কলকাতা, 21 সেপ্টেম্বর: লাগাতার বৃষ্টি ও ডিভিসি জল ছাড়ার কারণে রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি ৷ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বহু মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন ৷ সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কৃষিজীবী মানুষদের ৷ লাগাতার বৃষ্টিতে সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি করেছে। বিভিন্ন জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিলেন কৃষিমন্ত্রী ৷
রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতি পর্যালোচনা করতে দফতরের সচিবদের নিয়ে শুক্রবার বৈঠক করেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদের চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্যকে উপেক্ষা করে লাগাতার জল ছাড়ার ফলে বানভাসি হয়েছে রাজ্যের আটটি জেলা। এক্ষেত্রে তালিকায় সেই সমস্ত জেলার নাম তালিকায় রয়েছে যেগুলির একটা বড় অংশ মূলত কৃষি প্রধান।
এই দিনের বৈঠকে মূলত বিভিন্ন জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পর্যালোচনা করা হয় কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, নিম্নচাপের পূর্বাভাস পেয়ে আগেই কৃষি দফতরের তরফ থেকে জেলাশাসকের মারফত এই আট জেলার কৃষকদের সতর্ক করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে কেউ কেউ আগেভাগেই প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তবে বন্যার ফলে বিপুলসংখ্যক কৃষিজীবি মানুষ অসুবিধার মুখে পড়েছেন ৷ এক্ষেত্রে একাংশের ফসল মাঠে নষ্ট হয়েছে ৷ আবার অনেকক্ষেত্রে ফসল কাটার পড়েও ক্ষতি হয়েছে ৷
তিনি আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বাংলা ফসল বীমা যোজনার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আজ বৈঠকে মূলত আমরা জানার চেষ্টা করেছি কোন জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কতটা ৷ যেহেতু অধিকাংশ জায়গাতেই এখনও জল রয়েছে, তাই ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ এখনই নিশ্চিত করে বলার সম্ভব নয়।
কৃষি দফতরের তরফে বন্যাপীড়িত জেলাগুলি থেকে তথ্যসংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ৷ এই কাজে জেলা প্রশাসনেরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আমরা এই বিষয়ে দ্রুত একটি রিপোর্ট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেব ৷ যেহেতু কৃষকরা রাজ্য সরকারের নিজস্ব ফসল বীমা যোজনা আওতায় রয়েছেন। এক্ষেত্রে চাইলে কেউ নিজেরাই ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে পারবেন না ৷"
এদিন দফতরের তরফে কৃষকদের সাহায্যের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে ৷ আধিকারিকদের বলা হয়েছে, বন্যা কবলিত গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে কৃষকেরা বাংলা ফসল বীমা যোজনায় ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন না-করে থাকলে দ্রুত তাঁদের আবেদনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে 30 সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্যাম্প করে এই আবেদনের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে।
প্রত্যেক এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির ফটোগ্রাফিক ও ভিডিওগ্রাফি কভারের প্রয়োজন ৷ তাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে জেলাভিত্তিক মনিটরিং কমিটিকে। দফতরের আধিকারিকদের বলা হয়েছে জল নামতেই দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট জেলাশাসকের কাছে জমা করতে।