কলকাতা, 11 সেপ্টেম্বর: বুধবার সকাল 6টা থেকে রাজ্য জুড়ে 72 ঘণ্টার ট্রাক ধর্মঘট শুরু হয়েছে। ট্রাক ওভারলোড থেকে শুরু করে পুলিশি জুলুমের মতো সাত দফা দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার হয়েছে। 72 ঘণ্টা লাগাতার ট্রাক ধর্মঘটের ফলে পাইকারি ও খুচরো বাজারে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ব্যাপক ধাক্কা আসতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ট্রাক সংগঠনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে পরিবহন সচিব থেকে শুরু করে পরিবহণমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছে ট্রাক মালিকপক্ষ কিন্তু কোনও কাজই হয়নি বলে অভিযোগ। তাই এবার অন্য উপায় না পেয়েই 72 ঘণ্টার ট্রাক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এমনকী খুব স্পষ্ট ভাষায় তারা এও জানিয়ে দিয়েছেন, 72 ঘণ্টার মধ্যে যদি পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকে কোনও সদর্থক উত্তর না মেলে তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন অর্থাৎ লাগাতার ধর্মঘটের পথেই হাঁটতে বাধ্য হবেন তারা।
সামনেই দুর্গা পুজো আর তার আগে রাজ্যের পাইকারি বাজারে জিনিসপত্রের অভাব দেখা দিতে পারে বলেই আশঙ্কা রয়েছে এই ধর্মঘটের জেরে। এদিন থেকে 13 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে যেমন থাকবে চাক্কা জ্যাম তেমনই অন্য রাজ্যের কোনও ট্রাক তারা এই রাজ্যে প্রবেশ করতে দেবেন না বলেই সাফ জানানো হয়েছে। এর ফলে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় লক্ষ ট্রাক পণ্য পরিবহণ করবে না ৷ অন্যদিকে, ভিন রাজ্যের পণ্যপরিবহণকারী গাড়িগুলিও রাজ্যে প্রবেশ করবে না।
আপাতত পশ্চিমবঙ্গে ধর্মঘট হলেও অন্যান্য রাজ্যের ট্রাক মালিক সংগঠনগুলি ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছে। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে পুজোর পরে লাগাতার বনধের ডাক দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। সেই সময় সারা দেশ জুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রাক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন তারা। একদিকে যেমন রাজ্যের ছোট বড় বাজারগুলিতে খাদ্য শস্য থেকে শুরু করে ওষুধপত্র এবং অন্যান্য জিনিসের জোগানে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে তেমনই রাজ্যের সীমান্তে এবং হাইওয়েগুলি যানজটের সৃষ্টি হতে পরে বলেই মনে করা হচ্ছে।
ট্রাকমালিকদের সংগঠন ‘ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর চট্টোপাধ্যায় জানান, ধর্মঘটের প্রথম দিন তাই অনেক কম সংখ্যক ট্রাক চলাচল করছে রাস্তায়। পুলিশি অত্যাচার থেকে শুরু করে যখন তখন নিজদের ইচ্ছে মতো পুলিশ বিনা দোষে কেস দিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে ট্রাক মালিক ও চালকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের নজর কাড়তে পুজোর পর থেকে দেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে ট্রাক মালিকপক্ষ।