিযোগ জমা পড়ে ৷ ওই অভিযোগ করেন আসানসোল দক্ষিণ থানা এলাকার বাসিন্দা চঞ্চলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ অভিযোগে, ওই ব্যক্তি জানান তাঁকে গত 10 জানুয়ারি থেকে 16 জানুয়ারি পর্যন্ত সাইবার অপরাধীরা 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' করে রেখেছিল ৷"

আন্তঃরাজ্য 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' চক্রের পর্দাফাঁস, গ্রেফতার 9 (ইটিভি ভারত)

ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) আরও বলেন, "কল করে তাঁকে বারে-বারে ভয় দেখানো হয় ৷ বলা হয়, একটি বহুজাতিক কুরিয়ার সংস্থার মাধ্যমে তাঁর আধার কার্ড ব্যবহার করে বেআইনি জিনিসপত্র ব্যাঙ্ককে পার্সেল করা হয়েছে । সেই ঘটনায় তিনি গ্রেফতার হবেন ৷ এরপর দিল্লির সাইবার থানা, সিবিআই ইত্যাদির নামে ভুয়ো কল করে ভয় দেখিয়ে কয়েকবারে তাঁর থেকে 1 কোটি 3 লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা ৷"

কীভাবে এগলো প্রতারণার তদন্ত ?

এটা ছিল আসানসোল সাইবার থানায় দায়ের হওয়া প্রথম কোনও ডিজিটাল অ্যারেস্টের অভিযোগ ৷ অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসে আসানসোল সাইবার থানা ৷ তৈরি করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল ৷ সেই দলের নেতৃত্ব দেন এসিপি (সাইবার) বিশ্বজিৎ নস্কর এবং সাইবার থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ ৷ অভিযোগকারীর ব্যাংক স্টেটমেন্ট খতিয়ে দেখে জানা যায়, শিলিগুড়ির একটি ব্যাংকে সেই টাকা ট্রান্সফার হয়েছে ৷

এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই অ্যাকাউন্টে কার নামে রয়েছে, তার খোঁজ করা হয় ৷ কেওয়াইসি পরীক্ষা করে মেলে মোবাইল নম্বর ৷ সেই সূত্র ধরে প্রথমে কলকাতার নিউটাউন থেকে বেদ আনন্দ নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ এরপর উত্তর 24 পরগনার জগদ্দল থেকে বিশ্বঞ্জয় কুমার এবং কলকাতার হোটেল থেকে নবজিৎ সিং ও যতীন শর্মা নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় ৷ পুলিশ জানিয়েছে, নবজিৎ ও যতীন দু’জনেই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ৷

অন্যদিকে, টেকনিক্যাল দলের সাহায্যে হরিদেবপুর থেকে সুপ্রীতি চৌধুরী নামে এক মহিলা এবং ভাটপাড়া থেকে রসিদ খান নামে আরেক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা ৷ এই ছয় জনকে হেফাজতে নিয়ে সাইবার সেলের তদন্তকারী দল লাগাতার জেরা করতে থাকে ৷ এরপরেই এই প্রতারণা চক্রের মূলচক্রী সুনীল কুমার, নিখিল রোহতগী ও প্রতীক বালচন্দ বাগাসকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তাঁদের ট্রানজিট রিমান্ডে আসানসোল নিয়ে আসা হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত 9 জনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা ৷

ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) অরবিন্দ আনন্দ বলেন, "40টির মতো অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ৷ তার মধ্যে 9টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে ৷ কোটি-কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ৷ ধৃত বেদ আনন্দ ও বিশ্বঞ্জয় কুমারের দু’টি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে 3 কোটি ও 12 কোটি টাকার লেনদেনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে ৷"

তিনি আরও বলেন, "এরা মূলত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রতারকদের দিত ৷ ধৃত সুপ্রীতি চৌধুরী ও রশিদ খান কলকাতায় চক্রের মূল পান্ডা ৷ এরা নিয়মিত বিদেশে থাকা প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন ৷ একইভাবে দিল্লি থেকে গ্রেফতার হওয়া সুনীল ও প্রতীক ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতারণার টাকা সংগ্রহ করে চিন, দুবাই, নেপাল ও সাউথ-ইস্টের বিভিন্ন দেশে থাকা সহযোগীদের দিত ৷" বিরাট এই চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত, তা জানতে পুলিশ আরও জেরা করছে ধৃতদের ৷

আসানসোল, 3 ফেব্রুয়ারি: ডিজিটাল অ্যারেস্টের ভয় দেখিয়ে 1 কোটি 3 লক্ষ টাকার প্রতারণার ঘটনায় মূল চক্রের পর্দা ফাঁস করল আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট ৷ কলকাতা ও দিল্লি থেকে মোট 9 জনকে গ্রেফতার করেছেন আসানসোল সাইবার থানার আধিকারিকরা ৷ এই ঘটনায় কোটি-কোটি টাকার লেনদেন ও বিদেশি প্রতারণা চক্রের যোগ পেয়েছেন তদন্তকারীরা ৷

কীভাবে হয় প্রতারণা ?

