শিলিগুড়ি, 11 নভেম্বর: দীর্ঘ আন্দোলনের পর অবশেষে খুলে গেল লঙভিউ চা বাগান ৷ গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়্যাল এডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) ও শ্রম দফতরের হস্তক্ষেপে 1 মাস পর সোমবার থেকে খুলে গেল ওই চা বাগানটি । তবে শ্রমিকদের সমস্ত দাবি এখনও মেনে নেয়নি মালিকপক্ষ ৷ যদিও খুব শীঘ্রই সেই সমস্যার সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা ৷ উল্লেখ্য, সোমবারই উত্তরবঙ্গ সফরে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
বেশকিছুদিন ধরে 20 শতাংশ বোনাসের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন লঙভিউ চা বাগানের শ্রমিকরা ৷ তাঁদের দাবি মেনে 10 শতাংশ বোনাস দিয়েছিল মালিকপক্ষ । কিন্তু দুর্গাপুজোর ঠিক আগে বাকি 10 শতাংশ বোনাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, ইনক্রিমেন্ট-সহ অন্যান্য খাতে বকেয়া প্রায় 15 কোটি টাকা মেটানোর দাবিতে আন্দোলন শুরু হয় বাগানে । প্রথমে কর্মবিরতি ও পরে রিলে অনশনে বসেন বাগানের শ্রমিকরা । বর্তমানে প্রায় 350 জন শ্রমিক রয়েছেন । আন্দোলন শুরু হওয়ায়, পুজোর ঠিক আগে বাগানকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ছেড়ে চলে যায় মালিকপক্ষ । ফলে পুজোর আগে কর্মহীন হয়ে পড়েন চা শ্রমিকরা ৷
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বৈঠক শুরু হয় ৷ জিটিএ-ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ, শ্রম দফতর, ও মালিকপক্ষ শিলিগুড়ির শ্রমিক ভবনে বৈঠক করে । দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে সমস্যার সমাধান হয় ৷ মালিকপক্ষ তাঁদের সমস্ত দাবি পূরণ না-করায় খানিক হতাশ হলেও, 11 নভেম্বর থেকে বাগান খোলার সিদ্ধান্তে রাজি হয় শ্রমিকপক্ষ ।
পাশাপাশি, বাকি 6 শতাংশ বোনাস চলতি সপ্তাহের মধ্যেই মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় মালিকপক্ষ। এছাড়া পিএফ, ইনক্রিমেন্ট-সহ অন্য বকেয়ার বিষয়ে আগামী বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয় ৷ সবমিলিয়ে কাজ ফিরে পেয়ে খুশি হন শ্রমিকরা ৷ তবে পাহাড়ের বাকি চা বাগানগুলি দ্রুত খোলার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছেন দার্জলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ৷
এই বিষয়ে জিটিএ-এর মুখপাত্র এসপি শর্মা বলেন, "লঙভিউ চা বাগান খুলে যাওয়ায় আমরা খুশি । বিগত একমাস ধরে বাগানটি অচলাবস্থার মধ্যে ছিল। বকেয়া নিয়ে ডিসেম্বর মাসে আবার বৈঠক হবে ।" চা বাগানের শ্রমিক এলেক্সাস মিঞ্জ বলেন, "বাগান খুলে যাওয়ায় আমরা খুশি ।" আরেক শ্রমিক সুকরা ওরাওঁ বলেন, "একমাস ধরে আন্দোলন চলেছে । কাজ না থাকায় বাড়িতে বসেছিলাম। বাগান খুলে যাওয়ায় কাজে ফিরব। অনেকে এখনও টাকা পায়নি । তবে মিটিয়ে দেবে বলে জানিয়েছে ।"