দুর্গাপুর, 22 অগস্ট: এটিএম কার্ড থেকে নয়, ব্যাঙ্কে থাকা চেকে সই জাল করে লক্ষাধিক টাকা গায়েব দুর্গাপুরের এক গৃহবধূর। দুর্গাপুরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের। ব্যাঙ্কের কর্মী এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ ওই গৃহবধূর। অভিযুক্ত কর্মীর সঙ্গে জামতাড়া গ্যাংয়ের যোগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর সি জোনের বাসিন্দা স্বাগতা মুখোপাধ্যায় তিওয়ারি ৷ তাঁর সিটি সেন্টারের কাছে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে দীর্ঘ 16 বছর ধরে বাবা রবীন্দ্রনাথ তিওয়ারির সঙ্গে জয়েন্ট সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে। চেক শেষ হয়ে যাওয়ার দরুণ গত 12 অগস্ট স্বাগতাদেবী নতুন চেক বইয়ের জন্যে ব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করেন। গত শুক্রবার সেই নতুন চেক বই নিয়ে পিওন স্বাগতাদেবীর ঘরে গিয়ে তাঁকে না-পেয়ে চেক বই আনডেলিভার্ড বলে ফেরত চলে যায় ব্যাঙ্কে।
এরপরই শুরু হয় প্রতারণার নতুন ছক। ব্যাঙ্ক থেকে ফোনে চেক বই নিয়ে যাওয়ার জন্যে বলা হয় স্বাগতাদেবীকে। সোমবার আসতে বলা হয়। কিন্তু ওই দিন যেতে পারেননি তিনি। মঙ্গলবার সকালে ব্যাঙ্কে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সেই সময়ই তাঁর মোবাইলে মেসেজ আসে যে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে 1 লক্ষ 50 হাজার টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, স্বাগতাদেবী কোনও এটিএম কার্ড ব্যবহার করেন না। আতঙ্কে বাবাকে নিয়ে ব্যাঙ্কে আসেন তিনি।
ব্যাঙ্ক থেকে বলা হয়, স্বাগতাদেবী নাকি কমলেশ মারান্ডি বলে কাউকে ওই চেক বই তোলার অনুমতিপত্র দিয়েছেন। সেই অনুমতিপত্রের নীচে স্বাগতাদেবীর করা স্বাক্ষর প্রায় একই। সোমবার দিনই ওই অনুমতিপত্র দেখিয়ে কমলেশ মারান্ডি চেক বই নিয়ে চলে যান। স্বাগতাদেবী এই রকম অনুমতিপত্র দেওয়া কিংবা কমলেশ মারান্ডিকে চেনেন না বলে ব্যাঙ্কে জানান। সিসিটিভিতে কমলেশকে দেখালেও তিনি চিনতে পারেনিনি। ওই সময়ে এক হিন্দিভাষী মহিলা ব্যাঙ্ক কর্মী অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন স্বাগতাদেবীর সঙ্গে এমনকি উল্টে তাঁকেই চোর সাজিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ স্বাগতাদেবীর।
- স্বাগতাদেবীর অভিযোগ, ওই ব্যাঙ্কে আমার নতুন চেক বই আছে সেটা আমি আর ওই ব্যাঙ্কের কয়েকজন কর্মী ছাড়া কারোরই জানার কথা নয়। আমার স্বাক্ষর ওই ব্যাঙ্কের কর্মীদের ছাড়া জানার কথা নয়। এই প্রতারণার সঙ্গে ব্যাঙ্কেরই কেউ যুক্ত আছে বলে আমার মনে হয়। বুধবার দুর্গাপুর সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন স্বাগতাদেবী।
- ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিটি সেন্টার শাখার চিফ ম্যানেজার সুনীল সাহু বলেন, "উনি টাকা পেয়ে যাবেন। আমারও ব্যাঙ্কের তরফে তদন্ত করব। ব্যাঙ্ক থেকে পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করা হবে।"
- আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (সাইবার ক্রাইম) বিশ্বজিৎ নস্কর বলেন, "চেক জালিয়াতির একটা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে।"