বারুইপুর, 3 জুলাই: পাঁচ মাসের কারাবাসের পর অবশেষে মুক্তি ৷ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে জামিন মঞ্জুর হওয়ার পর বুধবার বারুইপুর সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেলেন ভাঙড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ভাঙড়ের দাপুটে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ৷ যদিও, তৃণমূলের তরফে তাঁকে দলের আর কোনও পদে রাখা হয়নি ৷
ভাঙড়ের এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশের নিয়ন্ত্রণাধিন উত্তর কাশিপুর থানা আরাবুলের নামে এফআইআর দায়ের করেছিল ৷ ওই ব্যক্তি আরাবুলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, তোলাবাজি ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছিলেন ৷ এবছরের 4 ফেব্রুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরাবুলকে লালবাজারে ডাকা হয় ৷ এরপর রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় ভাঙড়ের দাপুটে নেতাকে ৷ কিন্তু, তারপরেও ভোগান্তির শেষ হয়নি আরাবুলের ৷
কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে আরাবুলকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে, তাঁর স্ত্রী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ৷ আর তার পরপরই ভাঙড়ে দলের আহ্বায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ ফলে ধীরে ধীরে তৃণমূলের ভিতরেই তাঁর গুরুত্ব কমতে শুরু করে ৷ তবে, আজ আরাবুল জেল থেকে মুক্তি পাওয়ায়, তাঁর অনুগামীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো ৷ বারুইপুর সংশোধনাগারের বাইরে এদিন ফুলের মালা হাতে ভিড় করেছিল আরাবুল ইসলামের অনুগামীরা ৷ আরাবুল বাইরে বেরোতেই, তাঁকে ফুলের হার গলায় পরিয়ে দেয় তারা ৷ ফুলের মালায় ভরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে ৷ সঙ্গে চলতে থাকে জয়ধ্বনি ৷
তবে, এদিন মুক্তি পেয়ে দক্ষিণ 24 পরগনার আরেক দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক শওকত মোল্লার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন আরাবুল ৷ তিনি জানান, এই মুহূ্র্তে কিছু না বললেও, এক সপ্তাহ পড়ে শওকত মোল্লা তাঁর বিরুদ্ধে যে খুনের চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন, তা নিয়ে বক্তব্য রাখবেন ৷ এদিন নিজেকে অসুস্থ বলে দাবি করেছেন আরাবুল ৷ তবে, লোকসভা ভোটের সময় জেলবন্দি থাকলেও, গতবারের থেকে তৃণমূল ভালো ফলাফল করায় তিনি দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়েছেন ৷
গতকাল কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন মঞ্জুর হলেও, সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র আজ বেলা 2টো 20 মিনিটে এসে পৌঁছায় বারুইপুর সংশোধনাগারে ৷ তারপর সবরকম অফিসিয়াল কাজকর্ম মিটিয়ে এদিন বিকেলে আরাবুল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