নৈহাটি, 6 ফেব্রুয়ারি: নৈহাটির তৃণমূল কর্মী খুনে এবার মিলল ভিন রাজ্যের যোগ ৷ এফআইআরে নাম থাকা দ্বিতীয় অভিযুক্ত রঞ্জিত সাউকে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করেছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ টিম। বুধবার রাতে ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে উত্তরপ্রদেশ থেকে নিয়ে আসা হয় নৈহাটিতে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তকে 10 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷
নৈহাটির গৌরীপুরে তৃণমূল কর্মী সন্তোষ যাদব খুনের ঘটনার ঠিক পরেই ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় অলোক রাজোরিয়াকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় একসময়ে ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুরকে। তিনি দায়িত্ব নিতেই খুনের ঘটনায় প্রথম সাফল্য আসে পুলিশের। 24 ঘণ্টার মধ্যেই মূল অভিযুক্ত রাজেশ সাউ-এর শ্যালক অক্ষয় গন্ডকে ধরা হয়। তবে, খুনের ঘটনার সাতদিন পরেও অধরা মাস্টারমাইন্ড রাজেশ সাউ। শুধু তিনিই নন, এফআইআরে নাম থাকা বাকি পাঁচ অভিযুক্ত এখনও পুলিশের নাগালের বাইরে।
এই বিষয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার অজয় ঠাকুর বলেন, "খুনের ঘটনায় ধৃত রঞ্জিতের নাম এফআইআরে ছিল। তাকে ভিনরাজ্য থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও ধরার চেষ্টা চলছে। তদন্তের স্বার্থে এর বেশি বলা যাবে না।"
ঘটনার পরই নৈহাটির বিধায়ক সনৎ দে অভিযোগ করেছিলেন,দলীয় কর্মী খুনে বিহার কিংবা উত্তরপ্রদেশের যোগ থাকতে পারে। খুনের ঘটনায় চারজন দুষ্কৃতী বহিরাগত ছিল বলেও দাবি করেছিলেন শাসকদলের এই বিধায়ক। অভিযুক্তদের ভিন রাজ্যে পালাতে প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং সহযোগিতা করেছিলেন বলেও চাঞ্চল্যকর দাবি করেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা শাসকদলের ঘাড়েই এর দায় চাপিয়েছিলেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং। তারই মধ্যে পুলিশ তৃণমূল কর্মী খুনে দ্বিতীয় অভিযুক্ত রঞ্জিত সাউকে পাকড়াও করে উত্তরপ্রদেশ থেকে।
সন্তোষ যাদব খুনে যে দুটি সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে, তাতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে দুটি বাইকে মোট ছ'জন ধাওয়া করছে একটি টোটোর পিছনে।এরপর গোয়ালাপাড়া রোডে টোটোটি থামিয়ে সন্তোষকে জোর করে নামিয়ে প্রকাশ্যে ইঁট দিয়ে থেঁতলে মারছে ওই দুষ্কৃতীরা। সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্ত রাজেশ সাউ যে বাইকের মাঝে বসেছিল, ঠিক পিছনেই ছিল ধৃত রঞ্জিত। সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই তাকে চিহ্নিত করে পুলিশ। যদিও ঘটনার পর থেকে খোঁজ মিলছিল না তার। এরপরই পুলিশের কাছে খবর আসে, উত্তরপ্রদেশে গা ঢাকা দিয়েছে রঞ্জিত। সেই মতো পুলিশের একটি টিম রওনা দেয় উত্তরপ্রদেশ। স্থানীয় থানার সহযোগিতায় হদিস মেলে এই অভিযুক্তের। যদিও, মূল অভিযুক্ত রাজেশ সাউ-সহ বাকিরা এখনও ফেরার থাকায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।