কলকাতা, 27 ফেব্রুয়ারি: "জাতপাত রাজধানীর ঊর্ধ্বে উঠে সন্দেশখালিতে আইনের শাসন ফিরুক । অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক । মা বোনেরা বিচার পাক ।" মঙ্গলবার সন্দেশখালি ঘুরে এমনটাই দাবি করলেন অভিনেতা-গায়ক ও নাট্যকর্মীরা । একইসঙ্গে দাবি করলেন, অপরাধীরা যাতে এলাকায় ফিরতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে ।
এই বিষয়ে বাদশা মৈত্র বলেন, "জাত-ধর্ম-বর্ণ-রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাচ্ছি । যা শুনেছি তা মিলিয়ে নিতে গিয়েছিলাম ৷ গ্রামবাসীরা বলেছেন, শাহজাহান-শিবুরা গ্রামে ফিরলে তাঁরা মার খাবেন । তাই এদের গ্রামে যাতে না ফেরানো হয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই অনুরোধ করছি । রাজনীতি না খুঁজে মহিলাদের অসম্মান রোধ করুন । আমরা প্রশানসের সঙ্গে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়ে ওই গ্রামের মানুষকে আরও বিপদে ফেলতে চাইনি । আমরা খুব সকালে গিয়েছিলাম । তবে, গ্রামের মানুষের অনুরোধে নির্দিষ্ট কিছু জায়গা ঘুরে তাড়াতাড়ি চলে আসি । পুলিশের হয়তো অন্যদিকে ফোকাসড ছিল । একারণেই হয়তো খুব ভালোভাবে এলাকায় ঘুরেছি । এলাকায় নোনাজল ঢুকিয়ে ভেরি করা হয়েছে । অথচ, লিজের টাকাটাও দেওয়া হয় না । ক্লাবের মাঠ দখল করা হয়েছে । সরকার আইন মেনে ব্যবস্থা করুন । তারা কেউ ভোট দিতে পারেনি বলেও জানিয়েছেন । এলাকায় শিক্ষা স্বাস্থ্যের অবস্থা খুব খারাপ ।"
দেবদূত ঘোষের কথায়, "মিথ্যার বেসাতি মানুষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে । সাজিয়ে গুছিয়ে মিথ্যা কথা বলানো হচ্ছে বলেও প্রচার করা হচ্ছে । সেখানে গেলে মনে হবে আলাদা আইন চলছে । এখানে একটা প্যারালাল সরকার চলে । গ্রামের মহিলাদের 100 দিনের কাজে কারও অ্যাকাউন্টে 10 হাজার টাকা জমা পড়লে 500 টাকা রেখে 9 হাজার 500 টাকা দিয়ে দিত হত । রাতে তুলে নিয়ে যাওয়া, তারপর কী কী ঘটতে পারে তা ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে দেখেছি ৷ তাঁরা যাতে একাট্টা হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেন, সেই চেষ্টায় হোক । তাদের ভরসা দিতে, আস্থা জোগাতে গিয়েছিলাম । প্রশাসনকে অনুরোধ তারা সেখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন ।"
এই বিষয়ে সৌরভ পালোধি বলেন, "যা যা ঘটেছে বা ঘটছে তা স্বচক্ষে দেখতেই গিয়েছিলাম । আমরা তো 2011 থেকে চেয়েছিলাম এই সরকার থাকুক । সেখানকার মানুষ বলছেন । তাঁরা কেউ এই সরকারের বিপক্ষে নয় । ওখানে প্রচুর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আছে । তারা নামমাত্র পরীক্ষা দিচ্ছে । এই সরকারের সন্ত্রাসের জন্য তারা ঠিক মতো পরীক্ষা দিতে পারছে না । তাঁরা বলছেন, এতদিন ঘোমটার আড়ালে কথা বলছিলাম, এখন ঘোমটা উঠিয়ে কথা বলছি ।
আইনজীবী সিদ্ধার্থশংকর মণ্ডলের বক্তব্য,"গত 14 ফেব্রুয়ারি আমরা সন্দেশখালি গিয়েছিলাম । এখন মনে হচ্ছে সেখানকার মানুষের আইনের সহায়তার প্রয়োজন আছে । সেখানকার প্রথম থেকে শেষ বাড়ি পর্যন্ত সকলেই এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন । একজন মহিলা বললেন, একটা চাষের জমি সম্বল । সেটাও কেড়ে নিতে চেয়েছিল । কিন্তু, প্রতিবাদ করে নিতে দেয়নি । আমরা আইনজীবীরা তাঁদের যাতে আইনি সহায়তা দিতে পারি তার চেষ্টা করব । এলাকায় 3-4 কিমি রাস্তায় পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই । শৌচালয় নেই ।"
আরও পড়ুন :