এ নিয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) অরবিন্দ আনন্দ বলেন, "গত 18 জানুয়ারি আসানসোল সাইবার থানায় একটি অভিযোগ জমা পড়ে ৷ ওই অভিযোগ করেন আসানসোল দক্ষিণ থানা এলাকার বাসিন্দা চঞ্চলকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ অভিযোগে, ওই ব্যক্তি জানান তাঁকে গত 10 জানুয়ারি থেকে 16 জানুয়ারি পর্যন্ত সাইবার অপরাধীরা 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' করে রেখেছিল ৷"

আন্তঃরাজ্য 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' চক্রের পর্দাফাঁস, গ্রেফতার 9 (ইটিভি ভারত)

ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) আরও বলেন, "কল করে তাঁকে বারে-বারে ভয় দেখানো হয় ৷ বলা হয়, একটি বহুজাতিক কুরিয়ার সংস্থার মাধ্যমে তাঁর আধার কার্ড ব্যবহার করে বেআইনি জিনিসপত্র ব্যাঙ্ককে পার্সেল করা হয়েছে । সেই ঘটনায় তিনি গ্রেফতার হবেন ৷ এরপর দিল্লির সাইবার থানা, সিবিআই ইত্যাদির নামে ভুয়ো কল করে ভয় দেখিয়ে কয়েকবারে তাঁর থেকে 1 কোটি 3 লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা ৷"

কীভাবে এগলো প্রতারণার তদন্ত ?

এটা ছিল আসানসোল সাইবার থানায় দায়ের হওয়া প্রথম কোনও ডিজিটাল অ্যারেস্টের অভিযোগ ৷ অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসে আসানসোল সাইবার থানা ৷ তৈরি করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল ৷ সেই দলের নেতৃত্ব দেন এসিপি (সাইবার) বিশ্বজিৎ নস্কর এবং সাইবার থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ ৷ অভিযোগকারীর ব্যাংক স্টেটমেন্ট খতিয়ে দেখে জানা যায়, শিলিগুড়ির একটি ব্যাংকে সেই টাকা ট্রান্সফার হয়েছে ৷

এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই অ্যাকাউন্টে কার নামে রয়েছে, তার খোঁজ করা হয় ৷ কেওয়াইসি পরীক্ষা করে মেলে মোবাইল নম্বর ৷ সেই সূত্র ধরে প্রথমে কলকাতার নিউটাউন থেকে বেদ আনন্দ নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ এরপর উত্তর 24 পরগনার জগদ্দল থেকে বিশ্বঞ্জয় কুমার এবং কলকাতার হোটেল থেকে নবজিৎ সিং ও যতীন শর্মা নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় ৷ পুলিশ জানিয়েছে, নবজিৎ ও যতীন দু’জনেই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ৷

অন্যদিকে, টেকনিক্যাল দলের সাহায্যে হরিদেবপুর থেকে সুপ্রীতি চৌধুরী নামে এক মহিলা এবং ভাটপাড়া থেকে রসিদ খান নামে আরেক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা ৷ এই ছয় জনকে হেফাজতে নিয়ে সাইবার সেলের তদন্তকারী দল লাগাতার জেরা করতে থাকে ৷ এরপরেই এই প্রতারণা চক্রের মূলচক্রী সুনীল কুমার, নিখিল রোহতগী ও প্রতীক বালচন্দ বাগাসকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় ৷ তাঁদের ট্রানজিট রিমান্ডে আসানসোল নিয়ে আসা হয়েছে ৷ এখনও পর্যন্ত 9 জনকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করেছেন তদন্তকারীরা ৷

ডিসিপি (হেডকোয়ার্টার) অরবিন্দ আনন্দ বলেন, "40টির মতো অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ৷ তার মধ্যে 9টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে ৷ কোটি-কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে ৷ ধৃত বেদ আনন্দ ও বিশ্বঞ্জয় কুমারের দু’টি অ্যাকাউন্টে যথাক্রমে 3 কোটি ও 12 কোটি টাকার লেনদেনের হদিশ পাওয়া গিয়েছে ৷"

তিনি আরও বলেন, "এরা মূলত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট প্রতারকদের দিত ৷ ধৃত সুপ্রীতি চৌধুরী ও রশিদ খান কলকাতায় চক্রের মূল পান্ডা ৷ এরা নিয়মিত বিদেশে থাকা প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন ৷ একইভাবে দিল্লি থেকে গ্রেফতার হওয়া সুনীল ও প্রতীক ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতারণার টাকা সংগ্রহ করে চিন, দুবাই, নেপাল ও সাউথ-ইস্টের বিভিন্ন দেশে থাকা সহযোগীদের দিত ৷" বিরাট এই চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত, তা জানতে পুলিশ আরও জেরা করছে ধৃতদের ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.