শিলিগুড়ি, 9 ডিসেম্বর: পাহাড়ি অঞ্চলে হড়পা বান প্রায়শই বড় বিপর্যয় ডেকে আনে ৷ মেঘ ভাঙা বৃষ্টির জেরে তৈরি হওয়া এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে ব্যাপক পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয় ৷ সেই ক্ষতি আটকাতে অত্যাধুনিক 'অ্যাডভান্স ফ্লাড মনিটরিং সিস্টেম' আবিষ্কার করলেন ভারতীয় সেনার ইঞ্জিনিয়ররা ৷
সেনার ত্রিশক্তি কর্পসের ত্রিশক্তি স্যাপারস বা ইঞ্জিনিয়ররা এটি তৈরি করেছেন ৷ এর জন্য তাঁরা পুরস্কৃতও হয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছ থেকে ৷ ত্রিশক্তি স্যাপারসদের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত সেনা আধিকারিকরা ।
ত্রিশক্তি কর্পসের নয়া আবিষ্কার
ত্রিশক্তি কর্পসের হেড কোয়ার্টার শিলিগুড়ি সংলগ্ন সুকনায় । কপর্সের ইঞ্জিনিয়র রেজিমেন্টের হাবিলদার সুরেশ পিকে ও তাঁর টিমের ওই আবিষ্কার ইতিমধ্যে নজর কেড়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের । তাদের এই আবিষ্কারের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করেছে । মূলত সেনার ইঞ্জিনিয়রদের এই আবিষ্কার বন্যা আসার আগেই হিমালয়ের বিভিন্ন এলাকায় এবং বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই সতর্কবার্তা পৌঁছে দেবে ।
এই বিষয়ে ত্রিশক্তি কর্পসের কর্নেল গৌরভ রাঠোর বলেন, "গত সপ্তাহে রাজধানী দিল্লিতে মূলত প্রতি বছর ভারতীয় সেনার তরফে 'ইনো যোদ্ধা' নামে একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় । সেখানে আমাদের ইঞ্জিনিয়রদের এই অভিনব আবিষ্কার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে পুরস্কৃত হয়েছে । ভারতীয় সেনার বিভিন্ন প্রান্তের 75টির বেশি আবিষ্কার সেখানে প্রদর্শিত হয়েছিল । সেখানেই আমাদের ত্রিশক্তি স্যাপারসদের ইঞ্জিনিয়রদের তৈরি 'অ্যাডভান্স ফ্লাড মনিটরিং সিস্টেম' জায়গা করে নেয় । আগামীতে এই আবিষ্কার সাধারণ মানুষকে হড়পা বানের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে ।"
অ্যাডভান্স ফ্লাড মনিটরিং সিস্টেম
জানা গিয়েছে, এই 'অ্যাডভান্স ফ্লাড মনিটরিং সিস্টেম'টি কাটিং এজ টেকনলোজির মাধ্যমে কাজ করে থাকে । এতে থাকা মাইক্রো কন্ট্রোলার, ইউভি সেন্সর, জিএসএম মডিউল সোনার প্রিন্সিপালের মাধ্যমে একদম সঠিক তথ্য পাঠাতে সক্ষম । পাশাপাশি পরিস্থিতি বেগতিক আঁচ পেলেই যন্ত্রটি তৎক্ষণাৎ এসএমএসের মাধ্যমে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতেও সক্ষম ।
প্রসঙ্গত, 2023 সালের অক্টোবরে সিকিমের হ্রদ বিপর্যয়ের কারণে সিকিম জুড়ে হড়পা বানের ঘটনা ঘটেছিল । সেই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভারতীয় সেনার একাধিক জওয়ান প্রাণ হারান । একাধিক ছাউনি, সেনার হাতিয়ার, গাড়ি ও অন্যান্য সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয় । বানের জেরে ক্ষতি হয় ইন্দো-সিকিম সীমান্তে থাকা একাধিক সড়ক ও সেতুর । অনেক মানুষ এখনও ঘরছাড়া রয়েছে । সেই দুর্যোগকে মাথায় রেখেই আগাম সতর্ক হতে ভারতীয় সেনার এই আবিষ্কারে বাজিমাত ।