আলিপুরদুয়ার, 3 জুন: মালদা বা তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল নয় ৷ আলিপুরদুয়ারের শহরতলির এক বিঘা জমিতে তৈরি করা হয়েছে আমবাগান ৷ কিন্তু, তা যে সে আমের বাগান নয় ৷ ভারতে পাওয়া যায় এমন আমের পাশাপাশি, আমেরিকা, থাইল্যান্ড, জাপানের মতো দেশ থেকে আনা গাছও রয়েছে এই আমবাগানে ৷ এবছর সেই আমের বাগানে ফলনও ধরেছে ৷ কথা হচ্ছে আলিপুরদুয়ারের দক্ষিণ জিতপুরে বাসিন্দা রেলকর্মী প্রিয়রঞ্জন দেবের আমের বাগানের ৷ মোট 72 প্রজাতির আম রয়েছে তাঁর বাগানে ৷ আর 24 ঘণ্টা সেই আমের উপর নজরদারি করছে 12টা সিসিটিভি ক্যামেরা ৷
প্রিয়রঞ্জনের বাগানে দেশিয় ল্যাংরা, চৌসা, হিমসাগর, ফজলি ও গোলাপখাস আমের পাশাপাশি জাপানের মিয়াজাকি, থাইল্যান্ডের ব্রুনাইকিং, নামডগমাই হোয়াইট, নামডগমাই শিয়ং, আমেরিকার রেড পালমার, তাইওয়ানের তাইওয়াং রেড, বাংলাদেশের বারি-4, বারি-11 সহ বাহাত্তর রকমের আমের গাছ লাগিয়েছেন প্রিয়রঞ্জন ৷ সেই সব গাছেই ফলন এসেছে ৷ এক বিঘা জমিতে তৈরি করা আমবাগানের নাম এখন আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দাদের মুখে-মুখে ঘুরছে ৷ পেশায় রেলকর্মী প্রিয়রঞ্জনের আমের বাগান এখন ছোটখাটো পর্যটন ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ৷ প্রায় লোকজন নাম না-জানা আম গাছ ও আম দেখতে যায় ৷
তাই আম গাছ ও আমের সুরক্ষার জন্য বাগানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছেন প্রিয়রঞ্জন দেব ৷ ক্যামেরার মাধ্যমে বাড়ি থেকে চলে নজরদারি ৷ নর্থ ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের আলিপুরদুয়ার জংশনে কমার্শিয়াল সেকশনের গ্রুপ-ডি’র কর্মী তিনি ৷ রেলের চাকরির মাঝেই আমবাগানের পরিচর্যা করেন প্রিয়রঞ্জন ৷ বাগানে আম ছাড়াও অন্য বেশ কিছু ফল-ফুলের গাছ রয়েছে ৷ সব মিলিয়ে গাছের সংখ্যা প্রায় দু’শোটি ৷ তবে, ব্যতিক্রমী তাঁর আমবাগান ৷ 72 প্রজাতির আমের মধ্যে 15টি রয়েছে দেশি ৷ বাকি সব বিদেশের অজানা আমের গাছ ৷ ছোট ছোট গাছে আমও হয়েছে ৷
তবে, আশ্চর্যের বিষয় হল, আলিপুরদুয়ারের মাটি ও আবহাওয়ায় শাল, সেগুন, শিরিষের মতো গাছ খুব ভালো হয় ৷ সেখানে বিদেশি আমের চারা লাগিয়ে ও তাতে ফলন ধরিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন প্রিয়রঞ্জন দেব ৷ তিনি বলেন, "আমি আমার বাবার কাছ থেকে এই আমবাগান করা শিখেছি ৷ বেতনের প্রায় বেশির ভাগ টাকাই এই আমবাগানে খরচ হয়ে যায় ৷ অনেকেই অনেক চারা ও ফল কিনতে চায় ৷ কিন্তু, আমি দিই না ৷ কারণ, আমি ব্যবসার জন্য নয়, আমার সখের জন্য এই আমবাগান তৈরি করেছি ৷ আমার আমবাগানে নজরদারি চালানোর জন্য 12টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে ৷ তবে, আমার পরিবার আমাকে এই কাজে খুব সহযোগিতা করে ৷"